শনিবার(০৯ ফেব্রুয়ারি) নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে দলের ৫০টির মতো জেলা থেকে আগত প্রার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এই সিদ্ধান্ত জানান। প্রার্থীদের সঙ্গে তারেক রহমান স্কাইপিতে মত বিনিময় করেন।
সূত্র জানায়, দলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক দেশের ৬৪ জেলায় একটি করে আসনের একজন প্রার্থী আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই মামলা করবেন। এ ব্যাপারে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে অংশ নেয়া নেতাদের সাথে সরাসরি কথা বলেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। শনিবার নয়াপল্টনে দুই পর্বে ওই বৈঠক হয়।
বৈঠকে উপস্থিত একজন প্রার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে বলেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমাদের কথা শুনেছেন। আবার তিনিও কথা বলেছেন। মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে আরও বৈঠক হবে।
সিনিয়র নেতারা মামলার বিপক্ষে থাকলেও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পক্ষে কেন জানতে চাইলে ওই নেতা বলেন, যারা বলেন আদালত সরকারের পক্ষে রায় দেবে সে জন্য মামলা করবে না। তাদের বক্তব্যের জবাব হলো, খালেদা জিয়াকেও তো আদালত সাজা দিয়েছে। তাই বলে কী তার মামলা বিএনপি চালাবে না। আপিল করবে না? রায় সরকারের পক্ষে গেলে কি আসে যায়। দেশের মানুষতো সবকিছু বুঝবে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের রাতে ‘ব্যালটে সিল’, ‘ব্যালট ও ব্যালট বাক্স ছিনতাই’, বিরোধী প্রার্থীদের পোলিং এজেন্টকে ভোট কেন্দ্রে প্রবেশে বাধা ও বের করে দেওয়া এবং গায়েবি মামলার দলিলসহ বিভিন্ন ইস্যু মামলায় প্রাধান্য পাবে বলে সূত্র জানায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নির্বাচনের পরপরই ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পুনঃনির্বাচনের দাবি জানিয়েছিল বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর বৃহত্তর মোর্চা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এই দাবিতে নির্বাচন কমিশনে স্মারক লিপি দেয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের কাছে সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন তারা। বিএনপিসহ ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্বাচনের দিন ও আগে-পরে সংঘটিত অনিয়ম, হামলা-মামলা, গ্রেফতার-হয়রানি, হতাহতের ঘটনাসহ ৮টি বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত নিয়ে ছবি-অডিও-ভিডিওর সমন্বয়ে সিডিসহ কেন্দ্রীয় দফতরে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন ধানের শীষের প্রায় পৌনে দুই’শ প্রার্থী। এরপর প্রতিটি আসনের প্রার্থীদের মামলা করার সিদ্ধান্ত হলেও পরে সিনিয়রদের মতে সেখান থেকে ফিরে আসেন তারা।
জানা গেছে, নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি প্রায় শেষ করে প্রার্থীরা কেন্দ্রের নির্দেশনার অপেক্ষায় ছিলেন। এখন সিদ্ধান্ত মোতাবেক আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সারাদেশের ৬৪ জেলায় একজন করে মোট ৬৪ জন প্রার্থী মামলা করবেন।
সন্ধ্যা ৬টা থেকে সাড়ে ৮টা পর্যন্ত যে বৈঠকটি হয় ওই বৈঠকে উপস্থিত একজন প্রার্থী বাংলানিউজকে বলেন, দুই পর্বে বৈঠক হয়েছে। আরও বৈঠক হবে। তবে মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলা যাবে না। তারেক রহমান স্কাইপিতে তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন সেটাও তিনি স্বীকার করেন।
বৈঠকে বিএনপির সিনিয়র নেতা ও ধানের শীষের প্রার্থী মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, ব্যারিস্টার ইরফান ইবনে আমান অমি, শরীফুল আলম, আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, জি কেগউছ, আজিজুল বারী হেলাল, লুৎফর রহমান কাজল, মিজানুর রহমান চৌধুরী, হাজী মুজিব, শামা ওবায়েদ, মিজানুর রহমান মিনু, জয়নুল আবদিন ফারুক, রফিকুল আলম মজনু, রুহুল আমীনদুলাল, মাইনুল ইসলাম খান শান্ত, ডা. মো. আনোয়ারুল হক অংশগ্রহণ করেন।
ঢাকা-১৩ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম বাংলানিউজকে বলেন, আমি বৈঠকে ছিলাম না। এ ধরনের কোনো বৈঠক হয়েছে কিনা আমার জানা নেই।
বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে বলেন, বৈঠকটি যেহেতু নয়াপল্টনে হয়েছে সেহেতু আমি কিছু বলতে পারব না। যারা উপস্থিত ছিলেন তাদের সঙ্গে কথা বলে দেখেন।
বাংলাদেশ সময় : ০০৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৯
এমএইচ/এমইউএম/এসআইএস