এবার রোজার ঈদ কাটছে নজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে। ৭৩ বছর বয়সী খালেদা দুর্নীতির মামলায় দণ্ড পেয়ে চার মাসেরও বেশি সময় ধরে পুরান ঢাকার ওই কারাগারে আছেন।
২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ভোরে খালেদাকে ক্যান্টনমেন্টের মইনুল রোডের বাসভবন থেকে গ্রেফতারের পর সোজা নিয়ে যাওয়া হয় সিএমএম আদালতে। সেখানে তার জামিন নামঞ্জুর হলে তাকে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় স্থাপিত সাব জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই কারাগারে ৩৭২ দিন কাটানোর পর ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তিনি মুক্তি পান।
ওইসময় সময় ২০০৭ সালের ১৪ অক্টোবর প্রথম কারাগারে পালিত হয় তার রোজার ঈদ। কিন্তু ওইদিন তার ছেলে তারেক রহমান ও আরাফাত রহমানের স্ত্রী ও তাদের সন্তানেরা দেখা করতে পারলেও এবার সেটা হচ্ছে না। কারণ তারেক রহমান এবং তার দুই ছেলের তিন সন্তান এখন লন্ডনে অবস্থান করছেন। আর আরাফত রহমান কোকো দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন।
এরপর ২০০৭ সালের ২১ ডিসেম্বর কোরবানির ঈদও ওই সাব জেলেই পালন করেন তিনি। তবে এবারই প্রথম সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে ঈদ পালন করছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
জানতে চাইলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বাংলানিউজকে বলেন, কারাগারে এটাই চেয়ারপারসনের প্রথম ঈদ নয়। এর আগেও তিনি সংসদ ভবন এলাকার সাব জেলে দু’টি ঈদ পালন করেছেন। ওইসময় তার পরিবারের সদস্যরা ঈদের দিন তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন।
চেয়ারপারসনের প্রেস উইং’র কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান বাংলানিউজকে বলেন, ঈদের দিন পরিবারের সদস্যরা কারাগারে দেখা করতে যাবেন। এছাড়া বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সিনিয়র নেতারা ঈদের নামাজের পর কারাগারে চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করতে যাবেন।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা ঈদের দিন চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করার জন্য আবেদন করেছি। অনুমতি পেলে সাক্ষাৎ করবো।
এদিকে, বিএনপির বেশ কিছু নেতাকর্মীর ঈদ এবারও কাটবে কারাগারে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশে তাদের অন্তত তিন হাজার নেতাকর্মীর ঈদ হবে কারাগারে।
বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু বাংলানিউজকে বলেন, গড়ে ২/৩ হাজার নেতাকর্মী সব সময়ই কারাগারে থাকেন। এবারের ঈদেও তার ব্যতিক্রম হবে না।
সিনিয়রদের মধ্যে কারাগারে ঈদ করবেন এমন নেতাদের নাম জানতে চাইলে তাইফুল ইসলাম বলেন, ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আছেন।
এছাড়া যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আজিজুল বারী হেলাল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাইফুল ইসলাম পটু, অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম কারাগারে আছেন।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি নাজমুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, তাদের বর্তমান কমিটির সভাপতি রাজিব আহসান, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমান রাজ, মহানগর পূর্বের সভাপতি খন্দকার এনামুল হক, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মামুন খান কারাগারে রয়েছেন। এবার তাদের ঈদ কারাগারেই কাটবে।
এছাড়া বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের এবারের ঈদ কারাগারে কাটছে। তিনি গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে আছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫১ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০১৮
এমএইচ/টিএ