আসনগুলোতে রাজনৈতিক দলের একাধিক প্রার্থী থাকায় অনেকটা বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন নেতাকর্মী সমর্থক ও ভোটাররা। প্রার্থীরাও মনোনয়ন পাওয়ার খবর এলাকায় ছড়িয়ে দিয়ে কৌশলে চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচারণা।
অবশ্য নেতাকর্মীদের দাবি- কৌশলগত কারণে বিএনপি আসন প্রতি একাধিক প্রার্থী দিলেও বাছাই শেষে দলের সিদ্ধান্তে মনোনয়ন চূড়ান্ত হবে।
এ ব্যাপারে সিলেট জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আহাদ খান জামাল বাংলানিউজকে বলেন, আপাত দৃষ্টিতে বিএনপির নেতাকর্মী ও ভোটাররা বিভ্রান্ত হলেও বাছাইয়ের পর তা স্পষ্ট হয়ে যাবে। কেননা, এই নির্বাচন ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই। সরকার চাইবে, বাছাইয়ে বিএনপির জনপ্রিয় প্রার্থীদের বাদ দিতে। তাই কৌশলী ভূমিকা হিসেবে প্রতিটি আসনে একাধিক প্রার্থী দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৭ নভেম্বর) সিলেট-১ আসনে বিএনপির দুই নেতাকে প্রার্থী হিসেবে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ইনাম আহমদ চৌধুরী ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির।
একইভাবে সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা-বালাগঞ্জ-ফেঞ্চুগঞ্জ) আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য শফি আহমদ চৌধুরী ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এ সালাম মনোনয়ন পেয়েছেন বলে জানিয়েছে দলীয় সূত্র।
সিলেট-৪ আসনে দলের কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক দিলদার হোসেন সেলিম ও কেন্দ্রীয় সহ স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামসুজ্জামানকে প্রার্থী হিসেবে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বুধবার এসব নেতাদের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার কথা।
আর সিলেট-৫ আসনে আওয়ামী লীগ সাবেক সংসদ সদস্য হাফিজ আহমদ মজুমদারকে মনোনয়ন দিয়েছে। কিন্তু আসনটিতে মহাজোটের ব্যানারে থাকা বর্তমান সংসদ সদস্য ও বিরোধী দলীয় হুইপ সেলিম উদ্দিন জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন। এ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মামুনুর রশিদ মামুনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে দাবি করলেও শরীকদল জামায়াতের ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী স্বতন্ত্র হিসেবে মাঠে রয়েছেন।
সিলেটে ধানের শীষ প্রতীকে একক প্রার্থী হিসেবে এরই মধ্যে মনোনয়ন পেয়েছেন সিলেট-২ আসনে তাহসিনা রুশদীর লুনা, সিলেট-৩ আসনে শফি আহমদ চৌধুরী, সিলেট-৫ আসনে মামুনুর রশীদ।
সুনামগঞ্জ-১ আসনে সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নজির হোসেন, জেলার সহ-সভাপতি আনিসুল হক ও জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক তাহিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল।
সুনামগঞ্জ-২ আসনে সাবেক সংসদ সদস্য নাছির উদ্দিন চৌধুরী ও যুক্তরাজ্য বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তাহির রায়হান চৌধুরী পাভেলকে প্রার্থী হিসেবে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
সুনামগঞ্জ-৪ আসনে সাবেক হুইপ ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুল হক আসপিয়া ও জেলা বিএনপি সিনিয়র সহ সভাপতি ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান দেওয়ান জয়নুল জাকেরীন চিঠি পেয়েছেন।
সুনামগঞ্জ-৫ আসনে কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা সভাপতি কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন এবং কেন্দ্রীয় সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরীকে দলীয় মনোনয়নের চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া সুনামগঞ্জ-৩ আসনে ঐক্যফ্রন্ট থেকে সাবেক যুবলীগ নেতা নজরুল ইসলাম চিঠি পেয়েছেন বলে গুঞ্জন রয়েছেন এলাকায়। তবে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য শাহীনুর পাশাকে দেওয়া হতে পারে, বলে জানিয়েছে দলীয় সূত্র।
মৌলভীবাজার-১ আসনে সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট এবাদুর রহমান চৌধুরী ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন আহমদকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া মৌলভীবাজার-২ আসনে ঐক্যফ্রন্ট থেকে ধানের শীষের প্রার্থী সুলতান মোহাম্মদ মনসুর। মৌলভীবাজার-৩ আসনে নাসের রহমান এবং মৌলভীবাজার-৪ আসনে বিএনপি নেতা হাজি মুজিব দলের মনোনয়ন পেয়েছেন বলে জানা গেছে।
হবিগঞ্জ-১ আসনে শাহ নেওয়াজ (মিলাদ গাজী) নৌকার টিকিট পেলেও জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে আছেন প্রেসিডিয়াম সদস্য আরিকুর রহমান আতিক। এ আসনে বিএনপির একক প্রার্থী শেখ সুজাত আলী।
হবিগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির টিকিটে আছেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. শাখাওয়াত হাসান জীবন।
হবিগঞ্জ-৩ বিএনপির জিকে গউছ ও জেলার যুগ্ম সম্পাদক ডা. আহমুদুর রহমান আবদাল, সাংগঠনিক এনামুল হক সেলিম প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন। হবিগঞ্জ-৪ বিএনপির সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়ছল প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৯২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৮
এনইউ/আরএ