নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা না হলে ২০১৪ সালের মতো কোনো নির্বাচন দেশের মানুষ মেনে নেবে না।
বৃহস্পতিবার (৩ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় বক্তৃতা করছিলেন বিএনপি মহাসচিব।
এর জবাবে ফখরুল বলেন, আপনিতো এমনিতেই সব জেলে ঢুকিয়ে দিচ্ছেন। নির্বাচনতো দরকার নেই। নির্বাচন করা না করাতো পরের ব্যাপার, তার আগেইতো সব জেলে দিচ্ছেন।
‘কাল (বুধবার, ২ মে) রাতেও খুলনায় ১৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, আজ সারা শহরে পুলিশ দিয়ে দিয়েছে, খুলনার বাইরের কোনেও লোক গেলে তাকে ধরা হবে। এটা নির্বাচনের কোন আইনে আছে? এমন একটা মেরুদণ্ডবিহীন কমিশন তৈরি করেছে, আমি যখন তাদের ফোন করি, তারা বলে যে, আমাদের সব ঠিক আছে। আমি প্রশ্ন করি, কী ঠিক আছেন? নির্বাচনের বিধির মধ্যে কোথায় আছে যে বাইরে থেকে এলে তাকে গ্রেফতার করতে পারবেন। হ্যাঁ আছে ২৪ ঘণ্টা বা ৪৮ ঘণ্টা আগে বাইরের কোনেও লোক প্রচার করতে যেতে পারবে না। ’
বিএনপি এবং দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, ষড়যন্ত্র আজকে থেকে শুরু হয়নি। ২০০১ সালে যখন বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসলো, তখন থেকেই শুরু হয়েছে। ৯/১১’র পর অরবিন্দ আধিকারী নামে একজন সাংবাদিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে একটি আর্টিকেল লিখলেন যে বাংলাদেশ জঙ্গি রাষ্ট্র হতে চলেছে। এ ধরনের একটি আর্টিকেল দেখে বাংলাদেশের দু’টি গ্রহণযোগ্য পত্রিকাও লিখলো বাংলাদেশ একটি অকার্যকর রাষ্ট্র হতে চলেছে। আমরা সংসদে দাঁড়িয়ে এ কথাগুলো তখন বলেছিলাম যে অশনি সংকেত দেখা যাচ্ছে। যেহেতু জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকার আসার পরপরই এ কথাগুলো সামনে নিয়ে আসা হয়েছিল। তারপর বাংলাদেশে একের পর এক ঘটনা ঘটে চলেছে। তখন বৈধ একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে হটিয়ে একটি অবৈধ সরকার ক্ষমতা দখল করেছিল।
আওয়ামী লীগকে সেই ১/১১ সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে অভিযুক্ত করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তখন তারা পরিষ্কার করে বলেছিলেন, ওই সরকার তাদের আন্দোলনের ফসল। সেজন্য পরে তাদের বিরুদ্ধে কোনেও ব্যবস্থা নেননি। যারা জোর করে ক্ষমতা দখল করলো, আপনাকে (শেখ হাসিনা) জেলে পাঠালো, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা তো নেননি, বরং ঘোষণা দিয়ে তাদের সব কর্মকাণ্ডকে বৈধতা দিয়েছেন।
সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, কথায় কথায় সংবিধানের কথা বলেন, কোন সংবিধান? নিজেদের তৈরি সংবিধান? যাকে আপনারা কেটে-কুটে শেষ করে দিয়েছেন। ওই সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হতে হবে? আমরা বলছি না যে আমরা যা বলছি তাই করতে হবে। বসেন, কথা বলেন, যে সমস্যা আছে তা সমাধান করেন। সমাধান করে তারপরে নির্বাচনে যান। কিছুই না করে নির্বাচন করতে চাইছেন। তাতে যা হবার তাই হবে। কিন্তু এবার এ ধরনের নির্বাচন দেশের মানুষ মেনে নেবে না। কতজনকে মারবেন, কতজনকে গুম করবেন, কতজনকে জেলে দেবেন? দিতে পারেন, কিন্তু ওই ধরনের নির্বাচন মেনে নেবে না।
বিএফইউজের (একাংশের) সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, দৈনিক আমার দেশ’র ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, বিএফইউজের মহাসচিব এম আব্দুল্লাহ, ডিইউজের একাংশের সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, প্রেস ক্লাবের যুগ্ম-সম্পাদক ইলিয়াস খান প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪২ ঘণ্টা, মে ০৩, ২০১৮
এমএইচ/এইচএ/