ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ পৌষ ১৪৩১, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বইমেলা

সাংস্কৃতিক জগতে আমানুল হকের ভূমিকা বহুমাত্রিক

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০১৪
সাংস্কৃতিক জগতে আমানুল হকের ভূমিকা বহুমাত্রিক

বইমেলা প্রাঙ্গণ থেকে: ‘আমানুল হক শুধুমাত্র একজন আলোকচিত্রীর ভূমিকা রেখে বিদায় নেননি। আমাদের সাংস্কৃতিক জগতে তাঁর ভূমিকা ছিল বহুমাত্রিক।



বৃহস্পতিবার বিকেলে অমর একুশে গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত ‘ভাষা-আন্দোলন এবং আমানুল হকের কীর্তি’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে আলোকচিত্রশিল্পী নাসির আলী মামুন এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ভাষা-শহীদ রফিকের চূর্ণ-বিচূর্ণ মাথার যে ছবিটি ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি তার সাধারণ সিক্স টোয়েন্টি সাদা-কালো ফিল্মের ক্যামেরায় তিনি ধারণ করেছিলেন এটি তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের বর্বরোচিত, লোমহর্ষক এবং বীভৎস অত্যাচারের একমাত্র সচিত্র দলিল বলে সাক্ষ্য দেয় ইতিহাস। সত্যজিৎ রায়ের সংসর্গকে আমানুল হক শুধু ব্যক্তিগত স্মৃতির পর্যায়ে রাখেন নি বরং এ নিয়ে আমাদের উপহার দিয়েছেন। তার আমার দেশ চিত্রমালা- সিরিজ উত্তরপ্রজন্মকে এদেশের নিসর্গকে হৃদয়ঙ্গম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

অনুষ্ঠানে আলোচকবৃন্দ বলেন, আমানুল হক ছিলেন গভীরভাবে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ মানুষ। আলোকচিত্রের কারিগরিবিদ্যার সঙ্গে তিনি যোগ করেছিলেন দায়বদ্ধ শিল্পীর অঙ্গীকার। তাই আমরা তাকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মহান ভাষা-আন্দোলনের বহু দুর্লভ আলোকচিত্র ক্যামেরায় তুলতে দেখি। শুধু ভাষা-আন্দোলন নয় বাংলাদেশের সামগ্রিক প্রগতিশীল অভিযাত্রাকে তিনি তাঁর ক্যামেরা ও কলমে ধারণ করেছেন প্রগাঢ় দায়বোধ থেকে।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে আহসানুল হক বলেন, আমানুল হক ছিলেন সাম্যবাদে বিশ্বাসী একজন উদার-অসাম্প্রদায়িক মানুষ। তার শিল্পীসত্তার কেন্দ্রভাগে ছিল মানুষ। ভাষা-সংগ্রামী এই আলোকচিত্রী প্রবলভাবে ছিলেন একজন খাঁটি বাঙালি কিন্তু জাতিগত সংকীর্ণতা তাকে কখনো আচ্ছন্ন করেনি। মাতৃভাষার জন্য সংগ্রামরত পৃথিবীর সকল জাতিগোষ্ঠীর প্রতি ছিল তার আন্তরিক সমর্থন। অন্তর্গত এই আন্তর্জাতিকতাই আমানুল হককে বিশিষ্টতা দান করেছে।   

আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন শহিদুল আলম, ফরিদুর রেজা সাগর এবং লুৎফর রহমান রিটন।
আলোচনা সভার পর সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আবৃত্তি পরিবেশন করেন ‘বাক শিল্পাঙ্গন’ এবং ‘মুক্তধারা সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্র’-র শিল্পীবৃন্দ।

অমর একুশে গ্রন্থমেলায় আগামীকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় অমর একুশে উদযাপন উপলক্ষে বাংলা একাডেমি আয়োজন করেছে শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতা উদ্বোধন করবেন শিল্প-সমালোচক অধ্যাপক নজরুল ইসলাম।

বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।