শুক্রবার (২৮ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান ও স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান এসব কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, নির্বাচনে শান্তি-শৃঙ্খলা নিশ্চিত করে ভোটারদের নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে আসা ও নির্ভয়ে ভোট দেওয়ার সুযোগ নিশ্চিত করার জন্যই আমরা সশস্ত্র বাহিনীকে নিয়োগের দাবি জানিয়ে ছিলাম।
ভোটের দিন জনগণকে সজাগ দৃষ্টি রাখার অনুরোধ জানিয়ে বিএনপির এ নেতা বলেন, আমরা আশা করি জনগণ সজাগ দৃষ্টি রাখবে, যাতে ভোটের আগের রাতে কেউ বাক্স ভর্তি করতে না পারেন। যাতে কেউ জাল ভোট না দিতে পারে। যাতে ভোটারদের সন্ত্রস্ত ও ভোট দেওয়ায় বিলম্বিত করতে না পারে। আমরা মনে করি, এটা জনগণের দায়িত্ব। একইসঙ্গে আমাদের দলীয় যারা আছেন সাহসিকতার সঙ্গে এ নির্বাচনী লড়াই অংশ নেওয়ার অনুরোধ করছি।
তিনি বলেন, নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু হবে, এটা সবার কাম্য থাকলেও বাস্তবতা ভিন্ন। প্রতিদ্বন্দ্বিতার এ মাঠ কোনোভাবেই সমতল বলা যায় না। অসমত এ মাঠে নির্বাচনে রাজি হয়েছি। নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যে আলোচনা হয়েছিল তখন প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, নির্বাচনে সরকার কোনো রকমের হস্তক্ষেপ করবে না। কিন্তু আমরা দেখলাম প্রতিনিয়ত তারা হস্তক্ষেপ করছেন। নির্বাচন কমিশন যথাযথ দায়িত্ব পালন না করে সরকারের অনুগত হিসেবে কাজ করছে। এমন পরিস্থিতিতে আমরা যখন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সিদ্ধান্ত নিলাম, তখন থেকেই আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক বৈধ হওয়া প্রায় ১৬জন প্রার্থীকে আদালত অবৈধ ঘোষণা করেছে। যে কারণে অবৈধ ঘোষণা করেছে সে কারণটি নির্বাচন কমিশনেরও জানার কথা। নির্বাচন কমিশন কৌশলে সরকারকে এ আসনগুলো উপহার দিল। সেখানে আমরা আর প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য প্রার্থী দিতে পারলাম না। এখন যে প্রার্থী আছে তাই নিয়েই মাঠে আছি। তারপরও নানাভাবে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা চাই যাতে ভোটের মাঠ শান্ত থাকে সমতল থাকে। যে পরিবেশে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে নির্বিঘ্নে যেতে পারবেন এবং তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন। কিন্তু কি করে দেবেন বলেন, আজকেও (শুক্রবার) বরিশালের মুজিবর রহমান সরোয়ার ও নেত্রকোনায় রফিকুল ইসলাম হেলালীর কর্মীরা এজেন্ট তালিকা রিটার্নিং অফিসারের কাছে নিয়ে যাওয়ার সময় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা কেড়ে নিয়ে মারধর করেছে। যারা এ অপরাধ করেছে পুলিশ তাদের কিছু বলেনি। উল্টো আমাদের কর্মীদের গ্রেফতার করেছে।
তফসিল ঘোষণার পর থেকে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের প্রায় দশ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, এসময় ১৩ হাজারের বেশি নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
ধানের শীষের প্রার্থী গোলাম মাওলা রনি ও নিতাই রায় চৌধুরীর ওপরে হামলা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে, স্বাভাবিক কাজে বাধা দেওয়া হচ্ছে, হামলা করা হচ্ছে, বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করা হচ্ছে, গাড়ি ভাঙা হচ্ছে, মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হচ্ছে, কিংবা লুটে নেওয়া হচ্ছে। এটা নির্বাচনী আচরণ বিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। তারপরও তারা এটা করে যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২২৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০১৮
এমএইচ/ওএইচ/