ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ব্যাংকিং

এটিএম বুথে টাকা না পেয়ে গ্রাহকের ভোগান্তি

শাহেদ ইরশাদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২২ ঘণ্টা, জুলাই ৮, ২০১৬
এটিএম বুথে টাকা না পেয়ে গ্রাহকের ভোগান্তি

ঢাকা: রাজধানীর এটিএম বুথগুলোতে টাকা না পেয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন গ্রাহকরা। টাকার অভাবে সারতে পারছেন না দৈনন্দিন কাজ কর্ম।

ঈদের দুইদিন আগে থেকে এ সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। টাকা না পেয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন অনেকে।
 
১ জুলাই থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত ঈদের ছুটির মধ্যে ২ থেকে ৪ জুলাই ব্যাংক খোলা রাখা হলেও এটিএম বুথে পর্যাপ্ত টাকা রাখা হয়নি বলে গ্রাহকদের অভিযোগ। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনাও উপেক্ষা করেছে ব্যাংকগুলো।
 
ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানির (ডেসকো) প্রকৌশলী মেহেদী হাসান রানা বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ব্যাংক এশিয়ার এটিএম বুথ থেকে ভিসা কার্ড দিয়ে টাকা তুলতে পারেননি। পাশে অন্যান্য ব্যাংকের এটিএম বুথে গিয়েও টাকা পাননি।
 
শুক্রবার (৮ জুলাই)  ব্যাংক এশিয়ার বসুন্ধরা বুথের নিরাপত্তা কর্মী কবির হোসেন বলেন, মঙ্গলবার থেকে বুথে টাকা নেই। যোগ‍াযোগ করা হলে ব্যাংক এশিয়ার গ্রাহক সেবা কেন্দ্র থেকে তৌহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, রোববারের আগে বুথে টাকা দেওয়া সম্ভব নয়।
 
গুলশানে এবি ব্যাংকের এটিএম বুথের  নিরাপত্তা কর্মী আমিনুল ইসলাম বলেন, ঈদের আগের দিন টাকা শেষ হয়ে গেছে। আমি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, রোববার অফিস খুললে আবার টাকা দেওয়া হবে।
 
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের নিরাপত্তা কর্মী মোশারফ হোসেন বলেন, ঈদের দুইদিন আগে টাকা শেষ হয়ে গেছে। তবে টাকা শেষ হওয়ার বিষয়টি এড়িয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বুথ নষ্ট থাকার একটি সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছে।
 
একটি বেসরকারি কোম্পানির কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বুধবার রাতে এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলতে পারেননি। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, সকাল থেকে তিনটি বুথে টাকা তোলার জন্য গিয়ে কোনো বুথেই টাকা পাইনি। ঈদের বাজার করতে কলিগদের কাছ থেকে টাকা ধার নিতে হয়েছে।
 
এবিষয়ে খোঁজ নিতে রাজধানীর বিভিন্নস্থানে অবস্থিত ব্যাংকের এটিএম বুথগুলো সরেজমিন পরিদর্শনে গেলে অধিকাংশ বুথে দায়িত্বরত নিরাপত্তা কর্মীরা টাকা নেই বলে জানান। তবে দুএকটি ব্যাংকের বুথে টাকা আছে বলেও নিরাপত্তা কর্মীদের কাছ থেকে জানা গেছে।
 
শুক্রবার (৮ জুলাই) রাজধানীর বারিধারা, গুলশান, বনানী, মহাখালী, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার ও মগবাজার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, টাকা না থাকায় বুথগুলোতে নিরাপত্তা কর্মীরাও নেই। আবার দুএকটিতে থাকলেও তারা ঘুমাচ্ছেন।

গ্রাহকের অভিযোগ, প্রতি বছরই ঈদের টানা ছুটির সময় এটিএম বুথগুলোতে অর্থ সঙ্কট দেখা দেয়। চাহিদা অনুযায়ী এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলতে পারেন না গ্রাহকরা। সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের কাছে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায় না।
 
গ্রাহক সেবা নির্বিঘ্ন করতে আগে থেকেই ঈদের দীর্ঘ ছুটিতে বুথে পর্যাপ্ত টাকা রাখার পাশাপাশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে ব্যাংকগুলোকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
 
এবারও চলতি বছরের ৩০ জুন (বৃহস্পতিবার) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম ডিপার্টমেন্ট থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করে দেশের সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।
 
নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনার পরও ব্যাংকগুলো এটিএম বুথের টাকা শেষ হওয়ার পর আর কোন টাকা না রাখায় আর্থিক সংকটে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন গ্রাহকরা।
 
এবিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা বলেন, বুথে পর্যাপ্ত টাকা রাখার পাশাপাশি জালিয়াতি ও গ্রাহক হয়রানি রোধে ব্যাংকগুলোকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। ছুটির সময় বুথে টাকা না পওয়ার বিষয়ে কোন গ্রাহক অভিযোগ করলে অবশ্যই খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে, দেশে ব্যাংকগুলোর সাত হাজার ৯৫৪টি এটিএম বুথ রয়েছে। এর মধ্যে বেসরকারি ব্যাংকের সাত হাজার ৬২৫টি বুথ। বাকি ৩২৯টি বুথ সরকারি ও বিদেশি ব্যাংকের।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৯ ঘণ্টা, জুলাই: ৮, ২০১৬
এসই/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।