ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপি

এখনও মওদুদের দখলে সেই বাড়ি

শাহজাহান মোল্লা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩২ ঘণ্টা, আগস্ট ৩, ২০১৬
এখনও মওদুদের দখলে সেই বাড়ি ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: চারদিকে উঁচু প্রাচীর। এই প্রাচীরের উপরেও ৪/৫ ফুট ‍‌উঁচু কাঁটাতারের বেড়া।

গুলশান থানার পরেই সবুজে ঘেরা ডুপ্লেক্স বাড়ি। গুলশান ২ নম্বর গোল চত্বর হয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বাসার দিকে যেতে কয়েক গজ এগোলেই এমন একটি বিলাসী বাড়ি চোখে পড়বে। যে বাড়িটি নিয়ে এখন চারদিকে আলোচনার ঝড়।
 
বাড়িটি আর কারো না, বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য এক সময়ের প্রধানমন্ত্রী ও সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের। মঙ্গলবার (০২ আগস্ট) আদালত থেকে তার বাড়ির মালিকানা সংক্রান্ত মামলা খারিজ হওয়ার পর বুধবার (০৩ আগস্ট) বিকেলে বাড়িটি সরেজমিন দেখতে যাওয়া।

বাড়িতে প্রবেশ করতে প্রধান সড়কের পাশেই রয়েছে দু’টি গেট। একটি প্রহরী ঘরও রয়েছে। সামনে গিয়ে দেখা যায় দু’টি গেটেই তালা মারা। গেটের পাশে যে প্রহরী ঘর রয়েছে সেটিতেও কেউ নেই। আশপাশে কাউকে না দেখে গেটের দরজায় নক করতে থাকা। ওপাশ থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে দূর থেকেই মাথা উঁচু করে বাড়ির ছাদে একজন লোক দেখতে পাওয়া যায়।

মুখে হালকা দাড়ি আছে লুঙ্গি পরা ওই লোকটি ছাদের ওপর গাছের পরিচর্যা করছিলেন বলে আন্দাজ করা যায়। হাতের ইশারায় তাকে ডাকলে, সেই ইশারা দিয়ে দেখাতে থাকেন কলিং বেলে চাপ দিন। তার ইশারায় কলিং বেলে কয়েকবার চাপ দেওয়ার পর অর্ধ বয়সী এক লোক এসে ভেতর থেকেই জানতে চান কে? কথা বলার জন্য অনুরোধ করলে গেটটি একটুখানি ফাঁকা করে উঁকি দিয়ে ফের জানতে চান কে? সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পর তার বক্তব্য- ‘যা করার বাইরেই করেন, ভেতরে কিছু করা যাবে না’।
 
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এই বাসায় থাকেন কিনা? এমন প্রশ্ন করা মাত্রই বলেন, ‘স্যার পরিবারসহ এখানেই থাকেন, তবে এখন নেই’। বাড়ি ছাড়ার ব্যাপারে আদালতের কোনো নির্দেশনা এসেছে কিনা? সোজা উত্তরে, ‘আমরা জানি না, এসব স্যারই ভালো জানেন, অফিসে যোগাযোগ করেন’।
 
যিনি এসব কথা জানান তার নাম জানতে চাইলে বলেন, ‘আমি বাসার স্টাফ, নাম আনোয়ার’। বাসায় কতজন স্টাফ রয়েছেন জানতে চাইলে বলেন, আমরা ৭/৮ জন কাজ করি। এই কথা বলেই আবার গেট বন্ধ করে চলে যান।

বাসাটির চারদিকে বিভিন্ন ফলজ গাছে ভরা। কাঁঠাল গাছ, আম গাছ। ছাদে রয়েছে লেবু গাছ, পেয়ারাসহ আরও কত গাছ। বাসার স্টাফ আনোয়ারের সঙ্গে কথা বলার কয়েক মিনিট পরেই সাদা একটি পাজেরো গাড়ি এসে হর্ন দিতে থাকে। গাড়ির নম্বর ঢাকা মেট্রো ঘ ১১-৪৬৪৭।

গুলশানে দেড় বিঘা জমির ওপর নির্মিত এই বাড়িটি ব্যরিস্টার মওদুদ আহমদের ভাই মনজুর আহমদের নামে নামজারি করার জন্য এর আগে হাইকোর্ট রায় দিয়েছিলেন। কিন্তু মঙ্গলবার (০২ আগস্ট) হাইকোর্টের সেই রায় বাতিল করে আপিল বিভাগ, ফলে প্রায় তিন দশক ধরে বসবাস করা বাড়িটি ছাড়তে হবে বিএনপির এই সিনিয়র নেতাকে।
 
জানা যায়, অস্ট্রিয়ান এক নারী ১৯৭৩ সালে মওদুদ আহমদকে বাড়িটি দেখভালের জন্য পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দেন। যদিও মওদুদ আহমেদ দাবি করছেন এটি তাদের কেনা বাড়ি, সরকারি সম্পত্তি নয়। ১৯৮১ সাল থেকেই মওদুদ আহমদ এই বাড়িতে বসবাস করছেন।

**রিভিউ আবেদন জানাবেন মওদুদ
**বাড়ি হারাচ্ছেন মওদুদ, তবে দুদকের মামলা বাতিল
 
বাংলাদেশ সময়: ২১২৬ ঘণ্টা, আগস্ট ০৩, ২০১৬
এসএম/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।