তিনি বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে আপনারা পাপিয়ার কাহিনী সৃষ্টি করেন। আমরা যখন আন্দোলন সংগ্রাম শুরু করি, তখন আপনার একটা ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু করেন।
সোমবার (২ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের’ উদ্যোগে আয়োজিত বিদ্যুৎ ও পানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জয়নুল আবেদিন ফারুক বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দুই বছর ধরে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। আমরা যখনই তার মুক্তি চাই, তখনই আদালত তা খারিজ করে দেন। বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী, গণতন্ত্রের আপসহীন নেত্রী আজ খুব অসুস্থ। তাকে একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের কারণে কারাগারে আবদ্ধ রাখা হয়েছে। ’
আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে ফারুক বলেন, ‘আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটিয়ে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা সম্ভব। যেই দেশে পুলিশ শাসক, যে সরকার নৈশকালীন সরকার, যে দেশের সরকার সব রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দেওয়ায় ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, যে সরকার দেশের একের পর এক সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিচ্ছে, এই সরকারের কাছে আদালতের মাধ্যমে আমরা খালেদা জিয়ার জামিন পাবো এটা বিশ্বাস করা যায় না। ’
তিনি আরও বলেন, ‘যখনই আমরা আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করি, তখনই প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয় অনুমতির প্রয়োজন। অনুমতি নিতে গেলে সেই অনুমতি কোনোদিনও পাওয়া যায় না। যদিও আমরা কৌশলগতভাবে রাজপথে নামার চেষ্টা করি, তখন আমাদের নেতাকর্মীদের পুলিশি হামলা ও মামলা দেওয়া হয়। আপনারা কর্মসূচি করার অনুমতিও দিচ্ছেন না আবার দেশনেত্রীকে মুক্তিও দিচ্ছেন না, তাই আমরা মনে করি আন্দোলন-সংগ্রাম ছাড়া কোনো গতি নেই। খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক পরিচয় বিবেচনা করে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া হোক। ’
বিদ্যুৎ ও পানির মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণের ওপর একের পর এক মূল্যবৃদ্ধির বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কুইক-রেন্টালের নামে ৫২ হাজার কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। ২০২১ সাল পর্যন্ত জ্বালানি আইনের চুক্তি অনুযায়ী সরকারকে কুইক-রেন্টালকে টাকা দিতে হবে। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছিলেন সমন্বয় করার জন্য বিদ্যুৎ ও পানির দাম বাড়ানো হয়েছে। বিদ্যুৎ ও পানির দাম বাড়িয়ে সমন্বয়ের দরকার নেই। আমি আপনার কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই, আপনি বিদ্যুৎ পানির অপচয়, দুর্নীতি বন্ধ করতে কোনো সমন্বয় করেছেন কিনা?’
তিনি আরও বলেন, “সরকার মানুষের ওপর অন্যায় অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে। বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর মামলা হামলা করা হচ্ছে। সরকার বিদ্যুৎ ও পানির দাম বাড়িয়ে ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ সৃষ্টি করেছে। আজকে সরকার একের পর এক মেগা প্রকল্পের নামে চুরি ডাকাতি শুরু করেছে। আপনারা উন্নয়নের নামে মেগা প্রজেক্টের নামে নিজেদের পকেট ভারি করছেন। এতে প্রমাণিত হয় জনগণের কোনো উপকারের সরকার আপনারা নন। ”
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বলেন, আপনারা পুলিশ দিয়ে বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামকে কোণঠাসা করে রেখেছেন, স্বৈরাচার এরশাদও দমিয়ে রাখতে পারেননি, জেনারেল মইন ইউ আহমেদ, ফখরুদ্দিন আহমেদও পারেননি। অনতিবিলম্বে খালেদা জিয়ার মুক্তি, বিদ্যুৎ ও পানির দাম প্রত্যাহার করুন। ইনশাআল্লাহ আমরাও আন্দোলনের প্রস্তুতি গ্রহণ করছি। কয়টা মামলা দেবেন, কয়দিন আন্দোলন-সংগ্রাম দমিয়ে রাখবেন। ’
‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও’ আন্দোলনের সভাপতি কে এম রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৩ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০২০
আরকেআর/এএটি