তিনি বলেছেন, অবিলম্বে এই নির্বাচন বাতিল করুন। এই নির্বাচন দেশের মানুষ মানে না।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমদের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার (৩১ আগস্ট) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর আহমেদ হলে ভাসানী অনুসারী পরিষদ আয়োজিত এক স্মরণসভায় ফখরুল একথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা বলেছি এ ব্যাপারে (রোহিঙ্গা ইস্যু) একটা জাতীয় কনভেনশন ডাকা হোক। সবদলকে এক করে বাংলাদেশ যে রোহিঙ্গা ইস্যুতে একমত সেটাকে প্রকাশ করা হোক। না এটা তাদের ভালো লাগে না। এরা কখনো জাতীয় ঐক্যে বিশ্বাস করে না। তারা মনে করে একাই সব করতে পারবে। ১৯৭৫ সালেও একদলীয় শাসন ব্যবস্থা করেছে। আবারও তারা সেদিকেই যেতে চায়।
প্রয়াত কাজী জাফর আহমদ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে এখন যে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে সেসময় কাজী জাফর সাহেবের খুব দরকার ছিল। তিনি রাজনীতি খুব ভালো বুঝতেন। সৃজনশীলতার মধ্যে তিনি অনেক নতুন কিছু চিন্তা করতে পারতেন। কৌশল, কর্মসূচি, সংগঠনের দিক থেকে তার মধ্যে সৃজনশীলতা ছিল।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশে আজকে সংকটময় মুহূর্ত চলছে। দেশের ইতিহাসে এত বড় সংকট আর কখনো এসেছিল বলে আমার মনে হয় না। ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করে রক্ত দিয়ে যেসব অর্জন করেছিলাম তা সব ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। এখন ক্ষমতাসীনরা গণতন্ত্রের যে কথা বলেন, একেবারেই মিথ্যা কথা বলেন। জনগণের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্কই নেই। একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছেন। তারা জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন।
‘আজকে শেয়ার মার্কেট ধ্বংস হয়ে গেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানেনই না ডেঙ্গুতে কত লোক মারা গেছে। মফস্বল শহরের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে মনে হবে না যে এই দেশে সত্যিকার অর্থে কোনো সরকার আছে। ব্যাঙের ছাতার মতো মেডিকেল কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড কী আমরা সবাই দেখি। এই সমস্ত লোকেরা এখন আমাদের শিক্ষার গুরু হয়েছেন। কথা শুনলে মনে হয় না, কোনো রকমের শিক্ষা-সাংস্কৃতিক চর্চা তাদের মধ্যে রয়েছে। প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী একেবারে দলীয়করণ। বিচারব্যবস্থাকে সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার প্রতিমুহূর্তে চেষ্টা করছে। ’
বাংলাদেশ একটা অকার্যকর রাষ্ট্র হওয়ার দিকে চলে গেছে দাবি করে ফখরুল বলেন, এ অবস্থায় প্রশ্ন এসেছে আমরা কী করবো? আমরা মানুষের মাঝে আছি। আমরা কখনো পরাজিত হই না। দেশের মানুষের সঙ্গে সঙ্গে বিএনপির রাজনীতিও কখনো পরাজিত হয়নি। তবে হ্যাঁ, খারাপ সময় এসেছে। আমরা নিচের দিকে গেছি। সেখান থেকে আবার ফিনিক্স পাখির মতো জেগে উঠেছি। আমরা আমাদের রাজনীতিকে সঠিকপথে যদি নিতে পারি, সমস্ত দেশপ্রেমিক দলগুলোকে যদি এক করতে পারি তাহলে বিজয় অবশ্যই আসবে।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনাদের মধ্যে কোনো হতাশার ছবি আমরা দেখতে চাইনি। আমরা হতাশ নই। আমরা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়ে যাবো। মাথা নত করতে রাজি নই। জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সভাপতিত্বে স্মরণসভায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির (জাফর) সভাপতি মোস্তফা জামাল হায়দার, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বাংলাদেশ পিপলস পার্টির সভাপতি রিটা রহমান, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক মহাসচিব নঈম জাহাঙ্গীর, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, সাবেক এমপি জহির উদ্দিন স্বপন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ ওয়াহিদুজ্জামান দীপু প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১১ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০১৯
এমএইচ/এইচএ/