বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত করোনা সনদ বিক্রি, অর্থ ও মানবপাচার এবং মহাদুর্নীতির প্রকোপ বৃদ্ধির প্রতিবাদে মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকারি হাসপাতালগুলো নরক আর প্রাইভেট হাসপাতালগুলোতে এমনভাবে বিল ওঠানো হয় যে, মানুষ বেঁচে থাকলেও মরে যায়।
তিনি বলেন, একটা পাপুলকে কুয়েতে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরো কত পাপুল যে তৈরি হয়েছে সেটা বলা মুশকিল। দুঃশাসনের মধ্যেই এগুলো তৈরি হয়। পাপুলরা এমপি হয়।
রিজভী বলেন, রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক সাহেদকে সাতক্ষীরা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এটা কিন্তু কেউ বিশ্বাস করে না। আবার ফেসবুকে যদি কেউ কিছু লেখে তাহলে রাতের অন্ধকারে ছেলে হোক মেয়ে হোক তাদের উঠিয়ে নিয়ে আসে। প্রতিবাদ বন্ধ করার জন্য বিএনপি নেতাকর্মীদের রাতের অন্ধকারে তুলে নিয়ে আসা হয়।
তিনি বলেন, যে সরকার জনগণের কাছে জবাবদিহিতা করে না সেই সরকার সবকিছু করতে পারে। যত দুর্নীতি অবিচার আছে সবকিছুই তারা করতে পারে। এই সাহেদ-সাবরিনা কোথায় ছিল? তারা একত্ববাদী একদলীয় শাসনব্যবস্থার সরকারের অধীনে লালিত পালিত হয়েছে।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, স্কুল কলেজ হাসপাতাল সমাজসেবার প্রতিটি সেক্টর আজকে সরকার ধ্বংস করেছে। কারণ, এখানেও কিন্তু মেগা প্রজেক্ট হয়েছে। এখান থেকে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের পকেট ভারী হয়। তাই তারা মেগা প্রজেক্ট সোনার হরিণের মতো আগলে রাখে। আজ হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ নেই, মাক্স নেই, নকল মাক্স নিয়ে এসেছে। ভেন্টিলেটর বর্তমানে জীবন বাঁচানোর একটি মাধ্যম, সেটিও নেই। আর এসব দুর্নীতির সাথে মন্ত্রী, দলীয় নেতাকর্মী, এমনকি মন্ত্রীর ছেলেরাও জড়িত। তাই আজকে রাস্তায় মানুষ মরছে। অ্যাম্বুলেন্সে মানুষ মরছে। মানুষ বাঁচানোর সরঞ্জামই দেশে নেই।
রিজভী বলেন, আজকে টিউশন ফি বাতিলের দাবি উঠেছে। এমনিতেই ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুলে যেতে পারছে না। তারপরে টিউশন ফি পুরোপুরি দিতে হবে। অভিভাবকরা টিউশন ফি বাতিলের দাবি জানিয়েছে। কিন্তু সেদিকে সরকার কর্ণপাত করছেন না। আর যদি মেগা প্রজেক্ট তাড়াতাড়ি করার দাবি উঠত তাহলে তারা খুব দ্রুত কর্ণপাত করতো। কারণ এখানে তাদের নেতাকর্মীদের পকেট ভারী হয়। একটা মেগা প্রজেক্টের ফলে প্রতি বছর ১০ থেকে ১৫ গুণ অর্থ বেড়ে যায়। কারণ এই টাকাগুলো তাদের নেতাকর্মীদের পকেটে যায়। এ কারণে মেগা প্রজেক্টের প্রতি তাদের এত গুরুত্ব।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, বিএনপির দলীয় নেতাকর্মীরা তাদের সামর্থ অনুযায়ী ত্রাণ, পিপিই, মাস্ক দিচ্ছে। ড্যাব ও জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে চিকিৎসকরা মানুষের সেবা করছে। এসব তাদের সহ্য হয় না। এজন্য বিনা কারণে মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে এবং মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহ-সভাপতি ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, তাঁতী দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনির, স্বেচ্ছাসেবক দল উত্তরের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০২০
এমএইচ/এমজেএফ