ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপি

আড়াই কোটি মানুষ খেতে পায় না, সরকার বলে উন্নয়ন: রিজভী

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৩ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৯
আড়াই কোটি মানুষ খেতে পায় না, সরকার বলে উন্নয়ন: রিজভী সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ দলীয় নেতারা, ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, জাতিসংঘের হিসেবে বাংলাদেশের প্রায় আড়াই কোটি মানুষ তিন বেলা পেট ভরে খেতে পায় না। গত এক দশকে অপুষ্টিতে ভোগা মানুষের সংখ্যা অন্তত ১০ লাখ বেড়েছে। অপরদিকে, এই সরকার বলছে, দেশের উন্নয়ন হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলে আসছেন, ‘দেশে কোনো হাহাকার নেই। অভুক্ত মানুষ নেই’।

বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) দুপুরে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

রিজভী বলেন, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি বিষয়ক সংস্থা (এফএও), শিশু তহবিল ইউনিসেফ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও), আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিল (আইএফএডি) ও বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির উদ্যোগে ‘বিশ্বের খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি বাস্তবতা ২০১৯’ শিরোনামে যৌথভাবে প্রণীত নতুন প্রতিবেদন বলছে, বাংলাদেশে দুই কোটি ৪২ লাখ মানুষ ভালোভাবে খেতে পায় না।

পর্যাপ্ত খাবারের অভাবে বাংলাদেশে প্রতি ছয়জন মানুষের মধ্যে একজন অপুষ্টিতে ভুগছে। গত এক দশকে এ দেশে অপুষ্টিতে ভোগা মানুষের সংখ্যা অন্তত ১০ লাখ বেড়েছে। অপরদিকে, রাতের আঁধারে নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসা প্রধানমন্ত্রী বলে আসছেন, ‘দেশে কোনো হাহাকার নেই। অভুক্ত মানুষ নেই’।

তিনি বলেন, প্রবাদ আছে- মিথ্যা বলা মহাপাপ। আর এখন বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সত্য বলা মহাভয়। মিথ্যা বলা যদি কোনো ‘শিল্প’ হতো, তাহলে অনর্গল মিথ্যা বলা এই সরকারের মন্ত্রী-নেতারা হতেন, সেই শিল্পের নায়ক-মহানায়ক। এরা তাদের রাজনৈতিক পাঠশালায় সত্য কথা বলার শিক্ষা অর্জন করেননি।

বিনা নির্বাচনে ক্ষমতায় থাকা এই অবৈধ সরকারের গত ১০ বছরে ধনী আরও ধনী, গরীব আরও গরীব হয়েছে দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, নজীরবিহীন দলীয়করণ, প্রশাসন ও অন্যান্য রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুর্বল ও ক্ষয়িষ্ণু করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। জবাবদিহিতার অভাব, অকার্যকর সংসদ দুর্নীতিকে লাগামহীন পর্যায়ে নিয়ে গেছে। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায় ধ্বংসের মুখে। শেয়ার মার্কেট লুট, ব্যাংক লুট, দলীয় ব্যক্তিদের জন্য ঋণ সুবিধা ও ফেরত না দেওয়ার প্রবণতা একনায়ক সরকারের সমর্থক ও তল্পীবাহকদের বা লাগামহীনভাবে রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহার ও গণলুট বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ভেতরে ভেতরে অন্তঃসারশূন্য করে ফেলছে।

দেশবাসীর গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করে উন্নয়নের নামে বর্তমান সরকার জনগণকে বিভ্রান্ত করছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারছে না। বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতা ভূলুণ্ঠিত। আইনের শাসন অনুপস্থিত। মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নেই। দেশে এখন স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি নেই। খুন, গুম, হত্যা, ধর্ষণ মহামারি আকারে বেড়েই চলছে। এমনকি ২২ জেলায় বন্যায় অসহায় অভুক্ত মানুষকে ত্রাণও দেওয়া হচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি ও দ্রুত নতুন নির্বাচনের দাবিতে বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) বরিশালে বিএনপির মহাসমাবেশ হবে। এই মহাসমাবেশ ঘিরে মুক্তিকামী জনতার মাঝে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। সমাবেশের অনুমতি নিয়ে টালবাহানা করছে পুলিশ প্রশাসন। এক সপ্তাহ ধরে অনিশ্চয়তায় রেখে বুধবার শেষ মুহূর্তে পুলিশ ঈদগাহ মাঠে মহাসমাবেশের অনুমতি দিলেও বিভিন্ন এলাকায় বিএনপি নেতা-কর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে। বরিশালের বেলস পার্কে সমাবেশের জন্য আবেদন করলেও অনুমতি দেওয়া হয়েছে ঈদগাহ মাঠে। যার পরিসর অত্যন্ত ছোট। এটা সরকারের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বেরই বহিঃপ্রকাশ।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, বিএনপি নেতা হাসান জাফির তুহিন, অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫০ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৯
এমএইচ/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।