সোমবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে বিএসএমএমইউ'র বি ব্লকের শহীদ ডা. মিল্টন হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা তুলে ধরে এসব কথা বলেন তিনি।
ডা. এ কে মাহবুবুল হক বলেন, খালেদা জিয়া আমাদের হাসপাতালে সাত মাস যাবৎ চিকিৎসার নিচ্ছেন।
বিএসএমএমইউ হাসপাতালের পরিচালক বলেন, খালেদা জিয়ার অনুমোতি ছাড়া কখনও চিকিৎসকরা তার সঙ্গে দেখা করতে পারেন না। আমাদের হাসপাতালের নিয়মানুযায়ী সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত রোগী দেখা হয়। কিন্তু তিনি সবসময় দুপুর ২টার পরে দেখা করার অনুমোতি দেন। এবং চিকিৎসকরা সেখানে গিয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বসে থেকেও তার সঙ্গে দেখা করতে পারেন না।
খালেদা জিয়াকে নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারের কারণে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। আপনাদের বলতে চাই, সাত মাস যাবৎ তিনি এখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এসময়ের মধ্যে তার স্বাস্থ্যের কোনো অবনতি হয়নি-যোগ করেন বিএসএমএমইউ পরিচালক।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য গঠিত চিকিৎসা বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক জিলন মিয়া সরকার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘খালেদা জিয়া খুবই আন্তরিক। সব সময় আমাদের সঙ্গে হাসিখুশিভাবে কথা বলেন। তার স্বাস্থ্য বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি স্বাচ্ছন্দ্যে আমাদের বলেন।
অধ্যাপক জিলন মিয়া সরকার আরও বলেন, যেহেতু তার বাতজনিত সমস্যাসহ (ব্যথা) ছোটখাটো আরও সমস্যা আছে। তাই তিনটি ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য বুধবার (২৩ অক্টোবর) তাকে জানানো হয়েছে। কিন্তু তিনি এ ভ্যাকসিনগুলো দিতে রাজি হচ্ছেন না। আশা করি, তিনি ভ্যাকসিনগুলো দিতে রাজি হবেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে খালেদা জিয়ার মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক শাহানাজ আক্তার বলেন, আমাদের দেশেই আধুনিক চিকিৎসা সম্ভব। আমাদের এখানে বিশ্বমানের অনেক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আছেন। তাই তার চিকিৎসার জন্য বাইরে নেওয়ার প্রয়োজন নেই। আমরাই তার চিকিৎসা দিতে পারবো।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া গত এপ্রিলে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, তখন তিনি হাঁটতে পারতেন না। হুইল চেয়ারের সাহায্যে চলাচল করতেন। এখন তিনি অন্যের সহযোগিতায় হাঁটতে পারেন।
তার চিকিৎসার বিষয়ে আমরা প্রতিনিয়ত কাউন্সেলিং করে আসছি। কাউন্সেলিং ছাড়া কোনো রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব নয়। চিকিৎসার বিষয়ে রোগীর আন্তরিকতা প্রয়োজন রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসার বোর্ডের অন্যান্য চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে দুর্নীতি মামলায় পুরান ঢাকার পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বিশেষ সেলে বন্দি রয়েছেন খালেদা জিয়া। এর আগেও তিনি বিএসএমএমইউতে চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে গত কয়েকদিন ধরে তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকলেও ওই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে রাজি হচ্ছিলেন না। তিনি ও তার দলের দাবি ছিল, বেসরকারি ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার। কিন্তু কর্তৃপক্ষ রাজি হয়নি বিধায় শেষ পর্যন্ত খালেদা সেই বিএসএমএমইউতেই চিকিৎসা নিতে ভর্তি হয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৯
এডেজএস/ওএইচ/