বুধবার (২৯ মে) বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। পুরানা পল্টনে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির ভবনের মিলনায়তনে কল্যাণ পার্টির পক্ষে দলটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা যখন ইফতারের অপেক্ষা করছি, সেই সময় বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা, সবচেয়ে জনপ্রিয় দল বিএনপি চেয়ারপারসন একটি মিথ্যা মামলায় দীর্ঘদিন ধরে কারাবন্দি আছেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে একটি মিথ্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে অবৈধ সরকারের কারাগারে বন্দি হয়ে আছেন। তাকে কোনো জামিনও দেওয়া হয় না। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে পরিকল্পিতভাবে দেশের সবচেয়ে এই জনপ্রিয় নেতাকে আটক করে রাখা হয়েছে’।
তিনি বলেন, ‘আমাদের অনেকে আজকে হতাশায় ভুগছেন। আমি মনে করি, হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই। হতাশা কখনও আমাদেরকে আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাবে না। আমাদের লক্ষ্য একটাই-এদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা, অগনিত নেতাকর্মী যারা গ্রেপ্তার হয়েছেন তাদেরকে মুক্ত করা এবং এই দুঃশাসনের অবসান ঘটানো’।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলায় কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে। গত এক দশক ধরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে অত্যন্ত সচেতনভাবে সুচতুরভাবে পরিকল্পিতভাবে বিরোধীদলকে নিশ্চিহ্ন করর জন্য পরিকল্পনা মতো কাজ করছে। তারা হাজার হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে, গ্রেপ্তার করেছে, খুন করেছে, অনেককে গুম করে দিয়েছে’।
তিনি বলেন, ‘আমাদের একটা হিসাবে দেখেছি যে, আমাদের সারা দেশে মামলার সংখ্যা এক লাখের উপরে। এই মামলায় আসামির সংখ্যা প্রায় ২৫ লাখ এবং তা ঢাকা শহর থেকে শুরু করে একেবারেই সেই গ্রামের ওয়ার্ড লেভেল পর্যন্ত কোথাও বাকি নেই। যারাই বিরোধিতা করেছেন, বিরোধী দল করেছেন, তাদেরকে অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে, গায়েবি মামলা দিয়ে আসামি করে হয়রানি, গ্রেপ্তার করে কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে’।
‘যারা আজকে পার্লামেন্ট গঠন করেছেন, তারা কেউ নির্বাচিত প্রতিনিধি বলে আমরা মনে করি না। জনগণ তাদের ভোট দিতে পারেননি। একইভাবে তাদের মাধ্যমে যে সরকার হয়েছে সেই সরকারও আমরা মনে করি যে, তারা জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না। যে কারণে আমরা আমাদের ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে সম্মিলিত বিরোধী জোটের পক্ষ থেকে এই সরকারকে কখনোই একটা লেজিটিমেট (বৈধ) সরকার হিসেবে স্বীকার করিনি। কিন্তু বাস্তবতা এই জগদ্দল পাথর আমাদের বুকের ওপর চেপে বসে আছে, বাস্তবতা এই সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে জনগণের সব মৌলিক অধিকারগুলোকে কেড়ে নিয়েছে, গণতন্ত্রের সব স্তম্ভগুলোকে ভেঙে নিয়েছে। এই অবস্থার উত্তরণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে,’ বলেন বিএনপি মহাসচিব।
কল্যাণ পার্টির ইফতারে বিএনপি মহাসচিবসহ জামায়াতে ইসলামীর আবদুল হালিম, এলডিপির সাহাদাত হোসেন সেলিম, বিএনপির তৈমুর আলম খন্দকার, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, জাগপার খোন্দকার লুৎফর রহমান, আসাদুর রহমান খান, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, কল্যাণ পার্টির মহাসচিব এম এম আমিনুর রহমান, স্থায়ী কমিটির সদস্য আজাদ মাহবুব, মো. ইলিয়াস, বেগম ফোরকান ইবরাহিম, ভাইস চেয়ারম্যান নুরউদ্দিন, সাহিদুর রহমান তামান্না, মাহমুদ খানসহ অন্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২২২৪ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০১৯
এমএইচ/জেডএস