২০১৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন, দল গুছিয়ে আবার আন্দোলন করবেন তারা। তার কথার প্রমাণ মেলে বিএনপির তৃণমূলের কমিটি পুনর্গঠনের উদ্যোগে।
এরপর ২০১৫ সালের আগস্টে চিঠি দিয়ে জেলা পর্যায়ের সব কমিটি পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেয় বিএনপি। সে উদ্যোগেও গতি আসেনি পুনর্গঠন কার্যক্রমে। সবশেষ ২০১৬ সালের ৬ আগস্ট কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণার কয়েকদিনের মাথায় দলের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহানকে মাঠপর্যায়ে কমিটি পুর্নগঠনের দায়িত্ব দেন খালেদা জিয়া। কিন্তু এই উদ্যোগেরও ফলাফল ‘শূন্য’ দেখছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
অবশ্য, দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা এ ক্ষেত্রে দুষছেন প্রভাবশালী নেতাদের হস্তক্ষেপ, পৌরসভা নির্বাচন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ও সাংগঠনিক কাজকর্মে ক্ষমতাসীন দল ও প্রশাসনের বাধাকে। এছাড়াও বলছেন যোগ্য নেতা বাছাই, সম্মেলন না করতে দেওয়া, নেতা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে তার সম্পর্কে তথ্য উপাত্ত গ্রহণ করে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে বিলম্ব হওয়ার কথাও।
সারাদেশে বিএনপির মোট ৭৫টি সাংগঠনিক জেলা রয়েছে। এরমধ্যে এ পর্যন্ত গঠিত হয়েছে ২৫ জেলার কমিটি গঠনের কাজ। এ জেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে রাঙামাটি, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, নেত্রকোনা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সৈয়দপুর, সিলেট জেলা ও মহানগর, ঝিনাইদহ, নওগাঁ, দিনাজপুর, মাগুরা, মেহেরপুর, রাজশাহী, রাজশাহী মহানগর ও কুমিল্লা উত্তর। এর বাইরে চুয়াডাঙ্গা, খুলনা, নোয়াখালী, সাতক্ষীরা, জয়পুরহাটসহ আরও ১০টি জেলার কমিটি গঠনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। ফেব্রুয়ারিতেই এসব জেলায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদের নেতার নাম কেন্দ্র থেকে ঘোষণা করার ইঙ্গিত মিলছে দলীয় সূত্রে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় ও তৃণমূল নেতৃত্ব প্রকাশ্যে স্বীকার না করলেও মনে করে, সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী পর্যায়ে নেই বলে তারা ইস্যুভিত্তিক বিভিন্ন আন্দোলনে ব্যর্থ হয়েছে। সেজন্য খোদ চেয়ারপারসনই বলেন দল গুছিয়ে আন্দোলনে নামার কথা। ২০১৪ সালে তার ঘোষণার পর থেকে গত বছরের ১৯ মার্চ কাউন্সিলের আগ পর্যন্ত সারাদেশে ৭৫টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে কমিটি ছিল মাত্র ৯টিতে। যদিও এখন কমিটি আছে ২৫টি সাংগঠনিক জেলায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তৃণমূল পুনর্গঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমানে সারাদেশে তৃণমূল পর্যায়ে যে নেতারা বিএনপির নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তারা সবাই দলের কাজে ভালো ভূমিকা রেখেছেন। সেক্ষেত্রে তাদের মধ্যে থেকে একজনকে বেছে নেওয়া মুশকিল। এছাড়াও আমাদের সম্মেলন, সভা কোনো কিছুরই অনুমতি দেওয়া হয় না। ঢাকা শহরেই যে অবস্থা, গ্রাম পর্যায়ে সমস্যা আরও প্রকট। আমাদের বেশ চিন্তা ভাবনা করে বাছাই করতে হচ্ছে। কারণ শক্তিশালী কমিটি গঠনের পর সুষ্ঠু নির্বাচনের আন্দোলনও জোরদার হবে।
তবে দলের অভ্যন্তরীণ সমস্যার চেয়েও ‘সরকারের রোষানল’ই কমিটি গঠনের প্রধান বাধা বলে দাবি করেন তিনি।
কবে নাগাদ কমিটি পুনর্গঠন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে পারে- জানতে চাইলে বিএনপির এ নেতা বলেন, ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে ৪০ জেলায় কমিটি গঠনের কাজ শেষ হবে। চেষ্টা করবো অতি দ্রুত ৮০ শতাংশ কাজ শেষ করতে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০১৭
জেডএফ/আরআর/এইচএ/জেডএম