ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিএনপি

রাজপথে সর‌ব হচ্ছে বিএনপি!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৭
রাজপথে সর‌ব হচ্ছে বিএনপি!

ঢাকা: দীর্ঘ ১৮ মাস পর গত ১২ নভেম্বর বড় কোনো জনসভায় বক্তব্য রেখেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপি আয়োজিত জনসভার ভাষণে তিনি সরকারের বিভন্ন কর্মকাণ্ডের সমালোচনা ছাড়াও নির্বাচনমুখী বক্তব্যও দিয়েছেন। 

এ জনসভার মধ্যদিয়ে নেতাকর্মীদের মনোবল ফিরে এসেছে বলে মনে করেন দলটির শীর্ষ নেতারা। আর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজপথে আবারো সরব হওয়ার চেষ্টা করছে দলটির নেতাকর্মীরা।

কয়েকদিন আগেও বিএনপির কর্মসূচি ছিল বক্তব্য-বিবৃতি নির্ভর। তবে ধীরে ধীরে দৃশ্যপট পাল্টাচ্ছে। বিশেষ করে চেয়ারপারসনের লন্ডন থেকে দেশে ফেরার পর বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে চাঞ্চল্য লক্ষণীয়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এখন থেকেই দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন।
 
গত ১৮ অক্টোবর (বুধবার) খালেদা জিয়া দেশে ফেরার দিন বিমানবন্দর থেকে গুলশান পর্যন্ত নেতাকর্মীরা মানবপ্রাচীর করে অভ্যর্থনা জানায়। বিমানবন্দরে বিপুল সংখ্যক জনসমাগম ঘটিয়েছে আগামী নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। তারই প্রতিফলন দেখা গেছে কক্সবাজ‍ার সফরেও। সেখানেও যারা দলের পক্ষে মনোনয়ন পেতে মুখিয়ে আছেন সেসব নেতাদের ছবি সম্বলিত ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে সড়কের দু’পাশে কর্মীদের অবস্থান দেখা গেছে।
 
কক্সবাজার থেকে ফিরে ১২ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দীতে জনসভা করেছে বিএনপি। জনসভাকে জনগণের আশা আকাঙ্খার প্রতিফলন হিসেবে অবিহিত করেছেন দলটির নেতারা।  

দলীয় চেয়ারপাসনের কক্সবাজার সফর ও ঢাকার জনসভার পর বেশ উজ্জ্বীবি হয়ে উঠেছে দলের নেতাকর্মীরা। আর শীর্ষ থেকে তৃণমূল নেতাকর্মীদের চাঙ্গা রাখতে নতুন করে নানা কর্মসূচি আসতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন একাধিক সিনিয়র নেতা।  
 
মানবিক কারণে কক্সবাজার সফর জানিয়ে সড়ক পথে ঢাকা থেকে ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজার সফর করেছিলেন খালেদা জিয়া। এই সফরকে বিএনপি একান্ত মানবিক সফর বলে আসছিলেন। যদিও এটা মানবিক, তবুও এটা ছিল দলের ক্যাম্পেইন।

একইভাবে নভেম্বরের শেষভাগে রংপুর অঞ্চল এবং ডিসেম্বরে সিলেট অঞ্চলে সফর করার চিন্তাও করা হচ্ছে। বিশেষ করে বন্যা ও পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্তদের দেখতে সড়ক পথে বিএনপির চেয়ারপারসন সিলেট যেতে পারেন বলে দলটির একাধিক সূত্রে জানা গেছে। তবে এ ব্যাপারে এখনো কোনো দলীয় সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।
 
চলতি বছরের এপ্রিলে পাহাড়ি ঢলে সিলেটের সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারে বেশ কিছু এলাক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নষ্ট হয় ঘরবাড়ি ও ফসলের মাঠ। অপরদিকে, বন্যায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় উত্তরাঞ্চলের ১৫টি জেলা। তখন দলের পক্ষ থেকে সিনিয়র নেতারা সহায়তার জন্য সফর করেছিলেন। তবে এই সফরের আগে তিনি বগুড়ায় দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন বলেও জানা গেছে।
 
বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সফরকালে তিনি দলের নেতাকর্মীদের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, রংপুর ও রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে নির্দেশনা দেবেন।
 
১২ নভেম্বরের জনসভায় দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বক্তব্যে আগামী নির্বাচনের ইশতেহার উঠে আসে। সেখানে তিনি স্পষ্টই বলেছেন, দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে তিনি ও তার দল অংশ নিবে না এবং জনগণকে সঙ্গে নিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবি বাস্তবায়ন করবে।
 
চেয়ারপারসনের সফর নিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাজাহান বাংলানিউজকে বলেন, খালেদা জিয়া জনগণকে ভালোবাসেন। তিনি যেহেতু জনগণের নেত্রী সেহেতু জনগণের সুখ-দুঃখে তিনিই পাশে যাবেন। যদি তার শরীর-স্বাস্থ্য ভালো থাকে অবশ্যই বন্যাদুর্গত এলাকায় সফর করবেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে দেখতে যাবেন।
 
তিনি ‍আরও বলেন, খালেদা জিয়া যেহেতু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, তিনি যেখানে সফর করবেন সেটাও রাজনীতির অংশ। আগামী দিনের সব কর্মকাণ্ড দলের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড।  
 
দলের চেয়ারপারসনের সফর নিয়ে রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বাংলানিউজকে বলেন, ম্যাডামের সফর নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে সম্ভাবনা রয়েছে।
 
একই বিষয়ে বিএনপির সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হোসেন জীবন কাছে জানতে চাইলে তিনিও একই কথা বলেন। তিনি জানান, সিদ্ধান্ত হলে আমরা জানাবো।
 
বাংলাদেশ সময়: ০০২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৭
এএম/এসএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।