ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বইমেলা

ঘুরছি দেখছি কিনছি...

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০১৪
ঘুরছি দেখছি কিনছি...

বইমেলা থেকে: ঘুরে ঘুরে বই দেখছি, কিনছি, খুবই ভালো লাগছে। এবার বাংলা একাডেমি মেলার সম্প্রসারণ করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নিয়ে এসেছে।

এটা খুবই ভালো সিদ্ধান্ত।

সোমবার অমর একুশে গ্রন্থমেলায় বই কিনতে এসে এভাবেই বাংলানিউজের কাছে অনুভূতি ব্যক্ত করছিলেন অধ্যাপক ডা. মো. জুবায়ের।

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, প্রতি বছরই মেলায় আসি কেনার জন্য। তবে আগে যখন মেলা বাংলা একাডেমির ভিতরে ছিল, জায়গা কম থাকায় খুবই সমস্যা হতো। ধুলাবালি, ধাক্কাধাক্কির মধ্যে পড়তে হতো। এমনিতেই মানুষ বই কিনতে চায় না। আর পরিবেশ এমন থাকলে তো মেলায় মানুষ আসবেই না। তবে এ বছর সরকার এবং বাংলা একাডেমি মেলা সম্প্রসারণের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা খুবই সময়োযোগী। আমি এটাকে স্বাগত জানাই।

তিনি বলেন, অনেক পাঠক শুধু বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ঘুরে ফিরে যাচ্ছে। বাংলা একাডেমির উচিত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যে মেলার আরও একটি অংশ আছে তার প্রচার বাড়ানো।

সোমবারের মেলায় আগত পাঠক-দর্শনার্থীদের সাথে কথা বলে প্রায় সবার কাছেই ডা. মো. জুবায়েরের মতো প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেল। এবার বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ থেকে মেলার সম্প্রসারণ করে একটি অংশ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ফলে মেলা প্রাঙ্গণে জায়গা বেশি হওয়ায় পাঠক-দর্শনার্থীরা ‍ঘুরে ঘুরে তাদের পছন্দের বই দেখতে ও কিনতে পারছে। পাঠক-দর্শনার্থীদের প্রায় সবাই মেলার এই সম্প্রসারণের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছেন।

বইমেলা ঘুরে দেখা যায়, বিকেল ৩টায় আজকের মেলা শুরুর সময় মানুষ কম থাকলেও বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা হতেই মেলা প্রাঙ্গণে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে।

মেলায় আগত আর একজন দর্শনার্থী আফসানা বেগম; যিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী, মেলা সম্প্রসারণ সম্পর্কে বাংলানিউজকে বলেন, মেলায় এবার প্রচুর জায়গা আছে। আরাম করে বই দেখতে পারছি। বাংলা একাডেমি নিয়ে আমাদের আবেগের জায়গা রয়েছে তা বাদ দিলে এবারের মেলার আয়োজন খুবই ভালো হয়েছে। তবে যে কারণে এবার মেলার সম্প্রাসারণ করা হয়েছে তার দরকার ছিল বলে আমি মনে করি।

পেশায় আইনজীবী আরেকজন দর্শনার্থী সুবীর নন্দী দাশ মেলা সম্প্রসারণের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, বাংলা একাডেমি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান দুটোই ঐতিহাসিক জায়গা। আমার মনে হয় মেলা যেহেতু দুই জায়গায়ই হচ্ছে তাই উভয়ের সাথে সংযোগের জন্য আলাদা পথ করে দেওয়া যেতো, তাহলে খুব ভালো হতো। এতে করে মেলায় এক রকম সুবাস থাকবে।

ড. তামিমা নামে একজন দর্শনার্থী বলেন, এবার জায়গা বেশি থাকায় মেলায় ভিড় কম। এতে করে বেশি বই দেখতে পারছি। আর ঘুরে বেড়ানোর জন্যও জায়গাটা খুবই ভালো হয়েছে।

সন্ধ্যার পর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের স্টলের উদ্বোধন করতে এসেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড হচ্ছে পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রকাশক। এ বছরও আমরা তিন কোটি নয় লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩১ কোটিরও বেশি বই পৌঁছে দিয়েছি। এটা দুনিয়ার আর কোথাও নেই।

মেলার সম্প্রসারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি গত ৪৫ বছর ধরে নিয়মিত মেলায় আসি। আগে মেলা প্রাঙ্গণে জায়গা ছোট ছিল। এবার তার সম্প্রসারণ হয়েছে। ফলে মেলায় এবার নতুনত্ব এসেছে। তবে আমি মনে করি, মেলায় যারা নিয়মিত আসেন তারা এর সুবিধা-অসুবিধা ভালো বলতে পারবেন।

শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, সুবিধা-অসুবিধা মিলিয়েই মেলার সম্প্রসারণ করা হয়েছে। মানুষ যদি এতে সন্তুষ্ট হয় তাহলে বলতে হবে এই সিদ্ধান্ত অবশ্যই ভালো হয়েছে। আর যদি কোনো অসুবিধা থাকে তাহলে কর্তৃপক্ষ অবশ্যই তা সমাধানে সচেষ্ট হবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।