বুধবার (১৩ জুন) রাজধানীর মালিবাগ চৌধুরীপাড়ায় নিজ বাসভবনে এক ব্রিফিংয়ে তিনি সরকারের কাছে এ দাবি জানান।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতাল অথবা ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের সিএমএইচ-এ চিকিৎসার জন্য সরকার খালেদা জিয়ার সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছে।
খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘খালেদা জিয়া আজ চার মাসের উপরে কারারুদ্ধ অবস্থায় আছেন। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে। তার সুচিকিৎসার প্রয়োজন। তিনি একজন বয়স্ক মহিলা এবং বিভিন্ন রোগ তার আছে। দীর্ঘ কারাবাসের ফলে তার এই রোগগুলো আরও জটিল আকারে দেখা দিয়েছে। ফলে তার জীবন আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে। ’
‘আমি মনে করি রাজনীতির ঊর্ধ্বে থেকে মানবিক বিবেচনায় তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা উচিত। তিনি কয়েকটি মামলায় জড়িত হয়েছেন। দুটি মামলায় হাইকোর্ট তাকে জামিন দিয়েছেন। সরকার পক্ষ থেকে আপিল করার ফলে আপিল বিভাগ সে জামিন স্থগিত করে ২৪ জুন তারিখ রেখেছেন। ’
তিনি বলেন, নিম্ন আদালতেও তার কয়েকটি মামলা আছে। এ অবস্থায় আইনি প্রক্রিয়ায় তাকে বের কতে হলে সময়ের প্রয়োজন হবে।
‘সে কারণে আমি মনে করি, আমরা সেনা সমর্থিত সরকারের আমলে দেখেছি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্যারোলে মুক্তি দিয়ে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বেসরকারি হাসপাতাল স্কয়ারে তার চিকিৎসা হয়েছিল। একসময় তাকে বিদেশে চিকিৎসারও সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। ’
খালেদা জিয়ার এই আইনজীবী বলেন, খালেদা জিয়া ২০ দলের নেত্রী। আমরা বলতে চাই দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী। সবকিছু বাদ দিয়েও তার জীবন রক্ষার জন্য অবিলম্বে তার চিকিৎসার প্রয়োজন এবং চিকিৎসার প্রয়োজেনই তাকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প পন্থা নাই।
‘কেননা তিনি বিভিন্ন মামলায় কারারুদ্ধ অবস্থায় আছেন, জামিন পেতে সময় নিবে, আপিল বিভাগ বন্ধ রয়েছে। নিম্ন আদালতও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাই আমার আবেদন- রাজনীতির ঊর্ধ্বে থেকে মানবিক কারণে যদি তাকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হলে তিনি তার নিজ ইচ্ছায় এবং তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে পারবেন। সেক্ষেত্রে সরকারেরও কোনো দায়-দায়িত্ব থাকবে না। ইতোপূর্বে যেটির নজির রয়েছে। ’
খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, আমার সৌভাগ্য হয়েছে কয়েকবার তার সঙ্গে জেলখানায় দেখা করার। যেকোনো সুস্থ লোকও সেখনে অসুস্থ হয়ে পড়বে। তাই আমার শেষ আবেদন, আবারও বলছি, আদালত বন্ধ রয়েছে, তাকে সহজে মুক্ত করা আমাদের পক্ষে অসুবিধা আছে। তাই তাকে প্যারোলে মুক্তি দিয়ে তার জীবন রক্ষা করা হোক। তার সুচিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হোক।
প্যারোলে মুক্তির জন্য আবেদন করবেন কি-না? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সেটা তো তাদের ব্যাপার। সেটা তো সরকারের দায়িত্ব রয়েছ। সরকার তো সেটা বলছে না। সরকার যদি বলে অবশ্যই করা হবে। তখন রাজনীতিক যারা আছেন, নীতি-নির্ধারকরা সে অনুযায়ী হয়তো ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। তার আইনজীবী হিসেবে এবং একজন আইনজ্ঞ হিসেবে প্যারোলে মুক্তি ছাড়া আইনি প্রক্রিয়ায় দ্রুত বের করা সম্ভব না। কেউ মনে করে যে, সরকার ইচ্ছা করলেই তাকে ছেড়ে দিতে পারেন। আইনি প্রক্রিয়া ছাড়া সরকারের পক্ষেও তাকে এখন ছেড়ে দেওয়া সম্ভব নয়।
‘শেখ হাসিনাকে যখন প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল তখন সরকারই তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছিল। কিন্তু আজকে সরকার অনীহা প্রকাশ করছে যে, তাকে কোনো বেসরকারি হসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হবে না। জেল কোড অনুযায়ী বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বাঁধা আছে বলে আমি মনে করি না। কারণ যেখানে তাকে রাখা হবে সেখানে পুলিশ প্রোটেকশন থাকবে। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৯ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৮/আপডেট: ১০২৬ ঘণ্টা
ইএস/এমএ