আগামী নির্বাচনে তাদের অংশ নেওয়া না নেওয়ার প্রসঙ্গ এখন তাই সব পর্যায়েই মুখ্য আলোচনার বিষয়। এমনকি দলীয় নেতাকর্মীরাও এখন নির্বাচন মুখী।
নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বছরের পর বছর সংসদের বাইরে থেকে আন্দোলন জমিয়ে সরকারকে ক্ষমতা থেকে টেনে নামানো যে খর্ব শক্তির বিএনপির পক্ষে সম্ভব নয়, সেটা এখন সবপক্ষই বেশ ভালোভাবে বুঝে গেছে।
বিএনপির সিনিয়র নেতা, এমনকি দলীয় প্রধান খালেদা জিয়াও বিষয়টি উপলব্ধি করছেন হাড়ে হাড়ে। তাই বেশ কিছুদিন ধরে আর সরকার পতনের ডাক দিচ্ছেন না তিনি।
প্রতি ঈদের আগে আগে ঈদের পর সরকার পতনের আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে অনেকটা রাজনৈতিক ভাঁড়ে পরিণত হওয়া খালেদা জিয়া গত কয়েক ঈদের আগে আন্দোলনের নামও মুখে নেননি।
অসহযোগ ব্যর্থ হওয়ার পর থেকে কার্যত আর আন্দোলনের পথই মাড়াচ্ছেন না সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নেওয়া যে ভুল ছিলো তা প্রকাশ্যে স্বীকার না করলেও বিএনপির পরবর্তী রাজনৈতিক কর্মসূচি নির্বাচনমুখীই ছিলো। ইউনিয়ন, পৌরসভা আর সিটি করপোরেশনসহ স্থানীয় সরকারের সব পর্যায়ের নির্বাচনে বেশ স্বতঃস্ফূর্ত হয়েই অংশ নিয়েছে তারা। সর্বশেষ রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও বিএনপি প্রার্থীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দেখা গেছে।
রাজনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষকে নামতেই হবে ভোটের মাঠে। সাংগঠনিক অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে এছাড়া বিএনপির কোনো গত্যন্তর নেই।
তাই যে বিএনপিকে অনেক কাঠখড় পুড়িয়েও নির্বাচনে নামানো যায়নি, তারাই এখন মুখিয়ে আছে ভোটের জন্য। এখন আর চেষ্টা করেও তাদের নির্বাচন থেকে সরিয়ে রাখা সম্ভব নয়।
বিষয়টি বুঝতে পেরেই সাম্প্রতিক কম্বোডিয়া সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপিকে এবার নাকে খৎ দিয়ে নির্বাচনে আসতে হবে। দলটির নেতাকর্মীরাও এখন আর নির্বাচন ছাড়া অন্য কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচির কথা ভাবছেন না বলে আলোচনা চলছে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে।
নির্বাচন প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. এমাজউদ্দীন আহমদ বাংলানিউজকে বলেন, বিএনপি দীর্ঘ ৯ বছর ক্ষমতার বাইরে আছে। সুতরাং ক্ষমতায় না যেতে পারলে কর্মী বা তৃণমূল পর্যায়ের নেতাদের ধরে রাখা শক্ত হবে। এজন্যই ‘ডু হ্যাভ টু সামথিং’ -কিছু একটা করতেই হবে। এই নির্বাচনে অংশ না নিলে বিএনপির ক্ষতি হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৭
জেডএম/