এরই মধ্যে গত ২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বড় ধরনের পরাজয় হয়েছে দলটির। এর পেছনে জোটের মধ্যে সমন্বয়হীনতাকে দায়ী করছেন অনেকে।
নেতারা বলছেন, যেখানে বিএনপি ছাড়াও জামায়াতে ইসলামির ৫০ হাজারেরও বেশি ভোট আছে, ইসলামী ঐক্যজোট যেখানে এর আগে ২৪ হাজারেও বেশি ভোট পেয়েছে, সেখানে এ ধরনের পরাজয় খুবই হতাশাজনক। এজন্য দায়ী ২০ দলীয় জোটের সমন্বয়হীনতা।
রসিক নির্বাচনের পরাজয় থেকে শিক্ষা নিতে চায় দলটি। যাতে করে ডিএনসিসিসহ সকল নির্বাচনে হোঁচট খেতে না হয়।
দলের সিনিয়র পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইতোমধ্যে ডিএনসিসি উপ-নির্বাচন এবং প্রার্থী নিয়ে আলাপ আলোচনা শুরু হয়েছে দলীয় ফোরামে।
এর আগে জাতীয় স্থায়ী কমিটির মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয় যে, নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করলে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের উপ-নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে।
আসন্ন ডিএনসিসি উপ-নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের প্রক্রিয়া চলছে। সেখানে সর্বমহলে আলোচিত হচ্ছে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়ালের নাম।
বিগত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আনিসুল হকের কাছে হেরেছিলেন তিনি। সে হিসেবে দলটির শীর্ষ পর্যায়ে বারবার তার নামটিই আসছে।
এছাড়াও মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। তাদের মধ্যে শোনা যাচ্ছে মহানগর উত্তর বিএনপি সভাপতি এম এ কাইয়ুম, দলের কেন্দ্রীয় সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, বিজেপি চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ, বিএনপির বিশেষ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপনের নাম। তবে তাবিথ আউয়ালকে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়ার সম্ভাবনা বেশি বলে বিএনপি সূত্রে জানা গেছে।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে দুই বছর দায়িত্ব পালন করেন মেয়র আনিসুল হক। বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) লন্ডনের ওয়েলিংটন হাসপাতালে বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা ২৩ মিনিটে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। ১ ডিসেম্বর থেকে ডিএনসিসির মেয়রের পদ শূন্য ঘোষণা করে ৪ ডিসেম্বর গেজেট প্রকাশ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। মেয়র পদ শূন্য ঘোষণা করায় ২৮ ফ্রেব্রুয়ারির মধ্যে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বড় পরাজয়ের পর কুমিল্লা সিটির জয় অনেকটা আশা জাগিয়েছিল দীর্ঘদিন আন্দোলন সংগ্রাম থেকে পিছিয়ে পড়া দলটিকে। কিন্তু রসিক নির্বাচনে পরাজয়ে অনেকটাই হতাশ দলটির তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
বর্তমান অবস্থানে দাঁড়িয়ে ডিএনসিসির উপ-নির্বাচন একটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। এই নির্বাচনের জয় পরাজয় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছে তারা। উপরন্তু দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের ধরে রাখতে হলেও নির্বাচনে জিততেই হবে বলে মনে করছেন দলের শীর্ষনেতারা।
সম্প্রতি, বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন শেষে ডিএনসিসির নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন করা হলে দলের মহাসচিব বলেন, এখনো সে সময় আসেনি। সময়মত আপনাদের জানানো হবে।
ডিএনসিসি উপ-নির্বাচন নিয়ে জানতে চাইলে দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের প্রত্যাশা সুষ্ঠুভাবে, সকলের অংশগ্রহণে, উৎসবমুখর পরিবেশে যেন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে।
দলের আরেক ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ব্যাপারে আলোচনা চলছে। দল ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নেবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দলের যুগ্মমহাসচিব হাবিব উন নবী সোহেল বাংলানিউজকে বলেন, উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে। আশা করছি দল জয়লাভ করবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫
এএম/জেডএম