সম্প্রতি তার বনানীর বাসায় একান্ত স্বাক্ষাৎকার নেন বাংলানিউজের স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট আসাদ জামান। ছবি তুলেছেন বাংলানিউজের সিনিয়র ফটো করেসপন্ডেন্ট দেলোয়ার হোসেন বাদল।
বাংলানিউজ: ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য বিএনপিও ভারতের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের চেষ্টা করে ....
মেজর (অব.) হাফিজ: ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য না। বিএনপি বিশ্বাস করে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকতে হবে। এতো বড় শক্তিশালী দেশ। তাদের সঙ্গে মারা-মারি, কাটা-কাটি করে সুবিধা হবে না। বিএনপিকে ভারত ক্ষমতায় নিয়ে দেবে- বিএনপি এটা বিশ্বাস করে না, আশাও করে না। বিএনপির শক্তি বাংলাদেশের জনগণ। একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন দিক চোখ বন্ধ করে, বিএনপি ক্ষমতায় চলে যাবে।
বাংলানিউজ: তাহলে আপনারা নির্বাচনে যাচ্ছেন?
মেজর (অব.) হাফিজ: যদি সেরকম পরিবেশ থাকে।
বাংলানিউজ: কোন রকম?
মেজর (অব.) হাফিজ: শেখ হাসিনা ক্ষমতার অপব্যবহার করতে না পারেন- সে ধরনের একটি সরকার যদি দেশে থাকে, তাহলে বিএনপি নির্বাচনে যাবে।
বাংলানিউজ: তাহলে কি আরেকটি সরকার?
মেজর (অব.) হাফিজ: একটা সহায়ক সরকার। যেটির কথা আমরা বলছি। এটি একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হবে। এই সরকারের একমাত্র কাজ নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করা। একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা।
বাংলানিউজ: সেটি তো আরেকটি তত্ত্বাবধায়ক হয়ে গেল…..
মেজর (অব.) হাফিজ: যে নামেই দিন। এই আওয়ামী লীগ সরকারও থাকতে পারে। কিন্তু তাদের হাতে নির্বাহী ক্ষমতা থাকতে পারবে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দায়িত্বে থেকেই নির্বাচন করবেন! আরেক বেটাকে পুলিশ দাবড়াবে-তা হবে না। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকবে- এ ধরনের সরকার আমরা চাই। যেখানে মন্ত্রীদের হাতে নির্বাহী ক্ষমতা থাকবে না।
বাংলানিউজ: নির্বাহী ক্ষমতা থাকবে কোথায়?
মেজর (অব.) হাফিজ: নির্বাচন কমিশনের কাছে থাকবে। ক্ষমতাসীনরা যদি মানসিকভাবে প্রস্তুত হয়, তাহলে মন্ত্রিসভায় পরিবর্তন আনা যেতে পারে। এক দশমাংশ অনির্বাচিত মন্ত্রী থাকতে পারে। ২০ জনের মন্ত্রিসভায় যদি দুইজন অনির্বাচিত মন্ত্রী থাকেন। আর এই দুইজন অনির্বাচিত মন্ত্রী বিরোধী দলের মতামত অনুসারে যদি নেওয়া হয় এবং তাদের হাতে যদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ছেড়ে দেওয়া হয় তাহলে….
বাংলানিউজ: তাহলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই বিএনপি নির্বাচনে যাবে?
মেজর (অব.) হাফিজ: হতে পারে। চিন্তা করে দেখতে পারি। কিন্তু ওই প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী ক্ষমতা থাকবে না।
বাংলানিউজ: গত বছর এ ধরনের একটা প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিলো..
মেজর (অব.) হাফিজ: এ ধরনের কোনো প্রস্তাব দেওয়া হয়নি। যেটা বলেছিলো, সেটা ছিলো কথার কথা। শেখ হাসিনা আগেই জানতেন- খালেদা জিয়া আসবেন না।
বাংলানিউজ: ধরুন ২০১৮ এর প্রথম দিকেই নির্বাচন। বিএনপি কী ৩০০ আসনে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত?
মেজর (অব.) হাফিজ: বিএনপি ৩ হাজার আসনে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। তাদের এতো জনসর্থন ও প্রার্তী আছে যে ভোট দিলেই বুঝবেন ক্ষমতায় কারা যায়। কুমিল্লার নির্বাচন শেষে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ঘরে ফিরে কান্নার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো। পরে তারা খবর পেল বিপুল ভোটে জিতে গেছে। একেই বলে নীরব ভোট বিপ্লব।
বাংলানিউজ: সম্প্রতি বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকলে নির্বাচনে যাবে না বিএনপি। তাহলে আরেকটি নির্বাচন ড্রপ করবে বিএনপি?
মেজর (অব.) হাফিজ: হ্যাঁ করবে। তবে নিয়ত যদি ভালো থাকে শেখ হাসিনার অধীনেও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কি হবে না- তা নির্ভর করে শেখ হাসিনার উপর।
বাংলানিউজ: আগামী নির্বাচনে অংশ না নিলে বিএনপি ভেঙে যাবে-বিশ্বাস করেন কি?
মেজর (অব.) হাফিজ: বিএনপি ভাঙার কোনো সম্ভাবনা নেই। বিএনপি কোনো রাজনৈতিক দল নয়। ভারতবিরোধী মনোভাব ও আওয়ামী দু:শাসনের বিরুদ্ধে জনতার ঐক্যবদ্ধ প্লাটফর্মের নাম হচ্ছে বিএনপি। আওয়ামী লীগ যত দিন দু:শাসন চালিয়ে যাবে ততো দিন জনগণই বিএনপিকে ধরে রাখবে।
বাংলানিউজ: বাংলানিউজের পক্ষ থেকে আপনাকে ধন্যবাদ
মেজর (অব.) হাফিজ: বাংলানিউজকেও ধন্যবাদ।
শেষ
** বিএনপি এলে তিস্তা সমস্যার আংশিক সমাধান হবে
** বিএনপির সঙ্গে কোনো সমস্যার সমাধান করবে না ভারত
বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, মে ৮, ২০১৭
এজেড/জেডএম
বিএনপি
শেখ হাসিনার অধীনেও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব
আসাদ জামান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীর বিক্রম। সাবেক পানি সম্পদ মন্ত্রী। ছয় বারের সংসদ সদস্য। বর্তমানে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান। পোড় খাওয়া এ রাজনীতিবিদ মনে করেন, নিয়ত ঠিক থাকলে শেখ হাসিনার অধীনেও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। তিনি বিশ্বাস করেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কি হবে না- তা নির্ভর করে শেখ হাসিনার উপর।
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।