ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপি

বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রাখতে ষড়যন্ত্র করছে সরকার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১২ ঘণ্টা, মার্চ ৬, ২০১৮
বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রাখতে ষড়যন্ত্র করছে সরকার মানববন্ধন কর্মসূচিতে বিএনপির নেতারা/ ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনের বাইরে রাখতে সরকার ষড়যন্ত্র করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মঙ্গলবার (৬ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে এ মন্তব্য করেন তিনি।  

মির্জা ফখরুল বলেন, সম্পূর্ণ চক্রান্ত করে মিথ্যা মামলায় খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠিয়েছে সরকার।

এখন ছলচাতুরির মাধ্যমে তার মুক্তিকে বিলম্বিত করছে। তাকে কারাগারে রেখে একদলীয় নির্বাচন করতে চায়। আমরা বলেছি, খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। সংসদ ভেঙ্গে দিতে হবে, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। সেই নির্বাচনে দেশনেত্রীকে নিয়ে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে, সকল রাজনৈতিক দলও অংশগ্রহণ করবে।

বিএনপি মহাসচিব আরো বলেন, খালেদা জিয়া দেশের মানুষের গণতন্ত্র ও কথা বলার অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার আন্দোলন করছেন। আর সে জন্য তাকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছে। অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। সংসদ ভেঙে গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সকল দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন দিতে হবে।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির মানববন্ধন কর্মসূচি/ ছবি: ডিএইচ বাদল
ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের ওপর হামলার ঘটনায় বিএনপিকে জড়িয়ে সরকারের মন্ত্রীদের দেয়া বক্তব্যের পেক্ষিতে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে কোনকিছু ঘটলেই তদন্ত না করে বিএনপির ওপর দোষারোপ করা হয়। অথচ প্রতিটি হত্যার ঘটনায় একের পর এক আওয়ামী লীগ ও তাদের নেতা-কর্মীদের নাম আসে। তাহলে কি আওয়ামী লীগ ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে দেশকে একটা অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়? জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়?
 
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, খালেদা জিয়াকে একটি জালিয়াতির কাগজ দিয়ে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে রাখা হয়েছে। তাকে একটি পরিত্যাক্ত কারাগারে রেখে তিনদিন পর্যন্ত ডিভিশন দেয়া হয়নি। এর মাধ্যমে সরকার চেয়েছে তার মনোবল দুর্বল করতে। এখন তার জামিন দিতেও গড়িমসি করছে।

তিনি বলেন, সরকার ইচ্ছে করেই খালেদা জিয়ার কারাবাস দীর্ঘ করতে চায়। যাতে তারা নিজেদের অধীনে একদলীয় নির্বাচন করে আবারও ক্ষমতায় আসতে পারে। কিন্তু আমরা সরকারকে বলতে চাই, আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে বাধ্য করব।

খন্দকার মোশাররফ হোসেন আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, আপনারা চান খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচন করতে কিন্তু আপনাদের সে স্বপ্ন কখনও পূরণ হবে না। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আদায় করে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করব।

মানববন্ধনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, আপানরা যত ষড়যন্ত্র করেন না কেন খালেদা জিয়া আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন। আমরা নেত্রীর নির্দেশে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। আর এ শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে।

স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, খালেদা জিয়া ও বিএনপিকে বাইরে রেখে আবারো একটা পাতানো নির্বাচনের পায়তারা করছে সরকার। মনে রাখবেন বেশি লোভ করবেন না। লোভে পাপ পাপে মৃত্যু! পাকিস্তানিরাও নির্যাতন করেছিলো তারাও টিকতে পারেনি।

তিনি বলেন, আজ খালেদা জিয়াকে নয়, দেশের গণতন্ত্রকে বন্দি করেছেন। আপনারা চাইছেন খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে আবারও একক নির্বাচন করতে। কিন্তু আপনাদের সে স্বপ্ন পূরণ হবে না। অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে নইলে মুক্তির ব্যবস্থা আমরা করবো।

মানববন্ধনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, নির্বাচন নামে প্রহসন করে ক্ষমতায় আসা সরকার খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে। তারা খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে হেয় প্রতিপন্ন করতে চেয়েছিল। কিন্তু তাদের সে আশা দেশের জনগণ শেষ করে খালেদা জিয়াকে দেশমাতায় পরিণত করেছে। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো।  

দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে মানববন্ধন কর্মসূচিতে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, বরকত উল্লাহ বুলু, ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমান খান, চৌধুরী কামাল উদ্দিন ইউসুফ, ডা. এ জেড এম জাহিদ, যুগ্ম মহাসচিব জয়নুল আবদিন ফারুক, খায়রুল কবির খোকন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বজলুল বাসিত আনজু, ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার প্রমুখ।

মানবন্ধন কর্মসূচিতে বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনসহ ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা অংশগ্রহণ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৪ ঘণ্টা, মার্চ ০৬, ২০১৮
এএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।