ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ব্যাংকিং

একই বিভাগে আর কতদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা?

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৭, ২০১৬
একই বিভাগে আর কতদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা?

ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ বিভাগগুলোতে ৫-১০ বছর ধরে একই পদে বহাল রয়েছেন বেশ ক’জন মহাব্যবস্থাপক ও উপ-মহাব্যবস্থাপক। এদের মধ্য থেকে সম্প্রতি ১২ জনকে বদলি ও বিভাগ পরিবর্তন করা হয়েছে।

তবে এখনো বহাল রয়েছেন অনেকেই।
 
এই কর্মকর্তাদের বদলি বা বিভাগ পরিবর্তন না করায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অন্য বিভাগের কয়েকজন মহাব্যবস্থাপক। ওই কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তাদের প্রশ্ন: আর কতদিন থাকবেন তারা?
 
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক এসএম রবিউল হাসান, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার-বিভাগের মহাব্যবস্থাপক শাহ আলম, বৈদেশিক মুদ্রা বিনিয়োগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক এএনএম আবুল কাশেম, বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মাসুদ বিশ্বাস,  ফিন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি বিভাগের মহাব্যবস্থাপক দেবাশীষ চক্রবর্তী ও আর্থিক খাত-সহায়তা প্রকল্প বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক মেজবাউল হক ৫ বছরের অধিক, আবার কেউ কেউ ১০ বছরও অধিক সময় ধরে একই বিভাগে একই পদে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
 
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ড. আতিউর রহমানের আমলে এসব কর্তকর্তা বিভিন্ন বিভাগে যোগদান করার পর আর সরানো হয়নি। রিজার্ভ চুরির পর আতিউর রহমান  পদত্যাগ করেন।   নতুন গর্ভনর যোগদান করার পর বেশ কিছু বিভাগের কমকর্তাদের বদলি ও বিভাগ পরিবর্তন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
 
যারা দীর্ঘদিন ধরে একই বিভাগে ও পদে রয়েছেন তাদের একটি লম্বা তালিকাও করা হয়। কিন্তু একই পদে থাকা কর্মকর্তাদের একটি সিন্ডিকেট গর্ভনরকে বোঝায় যে, তাদেরকে এসব বিভাগ থেকে বদলি করা হলে ব্যাংকের কার্যক্রম অচল হয়ে যাবে। একারণে এসব কর্মকর্তার অন্য বিভাগে সরানোর ব্যবস্থা আর নেওয়া হয়নি।
 
তবে আতিউর রহমানের কাছের কর্মকর্তা  হিসেবে গর্ভনর সচিবালয়ের মহাব্যবস্থাপক এএফএম আসাদুজ্জামানকে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) ও ফরেক্স রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্টের মহাব্যবস্থাপক কাজী ছাইদুর রহমানকে রংপুর কার্যালয়ে বদলি করা হয়।
 
সম্প্রতি ছাইদুর রহমানকে পদোন্নতি দিয়ে আবার বগুড়া কার্যালয়ে  বদলি করা হয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটেও বেশ কয়েক উপ ও যুগ্মপরিচালক রয়েছেন। তাদের সন্ত্রাসে অর্থায়ন ও অর্থপাচার রোধের কথিত বিশেষজ্ঞ হিসেবে গণ্য করে বদলি করা হচ্ছে না।
 
জানা গেছে, ফজলে কবিরের আমলে সবকিছু নিয়মনীতির মধ্যে চলবে বলে অনেক কর্মকর্তার প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন হয়ে গেলেও এসব কর্মকর্তাকে বদলি না করায় চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে অন্য কর্মকর্তাদের মধ্যে।  
 
কর্মকর্তারা বলছেন, ফজলে কবির সাবেক সচিব হয়েও বাংলাদেশ ব্যাংকের বদলির নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি নিতে পারেননি।
 
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বদলির বিষয়ে ২০০০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন মহাব্যবস্থাপক শেখ আব্দুল আজিজ স্বাক্ষরিত এক আদেশে বলা হয়েছে: আন্ত:বিভাগীয় বদলির ক্ষেত্রে বিদ্যমান নীতিমালা অর্থাৎ পরিদর্শন বিভাগে ৫ বছর এবং অন্যান্য বিভাগে ৩ বছরের বেশি সময় থাকা যাবে না।
 
কিন্তু সংশ্লিষ্ট বিভাগের মহাব্যবস্থাপকদের ক্ষেত্রে এই নীতিমালার প্রয়োগ কেন করা হচ্ছে না –এই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে অন্যান্য বিভাগের কর্মকর্তাদের মধ্যে। তারা বলছেন দীর্ঘদিন একই পদে থাকতে থাকতে  কাজে স্থবিরতা চলে এসেছে।
 
দেশে কার্যরত ব্যাংকগুলোর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকে যদি নিয়ম কানুন সঠিকভাবে প্রতিপালন করা না হয় তাহলে কিভাবে সরকারি-বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক পরিচালনার দিক নির্দেশনা  দেবে!
 
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র  ও নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
 
বাংলাদেশ সময়: ১১৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর: ৬, ২০১৬
এসই/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।