গত কয়েক মাস ধরে বিশ্ব জুড়ে করোনা ভাইরাসের তাণ্ডব চলছে। বাংলাদেশেও তার তাণ্ডব শুরু হওয়ায় গত ২৫ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে।
দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রায় ৩৫ শতাংশ আসে শিল্প থেকে। এই শিল্পের ৯৫ শতাংশই বন্ধ হয়ে গেছে করোনা পরিস্থিতির কারণে। বিশ্ব ব্যাংক বলছে, করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি হতে পারে দুই থেকে তিন শতাংশ।
এদিকে রফতানি খাতে বিদেশি ক্রেতাদের অর্ডারের টার্গেট নির্ধারিত সময়ে পূরণের বিষয়টিও রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শত শত পোশাক কারখানা খুলে দেওয়া হয়েছে।
চলমান পরিস্থিতিতে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের জীবন ধারণের জন্য জীবিকার পথও বন্ধ। তাদের জীবনে করোনার প্রভাব দিন দিন মারাত্মক আকার ধারণ করছে।
এ অবস্থায় শনিবার (০৯ মে) এক প্রেস বিফিংয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, জীবনের পাশাপাশি জীবিকার চাকাও সচল রাখতে হবে। এই কারণে সরকার কিছু কিছু ক্ষেত্রে সাধারণ ছুটি শিথিল করেছে। শপিংমল খোলার অনুমতি দিয়েছে। আমাদের অর্থনীতিতে উৎসব কেন্দ্রীক অর্থনীতির একটা প্রভাব আছে। সরকার জনগণের ওপর ছেড়ে দিয়েছে শপিংয়ে যাওয়ার বিষয়টি। কাউকে বাধ্য করেনি। তবে সেক্ষেত্রে প্রশাসনের নজরদারি থাকবে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, দেড় মাস হয়ে গেছে সব কিছু বন্ধ। এতে মানুষ আর্থিকভাবে খুব দুর্বল হয়ে পড়েছে। মানুষ কাজ করতে পারছে না। এতে অস্বস্থির চাপও বাড়ছে। করোনার হাত থেকে মানুষকে বাঁচাতে হবে আবার জীবিকার বিষয়টিও দেখতে হবে। এ কারণে লকডাউন কিছুটা ছাড়ের প্রশ্ন এসেছে।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, দেশের সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে। প্রায় দেড় মাস শিল্প প্রতিষ্ঠানসহ সব কিছু বন্ধ। এলসি বন্ধ ছিলো। যার কারণে আমদানিও বন্ধ ছিলো। রফতানি বাণিজ্যও বন্ধ। শিলপ প্রতিষ্ঠান কিছু কিছু খুলেছে। নতুন করে এলসি হচ্ছে। আমদানি রফতানি চালু হবে। এমন কিছু করা যাবে না যাতে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ হয়। দেশের ১৬ কোটি মানুষের কথা চিন্তা করেই এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। তবে এতে কিছুটা ঝুঁকিও আছে। এ জন্য সচেতনভাবে মানুষকে চলতে হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমান সরকার একটি গণতান্ত্রিক সরকার। মানুষকে তো আর পিটিয়ে কোনো কিছুতে বাধ্য করা যাবে না। জনগণকে সচেতন করার জন্য প্রায় দেড় মাস হলো লকডাউন চলছে। বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে এই সময়ে সরকার মানুষকে সচেতন করেছে, করোনা প্রতিরোধে ক্ষমতা বাড়িয়েছে। এক লাখ কোটি টাকার বেশি প্রণোদনা ঘোষণা করা হয়েছে। মানুষের জীবন ধারনের জন্য জীবিকার বিষয়টি সরকারকে বিবেচনা করে এসব সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১০০৩ ঘণ্টা, মে ১১, ২০২০
এসকে/এজে