ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

বইমেলা

বইমেলায় তানিম কবিরের ‘ওই অর্থে’

এম জে ফেরদৌস | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৪
বইমেলায় তানিম কবিরের ‘ওই অর্থে’

এ বছর অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত হচ্ছে তানিম কবিরের কবিতাগ্রন্থ ‘ওই অর্থে’। এর আগে ২০০৮ সালে ফেনী থেকে কবিতাপুস্তিকা ‘ধুলোঘূর্ণি’ ও ২০১১ সালে ‘কল্পিত স্মৃতির দিকে তাকিয়ে’ প্রকাশিত হলেও এটিই তার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ কবিতাগ্রন্থ।

‘ওই অর্থে’ প্রকাশ করছে শুদ্ধস্বর। বইটির প্রচ্ছদ এঁকেছেন খেয়া মেজবা।

কবি তানিম কবিরের সঙ্গে আলাপকালে বইটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘গত এক দেড় বছরে লেখা কবিতাগুলো থেকে নির্বাচিত কিছু কবিতা নিয়েই এই বই। ’

কী ধরনের কবিতা বইতে সন্নিবেশিত হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার সম্পৃক্ততা ছাড়া সম্পূর্ণ কাল্পনিক কোনওকিছু নিয়ে আমি কবিতা লিখতে পারি না। যা ঘটে বা ঘটেছে, তাতে আরো যা যা ঘটতে পারতো সেইসব সম্ভাবনা ও আশঙ্কাকল্পনাকেই আমি আমার কবিতা বলে জানি। ’

তানিম কবিরের কবিতা প্রসঙ্গে আশির দশকের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কবি জুয়েল মাজহার বলেন, ‘বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ ও ভারতের বাংলাভাষী অঞ্চল পশ্চিমবঙ্গে যারা কবিতা লিখছেন তাদের মধ্যে তানিম কবির একটি গুরুত্বপূর্ণ নাম। ‌ইতোমধ্যেই তার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পাঠক ও ভক্তকূল জুটেছে। ’

তানিম কবিরের কবিতা পছন্দ করেন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এখনকার সময়ে, দ্বিতীয় দশকে যেসব তরুণরা কবিতা লিখছেন, তারা কী লিখছেন ও কবিতার সর্বসাম্প্রতিক প্রবণতা জানতে যে কয়েকজন কবির কবিতা পাঠ করা জরুরি, তানিম কবির তাদের একজন। ’

‘কেটে যাচ্ছে মালিহা জেরিন ও কুশারের ক্ষেতেসহ তানিমের বেশ কিছু কবিতা পড়ে চমকে উঠতে হয়েছিল আমাকে। কবি ও কবিতাগ্রন্থের জন্য শুভকামনা। ’— যুক্ত করেন কবি জুয়েল মাজহার।


‘ওই অর্থে’ পাণ্ডুলিপি থেকে দু’টি কবিতা:

অতিঅতিক্রম ক্রমশ

জেনো আমি, আমিই তোমাদের অনিবার্য বিকল্প;
না-জানার ভান করে এই যে থাকো—
এও এক সান্ত্বনা মূলত মৃত— কেরোসিননীলনদে
উত্থাপিত; আমি সেই বনেদি সাঁকো।
সেই প্রসারিত আশ্রয়ভূমি, টেকোস্বর জলপাইছাদ;
উপড়ে ফেলা বাতাস, যেন ক্রমবিস্তারিত—
চুম্বনলালায় মুছে যাওয়া জন্মতিলদাগ, অনুরূপ স্থিতি
অব্যয়-আর্তরতির কোনও বিভাজিত ভোর।
আশ্বাস তবু ঘোর— ঘোলাটে চোখ, হিম কলাপাতায়;
বর্ণিত শ্লোকের অসাড় ও অনন্ত জিজ্ঞাসায়—
আমিই উড়ন্ত মদ একমাত্র; এক ও অধিক ঝাঁঝের দ্রবণ
আমাকে পেরিয়ে যায় অতিঅতিক্রম ক্রমশ।


কুইয়োরের ক্ষেতে

নদীর ধারে কুইয়োরের ক্ষেত
কুইয়োরের ক্ষেতে শিয়াল
শিয়ালের ভয়ে কাঁপতেছো তুমি
ভাঙতেছো ইনেসিয়াল—
আমি কইতেছি ডর নাই ওরে
ভয় পাইয়ো না রে মালি
একটু ভিতরে গিয়াই আমরা
থিতু হবো ফাইনালি—
কেন কেন কেন! ক্লিয়ার কওতো
একটু ভিতরে কী বা?
কেন ছলে বলে কলা কৌশলে
ভিতরে আমারে নিবা—
ছিঃ ছিঃ এটা তুমি কইতেছো কী
ছলা কেন বলা কলা!
আমরা তো আরে এমনি হুদাই
এমনিতে পথচলা—
ও আচ্ছা, তাই? তাইলে চলো
অধিক ভিতরে যাবো
যেটুকু তোমার ভিতর তাহার
সবটুকু নিঙরাবো—
আহা আহা সাধু বড়ই কাব্য
বড়ই শিল্পমানের
কথা তুমি বলিয়াছো শুনে মম
আরোগ্য হলো কানের—
বিরাট ব্যাপার! কান লয়ে তবে
মক্কায় গিয়া মরো
আর তা না গেলে কুইয়োরের ক্ষেতে
যা করার ছিলো—
                         করো...

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।