বৃহস্পতিবার (১ জুন) সুপ্রিম কোর্ট বার মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছিলেন তিনি।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৩৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম এ আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে।
খালেদা জিয়া বলেন, এ বাজেট লুটপাটের বাজেট, আওয়ামী লীগের চুরি করার সুযোগ দিয়েছে এ বাজেট। বাজেট সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী নিজেও কিছু বলতে পারেন না। বাজেটও তৈরি হয় শেখ হাসিনার (প্রধানমন্ত্রী) কথা মত। শেখ হাসিনা যা চান, বাজেট তা-ই।
বিএনপি প্রধান বলেন, এই বাজেট কি আর বাজেট থাকবে? পরে দেখবেন, একটা প্রকল্প এখন আছে দশ হাজার কি বিশ হাজার কোটি টাকা, এটাকে তারা ত্রিশ হাজার কোটি টাকা বানাবে। তারপর আবার বাড়বে, আবার চল্লিশ হাজার কোটি টাকা হবে। এইভাবে বাড়তে থাকবে।
গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির কড়া সমালোচনা করে খালেদা জিয়া বলেন, এরইমধ্যে আজ থেকে গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে। চালের দাম এত বেশি, দেশের মানুষ, গরিব মানুষ খেতে পারছে না। কাজেই আমরা মনে করি, গ্যাসের দাম বাড়ানো বন্ধ রাখেন। গ্যাসের টাকাও লুট হবে। তাই লুটপাট বন্ধ করে দেশের মানুষের দিকে একটু চান।
আওয়ামী লীগের হাতে দেশ নিরাপদ নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, এখনো কক্সবাজারে কোনো রিলিফ যায়নি। এখন পযর্ন্ত কেউ যায়নি তাদের দেখার জন্য, সাহায্য করার জন্য। বিদেশি মিডিয়া বলছে এ কথা। কাজেই আওয়ামী লীগকে যে মিথ্যাবাদী, দুর্নীতিবাজ, অত্যাচারী, খুনি—এটা আজ পরিষ্কার। আওয়ামী লীগের হাতে এ দেশের মানুষের জীবন, সম্পদ, দেশ, কোনোটাই নিরাপদ নয়।
সরকার সবখানেই হাত দিয়েছে অভিযোগ করে খালেদা জিয়া বলেন, বিচার বিভাগের কী দুরাবস্থা, সেটা আমরা প্রধান বিচারপতির বক্তব্যেই বুঝতে পারি। এই সরকারের থাবা এত বেশি যে, সব দিকে তারা হাত দিয়েছে। কোনো জায়গা বাদ রাখেনি।
সব তার (হাসিনা) নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে এবং তিনি আজীবন ক্ষমতায় থাকবেন। এটাই তার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য— বলেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
তিনি বলেন, আদালতে সাধারণ মানুষ আসে ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য। বিচারকরাও ন্যায়বিচার করতে চান। তাদের সুবিচার দিতে চান। কিন্তু প্রধান বিচারপতির বক্তব্য থেকে আমরা বুঝেছি, নিম্ন আদালত পুরোপুরি সরকারের নিয়ন্ত্রণে। সেখানে সরকার যা নির্দেশ দেন, বিচারকদের সেই নির্দেশ মেনে কাজ করতে হয়।
‘যদি বিচারক দেখেন, লোকটা নিরাপরাধ। এর সঙ্গে এ রকম ব্যবহার করা ঠিক হবে না, তিনি যদি তার বিবেক মতো রায় দেন, তাহলে তাকে হয় চাকরিচ্যুত হতে হয়, নইলে দেশ ছাড়া হতে হয়। ’
সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, মীর মোহম্মদ নাসির উদ্দিন, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তৈমুর আলম খন্দকার, অ্যাডভোকেট বোরহান উদ্দিন, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদারসহ শীর্ষ আইনজীবী নেতারা।
সভা পরিচালনা করেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী সমিতির মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট শাখার সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল।
ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীরউত্তম, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০১৭/আপডেট
এজেড/এইচএ/