ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিএনপি

ত্রাণ বিতরণে দলীয়করণের অভিযোগ মির্জা ফখরুলের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০২০
ত্রাণ বিতরণে দলীয়করণের অভিযোগ মির্জা ফখরুলের

ঢাকা: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ব্যাপারে অত্যন্ত সজাগ থেকে সচেতনভাবে কাজ করছি, ভেতরের সমস্যাগুলো তুলে ধরেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সরকার সেগুলোকে কখনোই গুরুত্ব দেয়নি। যে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে-তা একেবারেই  অপ্রতুল। জেনেছি যে, ৪০ হাজার লোকের মধ্যে মাত্র ৩শ লোককে দেওয়া হয়েছে ত্রাণ, সেখানেও দলীয়করণ করা হয়েছে।

সোমবার (১৩ এপ্রিল) সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয় ভবনের পঞ্চমতলায় বাম গণতান্ত্রিক জোটের উদ্যোগে ‘সর্বদলীয় পরামর্শক সভায়’ স্কাইপের মাধ্যমে যোগ দিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে তিনি এসব অভিযোগ করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, দলীয়করণের ঊর্ধ্বে উঠতে না পারলে করোনা ভাইরাস মোকাবিলা কোনোভাবে সম্ভব না।

ভয়াবহ দিন আসছে সামনের দিনগুলোতে। আপনারা সবাই একমত হবেন সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশপ্রেমকে সামনে রেখে, সততাকে সামনে রেখে যদি হ্যান্ডেল করা না যায় তাহলে আরও বড় বিপর্যয়ের মুখে পড়বো, অনেকে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কাও করছেন।

‘জাতীয় ও বৈশ্বিক মহাদুর্যোগ মোকাবিলায় যেকোনো উদ্যোগে যোগ দিতে আমরা প্রস্তুত আছি। এই দুর্যোগ পরিস্থিতিতে দম্ভ, অহংকার ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পরিহার করে ঐক্যমত প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে অবশ্যই সরকারকেই। কারণ পুরো দায়িত্বটা সরকারের।   দুর্ভাগ্যজনকভাবে তারা এটা  অবহেলা করছেন। আমি জানি না তারা এটাকে নেগলেট করেছেন কী কারণে। আমরা বিশ্বাস করি জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে সমন্বিত পরিকল্পনা করে বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা মহান আল্লাহর রহমতে এই মহাদুর্যোগ মোকাবিলা করতে সক্ষম হবো। ’

করোনা ভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী দলীয় পরিকল্পনার পাশাপাশি ৮৭ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্রদানের প্রস্তাবনাসমূহ তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।

এসময় দলের প্রস্তাবনার একটি কপিও চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খানের মাধ্যমে হস্তান্তর করেন তিনি।

স্কাইপে ভিডিও কনফারেন্স।

সভার সূচনা বক্তব্যে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক বজলুর রশীদ ফিরোজ করোনা ভাইরাস সংক্রমণকে জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা করে তা মোকাবিলায় সমন্বিত জাতীয় উদ্যোগ গ্রহণের কথা বলেন।

গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেন, আপনাদের বক্তব্য আমি সমর্থন করি। জাতীয় চ্যালেঞ্জ হিসেবে আমাদের এই করোনা ভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলা করতে হবে। এককভাবে এটা সম্ভব না।

জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে জাতীয় দুর্যোগ কমিটি গঠন করতে হবে। সব শ্রেণির মানুষকে নিয়ে, ১৬ কোটি মানুষকে নিয়ে, সব সামাজিক শক্তিসহ সব পেশার মানুষকে নিয়ে এই কমিটি করতে হবে। সরকারের একার পক্ষে এই সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব হবে বলে আমি মনে করি না। আমি অনুরোধ করবো সরকারসহ সব মহলকে, আসুন আমরা জাতিগতভাবে একত্রিত হই এবং জাতীয় এই মহাদুর্যোগ মোকাবিলা করি।

সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, এই মহাদুর্যোগে একা নয়, ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস দরকার। এটা করতে হবে। আমি এখনো আহবান জানাবো সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করার। একাত্তরে আমরা যেভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি, করোনা ভাইরাসের এই ক্রান্তিকাল মোকাবিলায়ও আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক বজলুর রশীদ ফিরোজের সঞ্চালনায় এই পরামর্শ সভায় সিপিবির আবদুল্লাহ কাফী রতন, রুহিন হোসেন প্রিন্স, বিপ্লবী ওয়াকার্স পার্টির আকবর খান, বাসদের রাজেকুজ্জামান রতন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাসদের খালেকুজ্জামান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের প্রধান টিপু বিশ্বাস, গণফোরামের অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম, বাম ঐক্যজোটের আহবায়ক নাসির উদ্দিন আহমেদ নাসু, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির মোশরেফা মিশু, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহবায়ক হামিদুল হক, ওয়ার্কার্স পার্টির (মাকর্সবাদী) সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, গণসংহতি আন্দোলন প্রধান জোনায়েদ সাকি, ন্যাপের ভারপ্রাপ্ত সভাপাতি এম এ সবুর প্রমুখ স্কাইপের মাধ্যমে অংশ নেন।

এছাড়াও সর্বদলীয় এই পরামর্শক সভায় সরকারি দল আওয়ামী লীগ ছাড়া বিএনপি, সিপিবি, গণফোরাম, জেএসডি, নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, কল্যাণ পার্টিসহ বিভিন্ন বাম সংগঠনের শীর্ষ নেতারা স্কাইপের মাধ্যমে অংশ নেন।

 বাংলাদেশ সময়: ১৭০৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০২০
এমএইচ/এইচএডি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।