ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপি

ন্যায়বিচার চান খালেদা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০১৮
ন্যায়বিচার চান খালেদা আদালতে হাজিরা দিতে যাওয়ার সময় খালেদা জিয়া। ছবি: শাকিল/বাংলানিউজ

ঢাকা: দুর্নীতির দুই মামলায় আদালতে হাজিরা দিয়ে নবম দিনের মতো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। পরে আদালত ১৬, ১৭ ও ১৮ জানুয়ারি পরবর্তী যুক্তিতর্কের দিন ধার্য করেন।

বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) রাজধানীর বকশীবাজারের কারা অধিদফতরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত আদালতে ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামান এ আদেশ দেন।  

এর আগে সকাল সোয়া ১১টায় আদালতে হাজির হন খালেদা জিয়া।

পরে সাড়ে ১১ টায় আদালতের কার্যক্রম শুরু করেন বিচারক। এ সময় খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বুধবারের (১০ জানুয়ারি) অসম্পূর্ণ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। খালেদা জিয়ার পক্ষে তিনিই লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।

** খালেদার পরবর্তী যুক্তিতর্ক উপস্থাপন ১৬-১৮ জানুয়ারি 

ব্যারিস্টার জমির উদ্দিনের পাঠ করা লিখিত বক্তব্যে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমি নিজেকে আইন ও বিচারের ঊর্ধ্বে মনে করি না। আমার মনে হয় শেখ হাসিনার হাতে জাদুর লাঠি আছে। যার কারণে, তার বিরুদ্ধে দেওয়া দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির মামলাগুলো উঠে গেলো এবং খারিজ হয়ে গেলো। আমার হাতে তেমন কোনো জাদুর কাঠি নেই। ’
 
‘এই মামলাগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রণোদিত এবং হয়রানিমূলক। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে আমার নামে অসত্য ও মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।  এই মামলার সঙ্গে আমার দূরতম কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। আমাকে এবং আমার পরিবারকে বিএনপি এবং রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে এই মামলা করা হয়েছে। ‘

তিনি বলেন, ‘বর্তমান প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সরকারের শীর্ষস্থানীয় মন্ত্রীরা আমাকে দোষ দিয়ে আসছেন। অথচ এই মামলা এখনও চলমান। আশা করছি আমার প্রতি ন্যায়বিচার করা হবে। ’
 
‘মামলায় দণ্ডবিধি ৪০৯ (আত্মসাৎ)  ১০৯ (প্ররোচনা) এবং দুর্নীতির ৫ এর ২ ধারায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধ অভিযোগ আনা হয়েছে। সংবিধানের ৫৫ ও ৫৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তিনি যেহেতু সাবেক প্রধানমন্ত্রী, সেহেতু পাবলিক সার্ভেন্টের আওতাভুক্ত নন। সুতরাং তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ আনা যাবে না,’  আদালতকে বলেন জমির উদ্দিন সরকার।
 
চতুর্থ আইনজীবী হিসেবে ব্যারিস্টার জমির উদ্দিনের লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন শেষ হলে ১৫ মিনিটের বিরতি দেন আদালত। বিরতির পর ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ পঞ্চম আইনজীবী হিসেবে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করেন।
 
মওদুদ বলেন,  একজন দেশ বরেণ্য নেত্রীকে এখানে এসে দাঁড়াতে হচ্ছে বিচারের প্রার্থী হয়ে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। এটা মিডিয়া ট্রায়াল হচ্ছে, পাবলিক ট্রায়াল নয়। আদালতে আইনজীবীদের পর্যন্ত আসতে দেওয়া হয় না।  জনসাধারণ তো দূরের কথা।  

‘আইনে স্পিডি ও পাবলিক ট্রয়ালের কথা উল্লেখ আছে। এখানে স্পিডি হচ্ছে কিন্তু পাবলিক ট্রায়াল হচ্ছে না। ’

১৪টি মামলা বিশেষ জজ আদালতে স্থানান্তরকে সরকারের দুরভিসন্ধিমূলক আচরণ উল্লেখ করে মওদুদ আহমদ বলেন, এটা কোনো ক্রিমিনাল কেস নয়, এটা রাজনৈতিক উদ্যেশ্য প্রণোদিতভাবে দেওয়া মামলা।  এটা সরকারের দুরভিসন্ধিমূলক আচরণ। ক্যামেরা ট্রায়াল করতেই আরও ১৪ টি মামলা এখানে দেওয়া হয়েছে।  

‘স্বামী বা পিতার নামে ট্রাস্টের টাকা কেউ আত্মসাৎ করে এটা কেউ ভাবতেও পারে না’ দাবি করে তিনি বলেন,  আত্মসাৎ তো দূরের কথা,  ২ কোটি টাকা এখন বেড়ে ৬ কোটি বা তারও বেশি হয়েছে। সুতরাং 
এটা একটি জালিয়াতি মামলা।  

তিনি বলেন, কুয়েতের আমিরের সঙ্গে জিয়াউর রহমানের বন্ধুত্ব হয়েছিল। যার প্রেক্ষিতে তিনি জিয়ার সম্মানে এই টাকা পাঠিয়েছিলেন। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কাছে তো সেই টাকা আসেনি।  

‘প্রধানমন্ত্রীর দফতরে এতিম ফান্ড কখনও ছিল না। সেখানে টাকা আসার প্রশ্নও আসে না। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হারন অর রশিদ তিনি যে দফতরে কাজ করতেন সেখানে প্রধানমন্ত্রী দফতরের কোনো কাগজ যাওয়া সম্ভব না। ’ 

ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করতে এই মিথ্যা মামলা করা হয়েছে।  

এরপর বিকেল সাড়ে তিনটায় খালেদার এই আইনজীবী পরবর্তী সময় পর্যন্ত মুলতবির আবেদন জানান। আদালত আগামী ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত মুলতবি ঘোষণা করেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০১৮
এএম/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।