ঢাকা, বুধবার, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ০৩ জুলাই ২০২৪, ২৫ জিলহজ ১৪৪৫

বিএনপি

পারিবারিক ঐতিহ্যে গানি, সক্রিয় ভূমিকায় সেলিম

আসাদ জামান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২১৬ ঘণ্টা, জুলাই ৮, ২০১৭
পারিবারিক ঐতিহ্যে গানি, সক্রিয় ভূমিকায় সেলিম বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম

ঢাকা: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপির) সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিমের মনোনয়ন প্রায় নিশ্চিত। এ দুই নেতার মনোনয়নের পেছনে বড় দু’টি বিষয় কাজ করছে বলে জানা গেছে।

সূত্রমতে, পারিবারিক ঐতিহ্যে নীলফামারী-১ (ডোমার-ডিমলা) আসনে জেবেল রহমান গানি আর রাজনীতির মাঠে সক্রিয় ভূমিকায় লক্ষ্ণীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসনে মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন শাহাদাত হোসেন সেলিম।
 
১৯৭৯ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে নীলফামারী-১ আসনে সংসদ সদস্য হন গানির দাদা প্রয়াত মশিউর রহমান যাদু মিয়া।

নির্বাচনে বিজয়ের পর জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভায় সিনিয়র মন্ত্রী হন তিনি।
 
ওই বছরই মশিউর রহমান যাদু মিয়ার আকস্মিক মৃত্যুতে উপ-নির্বাচনে সংসদ সদস্য হন গানির বাবা শফিকুল গানি স্বপন। ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হয়ে আবারও নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৮৮ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন গানির ফুপু মনসুরা মহিউদ্দিন।

সংশ্লিষ্টদের মতে, এ আসনে প্রতীক নয়, ভোটাররা বার বার ভোট দিয়েছেন যাদু মিয়া ও তার উত্তরাধিকার স্বপনকে। যাদু মিয়ার উত্তরাধিকাররা যেদিকে গেছেন, জনগণের ভোটও সেদিকে গেছে।

অন্যদিকে ১৯৭৯ সালের পর এ আসনে আর জিততে পারেনি বিএনপি। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে খালেদা জিয়ার ভাগ্নে প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম তুহিন ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করে তৃতীয় হন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তুহিনের বাবা অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম চারদলীয় জোটের প্রার্থী হন। সেবার ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করে মহাজোট মনোনীত জাতীয় পার্টির প্রার্থী জাফর ইকবাল সিদ্দিকীর কাছে পরাজিত হন তিনিও।
 
সূত্রমতে, অতীতের এসব রেকর্ড মাথায় রেখে আগামী নির্বাচনে নীলফামারী-১ আসনে বিএনপির কাউকে আর মনোনয়ন দেওয়ার কথা ভাবছেন না খালেদা জিয়া। যাদু মিয়ার নাতি গানিকেই জোটের প্রার্থী করার কথা ভাবছেন তিনি।
 
জেবেল রহমান গানি বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমার দাদা, বাবা, ফুপু নীলফামারী-১ আসনে যতোবার দাঁড়িয়েছেন, ততোবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। মনোনয়ন পেলে ভোটাররা আমাকে নিরাশ করবেন না বলেই আমার বিশ্বাস’।
 
এদিকে ২০ দলীয় জোটের মাঠের রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালনে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন এলডিপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম। গত কয়েক বছর ধরে সভা, সমাবেশ, সেমিনার, গোলটেবিল আলোচনা, টিভি টক শো’র মাধ্যমে ইর্ষণীয় পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন সাবেক এই ছাত্রদল নেতা।
 
দল ও জোটের জন্য পকেটের টাকা খরচেও পিছপা’ হন না তিনি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের আন্দোলন ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিসহ গত ৫ বছরে ২০ দলীয় জোটের সব ধরনের কর্মসূচিতে সেলিমের ছিল সরব উপস্থিতি। নিজের নির্বাচনী এলাকায়ও (লক্ষ্ণীপুর-১) ব্যাপক জনপ্রিয় তিনি।
 
সর্বশেষ প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনে (নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন) লক্ষ্ণীপুর-১ আসনে চারদলীয় জোট মনোনীত বিএনপির প্রার্থী নাজিম উদ্দিন আহমেদ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সত্তরোর্ধ্ব সাবেক এই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করা, টিআর-কাবিখা’র অর্থ আত্মসাৎ, বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।
 
সূত্রমতে, এসব কারণে আগামী নির্বাচনে নাজিম উদ্দিন আহমেদকে আর বিবেচনায় নিচ্ছেন না খালেদা জিয়া। তার জায়গায় সেলিমকেই মনোনয়ন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
 
খালেদা জিয়ার এমন মনোভাবের কথা জানতে পেরে কোমর বেঁধে মাঠে নেমে পড়েছেন সেলিমও। নিজের নির্বাচনী এলাকায় অব্যাহত গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। সম্প্রতি গণসংযোগের সময় প্রতিপক্ষের হামলারও শিকার হয়েছেন।
 
এই মুহূর্তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত শাহাদাত হোসেন সেলিম ফোনে বাংলানিউজকে বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরে নিরলস পরিশ্রম করছি। জোট নেতা যদি বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আমাকে মনোনয়ন দেন, আমি তার  আস্থার প্রতিদান দিতে চেষ্টা করবো’।

বাংলাদেশ সময়: ০৮১৬ ঘণ্টা, জুলাই ০৮, ২০১৭
এজেড/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।