ঢাকা: অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, আগামী দুই বছরের মধ্যে ব্যাংক কোম্পানি আইনের একীভূতকরণ ও দেউলিয়া ধারা সংশোধন করা হবে।
বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে ভিডিও কনফারেন্সর মাধ্যমে বেসরকারিখাতের মার্কেন্টাইল ব্যাংকের শাখা উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন তিনি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, মোটামুটি ভাবে ব্যাংকিংখাত নিয়ে আমি যথেষ্ট আশাবাদী। তবে হ্যাঁ বেশি সংখ্যক ব্যাংক হয়েছে, এটাতে কিছু কিছু পরিবর্তন আসবে। সেটা আসতে থাকুক, তো আমাদের হইচই করার কোনো কারণ নাই। এটাকে ফোর্স করারও কোনো কারণ নেই। আইনকানুন যেন আমাদের ঠিক থাকে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আইন-কানুন আমাদের টিকঠাক করতে হবে। কয়েকটি আইনকানুন আমাদের নেই, যেমন একীভূতকরণ ও দেউলিয়া (মার্জার, ব্যাংকক্রাসসি)। এসব আইন-কানুন আমাদের ভালো নয়, এগুলোকে তৈরি করা প্রয়োজন। আমি আশা করছি আগামী দুই বছরের মধ্যে আমরা যথেষ্ট প্রস্তুত থাকবো ভাবিষ্যতের জন্য। আমার বন্ধু জলিলের স্মৃতি (মার্কেন্টাইল ব্যাংক) খুব ভালো লাগছে।
তিনি বলেন, ব্যাংকিং সেক্টর সম্পর্কে অনেকেই বলেন, আমাদের দেশে অনেক বেশি ব্যাংক সৃষ্টি হয়েছে। আমি সেটা সমন্ধে মন্তব্য করতে চাইনা, এটা খুব মন্দ হয়নি। এরফলে ব্যাংকিং সার্ভিসটা অনেক বির্স্তৃত হয়েছে। এটা আমাদের স্বীকার করতেই হবে একটা বিরাট জনগোষ্ঠীকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় নিয়ে এসেছি। সেটা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য উল্লেখযোগ্য একটি বিষয়।
মুহিত বলেন, টাকা যদি থাকে তার সার্কুলেশন যথাযথ হয়না, তাহলে সেই টাকা পয়সায় উন্নয়ন বিশেষ কিছু হয়না। উন্নয়নের জন্য টাকার সার্কুলেশন দরকার ব্যাংকিং ব্যবস্থা সেটাই করেছে। আমরা সেইদিক থেকে বলতে পারি অনুন্নত দেশ হলেও একটি বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় নিয়ে এসেছি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আজকে প্রাইভেট ব্যাংক সেক্টরে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটছে। দশটি শাখা একসঙ্গে ডিজিটাল পদ্ধতিতে উদ্বোধন করা হচ্ছে। এখানে বসে আমরা দশটি শাখা খুলছি মুহূর্তের মধ্যে টিপাটিপি করে। ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যার আব্দুল জলিল আমার ঘনিষ্ঠজন সহকর্মী ও দলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ১৭ বছরে অগ্রগতিও যথেষ্ট হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ফজলে কবির বলেন, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের এ উদ্যোগ ব্যাংকিংখাতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আমার বিশ্বাস। তাদের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সফল অগ্রযাত্রার ব্যাংকটিকে দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনার জন্য কর্তৃপক্ষকে সাধুবাদ জানাচ্ছি।
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য আর্থিকখাতের দায়িত্ব ও ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর্থিকখাতের স্থিতিশীলতার জন্য প্রয়োজন ব্যাংকগুলোর সুদক্ষ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং ব্যবসায়ীক সংশ্লিষ্ট সুশাসন।
গ্রাহক সেবার মানউন্নয়নে চাই আধুনিক ও যুগোপযোগী কর্মসম্পাদনের ব্যবস্থা করা। পরিবেশবান্ধব সামাজিক দায়বদ্ধতার জন্য চাই উৎপাদনমুখী খাত। অবহেলিত জনগোষ্ঠীর দিকে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ।
স্বাগত বক্তব্যে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী মশিহুর রহমান বলেন, ১৯৯ সালে যাত্রা শুরুর পর আজকে একটি ব্যতিক্রমধর্মী অনুষ্ঠান করতে পেরে আমরা আনন্দিত। ১১৯ টি শাখা, ১৪২টি এটিএম ও বিভিন্ন প্রোডাক্টস এবং চ্যালেঞ্জর মাধ্যমে গ্রাহক সেবা দিয়ে যাচ্ছি।
সভাপতির বক্তব্যে চেয়ারম্যান শহিদুল আহসান ব্যাংকের কার্যক্রম ও ভবিষ্যতে পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
নতুন যে দশটি শাখা উদ্বোধন করা হলো সেগুলো হলো- ঢাকার আসাদ গেট শাখা, লালমনিরহাট শাখা, নাটোর শাখা, চট্টগ্রাম সদরঘাট শাখা, নারায়ণগঞ্জের শিমরাইল শাখা, শরীয়তপুরের গোসাইর হাট শাখা, নোয়াখালীর কানকিরহাট শাখা, লক্ষ্মীপুরের মান্দারী বাজার শাখা, টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের গোড়াই শাখা, গৌরীপুর শাখা ও ঢাকার আশুলিয়া শাখা।
এসব শাখায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ব্যাংকের কর্মকর্তা ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গেও অর্থমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কথা বলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৬
এসই/এসএইচ