দেশে প্রকাশিত মোট জ্ঞান ও সৃজনশীল বইয়ের বেশির ভাগই প্রকাশিত হয় বাংলা একাডেমি আয়োজিত এ একুশে গ্রন্থমেলা উপলক্ষ্যে।
আর তাই জ্ঞান ও সৃজনশীল বইয়ের প্রকাশনার জন্য সহায়তা করতে এগিয়ে এসেছে দেশের ব্যাংকখাতও।
২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকগুলো জ্ঞান ও সৃজনশীল বই প্রকাশের জন্য পাঁচ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে প্রকাশকদের।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, ক্ষুদ্র শিল্প ও ব্যবসায় সহায়তার জন্য পুনঃঅর্থায়ন স্কিম ‘বাংলাদেশ ব্যাংক ফান্ড’ নামে একটি ছয়শ’ কোটি টাকার তহবিল চালু রয়েছে।
এসএমইখাতে নতুন উদ্যোক্তা ও নারী উদ্যোক্তাদের জন্য এ তহবিল থেকে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ সুদে ঋণ দেওয়া হয়।
ওই ফান্ডের নীতিমালা ২০১৩ সালের সংশোধন করে সৃজনশীল প্রকাশকদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এই তহবিলের আওতায় পাঁচটি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণ বিতরণ করছে। এ পর্যন্ত ২৫ জন প্রকাশক সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ সুদে পাঁচ কোটি পাঁচ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছেন।
তবে ২০১৬ সালে ঋণ নিয়েছেন মাত্র একজন প্রকাশক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বিগত বছর এই খাতে একজন প্রকাশক ৫০ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছেন। ওই ঋণ বিতরণ করেছে আইডিএলসি ফাইন্যান্স। আগের বছরের আগস্ট পর্যন্ত পাঁচটি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদে চার কোটি ৫৫ লাখ টাকা ঋণ বিতরণ করে। সর্বমোট ২৪জন প্রকাশক এ ঋণ নেন।
এ তহবিল থেকে সবচেয়ে বেশি ঋণ দিয়েছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইডিএলসি ফাইন্যান্স। ১৭ জন প্রকাশককে চার কোটি ৬৮ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
জানা গেছে, আগের বছরে মার্কেন্টাইল ব্যাংক দু’জন প্রকাশককে স্বল্প মেয়াদে আট লাখ করে মোট ১৬ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছে। স্বল্প মেয়াদে একজন প্রকাশককে নয় লাখ টাকা ঋণ দিয়েছে প্রাইম ব্যাংক। এবি ব্যাংক একজন প্রকাশককে মধ্য মেয়াদী ঋণ দিয়েছে ১০ লাখ টাকা। তিন লাখ টাকা করে দু’জন প্রকাশক ছয় লাখ টাকা ঋণ পেয়েছেন ওয়ান ব্যাংক থেকে। এছাড়া একজন প্রকাশককে মধ্য মেয়াদী চার লাখ টাকা ঋণ দিয়েছে পূবালী ব্যাংক।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সাবেক সভাপতি ও আগামী প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ওসমান গণি বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তহবিল থেকে ঋণ নিয়ে মুদ্রণশিল্প ব্যাপকভাবে উপকৃত হচ্ছে। সুযোগ থাকা সত্ত্বেও প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঋণ নেওয়ার জন্য কেউ হামলে পড়ছে না। যাদের প্রয়োজন তারাই শুধু ঋণ নিচ্ছেন।
এ তহবিল থেকে ঋণ নিয়ে বই প্রকাশ করা হলে বইয়ের উপযুক্ত স্থানে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের পুনঃঅর্থায়ন স্কিমের আওতায় অর্থায়িত’ কথটি সৌজন্যমূলকভাবে উল্লেখ করতে হবে। শতভাগ পুনঅর্থায়নযোগ্য এ তহবিল থেকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো পাঁচ শতাংশ সুদে ঋণ নিতে পারবে। গ্রাহক পর্যায়ে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ সুদে এ ঋণ বিতরণ করতে হবে।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা বাংলানিউজকে বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক সব সময় সৃজনশীল উদ্যোক্তাদের দেশে কার্যরত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে পুনঃঅর্থায়ন তহবিল থেকে অর্থায়ন করে আসছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৭
এএটি/আরআই