ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

ব্যাংকিং

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া ঋণ পুনর্গঠন হয়না

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৫ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০১৭
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া ঋণ পুনর্গঠন হয়না

ঢাকা: রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকের ঋণ পুনর্গঠনের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া কোন ব্যাংক ঋণ পুনর্গঠন করতে পারে না।

এ বিষয়ে ২০১২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের তৎকালীন উপ-মহাব্যবস্থাপক আনোয়ারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপন দেশের সব তফসিলী ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়। তারপর থেকে ঋণ পুনর্গঠনের জন্য ওই প্রজ্ঞাপনের নির্দেশনা মেনে চলছে ব্যাংকগুলো।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা বলেন, সরকারি কোন ব্যাংক ঋণ পুনর্গঠনের আবেদন করলে আমরা সেটি যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় ডাউন পেমেন্ট নিয়ে পুনর্গঠনের পরামর্শ দিয়ে থাকি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক চাইলে যে কোন ঋণ পুনর্গঠনের আবেদন বাতিল করতে পারে।

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন রূপালী ব্যাংক ২০১৫ ও ১৬ সালে দশজন গ্রাহকের ঋণ পুনর্গঠন করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০১৫ সালের ২২ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিআরপিডি থেকে মেসার্স সোনারগাঁও টেক্সটাইলস লিমিটেডের ঋণ পুন:তফসিলিকরণ করতে অনাপত্তি পত্র দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে এই মেয়াদী ঋণটি প্রয়োজনীয় ডাউন পেমেন্ট ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা নিয়ে ৩৬ মাস মেয়াদে পুন:তফসিল করার পরামর্শ দিয়েছে।

অংকুর স্পেশালাইজড কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডকে মোট ঋণের ৩ শতাংশ হারে আদায় সাপেক্ষে ৪ বছর মেয়াদে, ময়নাকুটি এগ্রো ইন্ড্রাস্ট্রিজ লিমিটেডকে বকেয়া স্থিতির ৩ শতাংশ আদায় সাপেক্ষে ৫ বছর মেয়াদে, মেসার্স বিজিসি ট্রাস্ট মেডিকেল কলেজ লিমিটেডকে ঋণের কমপক্ষে ৫ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট নিয়ে ৬ বছর মেয়াদে, বদর স্পিনিং মিলস লিমিটেডকে ডাউন পেমেন্ট গ্রহন ও ঋণের মেয়াদকাল নিরুপন সংক্রান্ত শর্ত ব্যতীত বিআরপিডির প্রজ্ঞাপন ১৫-২০১২ এর অন্যান্য শর্ত যথাযথভাবে পরিপালন করে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত, মেসার্স ভার্গো লিমিটেডের মেয়াদি ও তলবি ঋনের জন্য ৮ কোটি ডাউন পেমেন্ট নিয়ে ডাউন পেমেন্ট গ্রহন ও ঋণের মেয়াদকাল নিরুপন সংক্রান্ত শর্ত ব্যতীত বিআরপিডির প্রজ্ঞাপন ১৫-২০১২ এর অন্যান্য শর্ত যথাযথভাবে পরিপালন করে ৩৬ মাস মেয়াদে, মেসার্স ইব্রাহিম কনসোর্টিয়াম লিমিটেডকে ৮১ লাখ টাকা ডাউনপেমেন্ট নিয়ে ২৪ মাস মেয়াদে ও ডিএসএল সোয়েটার লিমিটেডকে ৭ বছর মেয়াদে পুন:তফসিল করার পরামর্শ ও অনাপত্তি পত্র দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

একই ভাবে বিউটিফুল জ্যাকেট, প্যানবো বাংলাদেশ, চ্যামন ইস্পাত, মাদার টেক্সাটাইল প্রভৃতি ঋণ হিসাবগুলো যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন গ্রহণ করে পুন:তফসিল ও পুনর্গঠন করা হয়েছে।

সম্প্রতি রূপালী ব্যাংকের বিরুদ্ধে ১৬ জন গ্রাহকের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় ডাউন পেমেন্ট ছাড়া ঋণ পুনর্গঠনের সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। তাতে ব্যাংকের সাবেক এমডি এম ফরিদ উদ্দিনের আমলে এসব ঋণ পুন:তফসিল করার কথা উল্লেখ করা হলেও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব ঋণ নিয়ম মেনেই পুন:তফসিল করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, ঋণ প্রদানের সময় কোন প্রতিষ্ঠান ভালো ভাবে চললেও পরবর্তীতে বিভিন্ন কারণে খেলাপী হতে পারে। এ কারণে ব্যবসায়ীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে ঋণ পুন:তফসিল করার সুযোগ দিয়ে থাকে।

তিনি আরও বলেন, ঋণ পুনর্গঠন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। এ প্রক্রিয়ায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যবসায় কোনো অসুবিধা হলে ঋণ পরিশোধে সময় চাওয়া হয়। তাতে দোষের কিছু নেই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আতাউর রহমান প্রধান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ও পরামর্শ অনুযায়ী নিয়ম মেনে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে ঋণ পুনর্গঠনের সুযোগ দেয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৭ ঘণ্টা, মার্চ: ৮, ২০১৭
এসই/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।