ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আওয়ামী লীগ

নারী নেতৃত্বের শর্ত পূরণে পিছিয়ে ক্ষমতাসীনরা

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১২ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০২০
নারী নেতৃত্বের শর্ত পূরণে পিছিয়ে ক্ষমতাসীনরা

ঢাকা: নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধনের শর্ত অনুয়ায়ী ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্ব পূরণ করতে পারেনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। চলতি ২০২০ সালে নিবন্ধনের এই শর্তের সময়সীমা শেষ হবে।

সর্বশেষ গত ২২ ও ২৩ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের পর নতুন কার্যনির্বাহী কমিটিতে এই হার বাড়লেও ৩৩ শতাংশ পূরণ হয়নি। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নাম কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ।

এই কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য সংখ্যা বা পদ রয়েছে ৮১টি। গত সম্মেলনে এর মধ্যে ৭৮টি পদে নাম ঘোষণা করা হয়েছে এবং ৩টি পদ বাকি আছে। এবারের কমিটিতে যে ৭৮টি পদ ঘোষণা করা হয়েছে এর মধ্যে সভাপতি, সভাপতিমণ্ডলী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, কয়েকটি সম্পাদকের পদ ও কার্যনির্বাহী সদস্যসহ কমিটিতে নারী সদস্য আছেন ১৯ জন। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধনের শর্ত অনুযায়ী এখনও ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্বের শর্ত পূরণ হয়নি।

২০০৮ সালে নির্বাচন কমিশনে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন পদ্ধতি চালু করা হয় এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে নিবন্ধন দেওয়া হয়। এই নিবন্ধনের বেশ কিছু শর্তের মধ্যে অন্যতম হলো রাজনৈতিক দলগুলোতে নারী নেতৃত্বের হার বাড়িয়ে ২০২০ সালের মধ্যে ৩৩ শতাংশ করা। কেন্দ্র থেকে শুরু করে দলের সব পর্যায়ের কমিটিতে এই হারে নারী নেতৃত্ব বাড়ানোর কথা রয়েছে নিবন্ধনের শর্তে।  

বর্তমান হিসাব অনুযায়ী আওয়ামী লীগের কমিটিতে নারী সদস্যের হার প্রায় ২৫ শতাংশ। নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধনের শর্ত অনুযায়ি এ বছরই তা ৩৩ শতাংশ করতে হবে। কিন্তু আওয়ামী লীগের সর্ব শেষ কাউন্সিলে দলের গঠনতন্ত্রে আগামী ২০২১ সালের মধ্যে ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার কাথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্ব আনতে আওয়ামী লীগের আরও এক বছর সময় লাগবে।

নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধনের পর ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের সম্মেলনে নতুন যে কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন হয় তাতে সভাপতিসহ বিভিন্ন পদে নারী সদস্য ছিলেন ১২ জন। তখন কেন্দ্রীয় কমিটি ছিলো ৭৩ সদস্য বিশিষ্ট। ২০১৬ সালের সম্মেলনে গঠিত কমিটিতে এই সংখ্যা ছিলো ১৫ জন। ওই সম্মেলনে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বাড়িয়ে ৮১ জন করা হয়।  

এদিকে শুধু কেন্দ্র নয়, জেলা পর্যায়েও নির্বাচন কমিশনের শর্ত অনুযায়ী নারী নেতৃত্বের হার ৩৩ শতাংশ পূরণ হয়নি। জেলায় এই হার আরও কম। জানা গেছে, বর্তমানে আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম মহানগর কমিটিতে নারী রয়েছেন মাত্র এক জন। খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়েছে গত বছর ডিসেম্বরে। এই সম্মেলনে শুধু সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়। এখন পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। বিদায়ী কমিটিতে মোট নারী ছিলেন ৯ জন। গত ডিসেম্বরে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের পর সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ছাড়া পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। রাজশাহী জেলার বিদায়ী কমিটিতে নারী ছিলেন মাত্র ৫ জন।  
 
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘নারী নেতৃত্বের হার যদিও পুরোপুরি পূরণ করা সম্ভব হয়নি। তবে কেন্দ্র থেকে জেলা, উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত আওয়ামী লীগ অনেক দূর এগিয়েছে। দলের বিভিন্ন কমিটিতে নারীর সংখ্যা বাড়ানো, সংসদ, উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়ে নারীদের মনোনয়ন দেওয়াসহ আওয়ামী লীগ নারী নেতৃত্বের ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে আছে। আশা করছি আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে নারী নেতৃত্বের হার যেটা বলা আছে সেটা পূরণ করতে পারবো। ’  

বাংলাদেশ সময়: ১৭১১ ঘণ্টা, মার্চ ০৮, ২০২০
এসকে/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আওয়ামী লীগ এর সর্বশেষ