এখন তারা সংঘবদ্ধ হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে চান আন্দোলন সংগ্রামে। দলের চেয়ারপারসনকে কারাগার থেকে মুক্ত করতে চান।
অথচ এই সিলেট এক সময় ছিল বিএনপির ঘাঁটি। সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান থেকে শুরু করে সাবেক সংসদ সদস্য, নিখোঁজ এম ইলিয়াস আলী ও সাবেক নগর বিএনপির সভাপতি আরিফুল হক চৌধুরীর দাপট ছিল এ অঞ্চল জুড়ে।
মূলত সাইফুর রহমানের মৃত্যু, ২০১২ সালে থেকে ইলিয়াস আলী নিখোঁজের পর থেকেই সিলেটে বিএনপির রাজনীতিতে রং হারাতে শুরু করে। সে সময় কিছুদিন স্বেচ্ছাসেবক দল দিয়ে রাজপথে কাঁপিয়ে তোলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান জামান। তিনিও বর্তমানে একাধিক মামলায় ফেরারি।
২০১৩ সালে আরেক নেতা আরিফুল হক চৌধুরী নগর ভবন জয় করলেও, কিবরিয়া হত্যা মামলায় চলে যান কারাগারে। ফলে সিলেটে বিএনপির জন্য সুসময় অধরাই থেকে যাচ্ছে। ২০১৮ সালে আরিফুল হক পুনরায় নগর ভবনে জয় করলেও রাজপথে আর সেই পুরোনো জৌলুস দেখা যায়নি।
এদিকে বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, তাদের নেতাকর্মীরা এখনও ক্ষয়ে যাননি। সরকারের দমন-পীড়নের কারণে তারা বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন। বিএনপি কোনো কর্মসূচিতে হাত দিলেই সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে দমন-পীড়ন শুরু করে বলে অভিযোগ তাদের।
এর মাঝেও নতুন করে ঘুড়ে দাঁড়াতে বদ্ধপরিকর সিলেট বিএনপি। খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও তারেক রহমানের সাজা বাতিল, নেতা-কর্মীদের মামলা প্রত্যাহার ও অবিলম্বে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেওয়ার দাবিতে কেন্দ্রীয় বিএনপির পক্ষ থেকে দেশব্যাপী বিভাগীয় সমাবেশের কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে আগামী মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টায় সিলেটের রেজিস্টারি মাঠে এক বিভাগীয় মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এ সমাবেশের মধ্য দিয়েই ঘুরে দাঁড়াবার প্রত্যাশা করছে সিলেট বিএনপি।
এ প্রসঙ্গে মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন বাংলানিউজকে বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কারাবাসে রেখে সরকার গণতন্ত্র হরণ করেছে। দেশে প্রতিটি খাতে রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতির জন্ম দিয়েছে তারা। মূলত চেয়ারপারসনের মুক্তির মধ্য দিয়ে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সিলেটে মহাসমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ বলেন, দেশে গণতন্ত্র বলতে কিছু নেই। যেখানে বালিশ, পর্দা কিনতেও দুর্নীতি হয়। ক্ষমতাসীন দলের নেতারা ক্যাসিনো সম্রাজ্য গড়ে তোলে। গণতন্ত্র নেই বলেই এমনটি হচ্ছে। আর গণতন্ত্র মুক্তি আন্দোলনের প্রথম শর্ত খালেদা জিয়ার মুক্তি। তাই সিলেটের সমাবেশ হবে বিএনপি চেয়ারপারসনের মুক্তির সমাবেশ।
দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ মহাসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া জাতীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারাও সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন বলে দলীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এদিকে, মহাসমাবেশ ঘিরে উজ্জীবিত সিলেট বিএনপির নেতাকর্মীরা। এতোদিন রাজপথে দেখা যায়নি, মামলা-হামলায় আত্মগোপনে থাকা এমন নেতাকর্মীদের অনেকেই আসন্ন সমাবেশ ঘিরে প্রকাশ্যে আসছেন। সমাবেশ সফল করতে নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন নেতারা। ঘরোয়া বৈঠকের পাশাপাশি চলছে প্রচারপত্র বিলি।
বাংলাদেশ সময়: ০৫০৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৯
এনইউ/এইচজে