বুধবার (০১ জানুয়ারি) দুপুরে শহরের সার্কিট হাউজ সড়কে শহীদ খোকন পার্কের ভেতরে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ জানায়, হামলায় পারভেজ নামে এক পুলিশ কনস্টেবলের মাথা ফেটে যায়।
হামলায় আহত অপর চার পুলিশ সদস্য হলেন- বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী, সহকারী উপ-পরিদর্শক আশরাফুল, কনস্টেবল মামুন ও কনস্টেবল শিফাত।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বগুড়ায় ছাত্রদলের পক্ষ থেকে শহরের নবাববাড়ি সড়কে দুপুরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের আয়োজন করা হয়। ওই সমাবেশে যোগ দিতে ছাত্রদল নেতা-কর্মীরা সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন মহল্লা থেকে মিছিলসহ সার্কিট হাউস সড়কে শহীদ খোকন পার্কের ভেতরে সমবেত হতে থাকেন।
সেখান থেকেই একজোট হয়ে তাদের দলীয় কার্যালয়ে যাওয়ার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও বগুড়া-৬ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজসহ দলের সিনিয়র নেতারা খোকন পার্কে যান। এ সময় পার্কের ভেতরে ছাত্রদলের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মীও জড়ো হন। তাদের মধ্যে অনেকে পার্কের ভেতরে শহীদ মিনারে জুতা স্যান্ডেল পায়ে উঠে পড়েন।
এ সময় ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ সদস্যরা ভেতরে গিয়ে তাদের শহীদ মিনার থেকে নেমে যেতে বলেন। এর এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের বাগবিতণ্ডা হয়। তখন পুলিশ ধাওয়া দিলে ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের একাংশ ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। অপর অংশ পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুঁড়তে শুরু করে।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী বাংলানিউজকে বলেন, ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা জুতা-স্যান্ডেল পায়ে শহীদ মিনারের ওপর উঠে তাণ্ডব চালাচ্ছিল। পুলিশ সেখানে গিয়ে ছাত্রদলের কর্মীদের শহীদ মিনার থেকে নেমে যেতে বলে।
‘এ সময় কেউ কেউ নেমে গেলেও অন্যরা পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ারও চেষ্টা হয়েছে। হামলায় আমিসহ আমাদের বাহিনীর পাঁচ সদস্য আহত হয়েছেন। এর মধ্যে কনস্টেবল পারভেজের মাথায় আঘাত করা হয়েছে। ’
তবে ছাত্রদল বগুড়া জেলা কমিটির সভাপতি আবু হাসান দাবি করেন, তাদের কোনো কর্মী পুলিশের ওপর হামলা চালায়নি।
তিনি বলেন, খোকন পার্কের পাশে আওয়ামী লীগ অফিস। সেখান থেকে কেউ পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢিল ছুঁড়ে থাকতে পারে। এরপর পুলিশ আমাদের ধাওয়া করেছে।
এদিকে পুলিশ হামলার ঘটনায় জড়িতদের ধরতে অভিযানে নামে। বিকেল পৌনে ৪টা পর্যন্ত ১১ কর্মীকে আটক করা হয়। তবে এদের মধ্যে ১০ জনের নাম পাওয়া গেছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
আটকরা হলেন- সাব্বির (১৯), শাকিল (১৭), রাহিদ (১৬), ফরদিন (১৭), রাশেদুল (২২), আলাল হোসেন (২১), সাব্বির হোসেন (১৬), আরিফুল ইসলাম (১৩),জবহিল আলী (২১) ও আরাফাত আলী (১৯)।
বগুড়া সদর থানার ওসি এস এম বদিউজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, পুলিশের ওপর হামলায় এখনও মামলা হয়নি। তবে জড়িতদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. শফিক আমিন কাজল বাংলানিউজকে জানান, আহত পুলিশ সদস্যদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে তারা আশঙ্কামুক্ত।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০২০
কেইউএ/এবি/এমএ