ঢাকা: দি ঢাকা মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংকের আড়াই হাজার কর্মী দিশেহারা হয়ে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আবু জাফর চৌধুরী।
তিনি বলেন, হাইকাটের নির্দেশ অমান্য করে গত মে মাসে সমবায় অধিদপ্তর কোম্পানিতে অবৈধ লেনদেন এবং জঙ্গি অর্থায়ন করা অভিযোগ এনে প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
মঙ্গলবার (২১ জুন) রাজধানীর ফার্মগেটের দি ঢাকা মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংক কার্যালয়ের হলরুমে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। এ সময় প্রতিষ্ঠনটির সিনিয়র কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, এই নিষেধাজ্ঞার পর দীর্ঘদিন ধরে সুনামের সঙ্গে পরিচালিত এই কোম্পানিটিকে নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমেও নেতিবাচক খবর প্রকাশ করা হয়েছে। এ কারণে এখানে নিয়োজিত আড়াই হাজার কর্মকর্তা ও কর্মচারী তারা এখন কি করবেন, কোথায় যাবেন এই চিন্তায় গত ১ মাস তাদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। দেশব্যাপী ১১৭টি শাখা ও ৩টি উপ-শাখায় প্রায় ৬৭ হাজার গ্রাহকদের মধ্যে এই কর্মকর্তারা কাজ করেন।
প্রতিষ্ঠানটি ব্যাংক না হয়েও ‘দি মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংক লিমিটেডে’র নামের সাথে ‘ব্যাংক’ শব্দ ব্যবহার করার পাশাপাশি সমবায় অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়া প্রতিষ্ঠানের শাখা সম্প্রসারণের কারণে এই নির্দেশনা দেয় সমবায় অধিদপ্তর।
আবু জাফর চৌধুরী বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান। এতে কোনোভাবে অবৈধভাবে লেনদেনের সুযোগ নেই। ৩১ মে ২০১৬ পর্যন্ত এ প্রতিষ্ঠানটির আমানতের পরিমাণ এক হাজার ১২৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা। বিনিয়োগের পরিমাণ এক হাজার ৮৮ কোটি ৫ লাখ টাকা। ব্যাংকটির রিজার্ভের পরিমাণ ৪৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এছাড়া সমবায় সমিতি বিধিমালা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের জমাকৃত ৬৩ কোটি টাকা বিভিন্ন তফসিলি ব্যাংকে স্থায়ী আমানত হিসাবে গচ্ছিত আছে।
তিনি বলেন, দারিদ্র্য বিমোচন এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের ভাগ্য উন্নয়নের পাশাপাশি ব্যাংকটি দেশের অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এ প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে অনেক ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা স্বাবলম্বী হয়েছে। যার একটি চিত্র আমরা বার্ষিক প্রতিবেদনে দিয়ে থাকি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে প্রায় ৫ কোটি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী রয়েছে। এসব ব্যবসায়ীদের মধ্যে অনেকেই টাকার অভাবে ভালোভাবে ব্যবসা করতে পারেন না। তাদেরকে ঋণ দিলে তারা স্বচ্ছতার সঙ্গে ব্যবসা করে ঋণ পরিশোধ করতে সক্ষম।
প্রতিষ্ঠানটির রিকশার প্রজেক্ট রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ প্রায় ১ কোটি রিকশাওয়ালা আছেন। এদের মধ্যে অধিকাংশ চালক রিকশার মালিক হতে পারেন না। সেই লক্ষে আমরা কিছু দরিদ্র মানুষকে রিকশা কিনে দিয়েছি। যেতে এসব গরিব মানুষ কিস্তি দিয়ে ঢাকা পরিশোধ করে রিকশার মালিক নিজেরাই হতে পারেন।
বাংলাদেশ সময়: ০১০৭ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০১৬
এমএফআই/পিসি