২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পর ন্যাপ ভাসানী, এনপিপি, এনডিপি, মুসলীম লীগ, ইসলামী ঐক্যজোটসহ কয়েকটি দল বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট থেকে বেরিয়ে যায়।
এমন পরিস্থিতিতে জোটের অখণ্ডতা রক্ষা ও সংখ্যাতাত্বিক নাম ঠিক রাখার জন্য শরিক দলগুলোর ভগ্নাংশ দিয়ে একই নামে নতুন দল গঠন করে বিএনপি।
কিন্তু এখন জোটের এই ভগ্নাংশগুলোতে চলছে ভাঙনের খেলা। আর এ খেলা স্বয়ং জোট শরিকরাই খেলছে। এখন আর বিষয়টিকে গোয়েন্দা সংস্থার কারসাজি হিসেবে দেখার সুযোগ পাচ্ছেন না জোট নেতারা। বরং শরিক দলগুলোর এ ধরনের নোংরা খেলায় জোটের মধ্যে এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিবেশ বিরাজ করছে।
সূত্রমতে, গত শনিবার (০৪ মার্চ) ২০ দলীয় জোটের শরিক খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজার নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) যুগ্ম মহাসচিব মো. ফরিদউদ্দিনকে নিজ দলে ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করে নিয়েছেন জোটের আরেক শরিক ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ এর নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টি (এনপিপি)।
অথচ এই এনপিপিও মূল এনপিপি নয়। এনপিপির চেয়ারম্যান শেখ শওকত হোসেন নিলু ২০১৫ সালের ২৪ আগস্ট বিএনপি জোট থেকে বেরিয়ে গেলে ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের নেতৃত্বে আরেকটি এনপিপি গঠন করা হয়। সেই এনপিপিই এখন জোটের শরিকদল ভেঙে নিজের দল ভারি করছে।
এদিকে যে এনডিপি থেকে মো. ফরিদউদ্দিন এনপিপিতে গেলেন সে এনডিপিও অক্ষত এনডিপি নয়। ২০১৫ সালেই এনডিপির মহাসচিব আলমগীর মজুমদারের নেতৃত্বে দলটির একাংশ জোট থেকে বেরিয়ে যায়। যোগ দেয় শেখ শওকত হোসেন নিলুর নেতৃত্বাধী জোট ন্যাশনালিস্ট ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টে (এনডিএফ)।
ক’দিন আগে আলমগীর মজুমদার এনডিএফ থেকে বেরিয়ে গিয়ে আলাদা আরেকটি জোট গঠন করেছেন। এ জোটেও বিএনপি জোট থেকে লোক ভাগানোর চেষ্টা অব্যহত রয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে বিএনপি জোটের অন্যতম শরিক শফিউল আলম প্রধানের নেতৃত্বাধীন জাগপার সহ-সভাপতি মহিউদ্দিন বাবলু ও যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান জাগপা থেকে বেরিয়ে যান। গঠন করেন নতুন আরেকটি জাগপা। এই জাগপা এখন শেখ শওকত হোসেন নিলুর নেতৃত্বাধীন এনডিএফ’র সঙ্গে আছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের অন্যতম শরিক এলডিপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম বাংলানিউজকে বলেন, এ ধরনের চর্চা মোটেই ভালো না। জোট শরিকদের পরস্পরের প্রতি রাজনৈতিক সৌজন্যবোধ থাকা উচিত।
জোটের আরেক শরিক বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বাংলানিউজকে বলেন- রাজনীতিতে কেউ তো চাকরি করে না। দল করা না করা, দল পরিবর্তন করা ব্যক্তির নিজস্ব সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করে। তবে, জোট শরিকদের উচিত নয় বন্ধুপ্রতীম দলের কাউকে নিজ দলে ভেড়ানোর চেষ্টা করা। এতে অনেকটা আস্থার সংকট সৃষ্টি হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১০ ঘণ্টা, মার্চ ৬, ২০১৭
এজেড/জেডএম