ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

বইমেলা

‘বই হাতে বাড়ি নেই মেলার আমেজ’

আসাদ জামান ও আবু তালহা | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৫
‘বই হাতে বাড়ি নেই মেলার আমেজ’ ছবি : জিএম মুজিবুর / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বইমেলা থেকে: বুধবার (১১ ফেব্রুয়ারি) মধ্যাহ্নে বাংলা একাডেমির মূল ফটকে পৌঁছে দেখি এর বিপরীত দিকে ফুটপাতের বেঞ্চির ওপর বসে আছেন নারায়ণগঞ্জ থেকে মেলায় আসা মেহের আফরোজ। পাশে দাঁড়িয়ে তার স্বামী আবির হাসনাত লিংকন।


 
ক্লান্ত মেহের আফরোজের দিকে এগিয়ে গিয়ে নিজের পরিচয় দেই। জানতে চাই মেলায় আসার অনুভূতি। মেহের কিছুটা অসুস্থ বলে জানালেন স্বামী।   তবে কথা বলতে চাইলেন মেহের।  
 
বাংলানিউজকে তিনি জানালেন ১৪ বছর ধরে নিয়মিত মেলায় আসছেন। আর সে কারণেই অসুস্থতা উপেক্ষা করেই এবারেও মেলায় আসা তার।

মেহের বলেন, অন্য আর দশটি উৎসব থেকে বইমেলার উৎসবটা আমাদের কাছে ভিন্ন অর্থ বহন করে। ঈদ, পূজা, বড় দিন, পহেলা  বৈশাখ, ২৬ শে মার্চ, বিজয় দিবসসহ অন্যান্য উৎসব দিন ফুরোলেই শেষ। কিন্তু বইমেলার আমেজ সহসাই শেষ হয় না। মেলা থেকে কিনে নেওয়া বইয়ের সঙ্গে মেলার আমেজটাও বাড়িতে যায়। বইগুলো পড়ে শেষ করার আগ পর্যন্ত থেকে যায় এর রেশটা।

এই দম্পতির সঙ্গে কথা শেষ করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে কিছুদূর এগোতেই দেখি স্কুল পালানো এক ঝাঁক কিশোর স্কুলড্রেসে মেলার বাইরে ভিড় করছে। প্রত্যেকের হাতে পাঁপড়ভাজা।
 
ওদের সঙ্গেও কথা জমলো। জানালো আজিমপুরের একটি স্কুল থেকে এসেছে মেলা দেখতে। তবে বই কেনার মতো টাকা তাদের তাদের পকেটে নেই। কেনার চিন্তাও করছে না কেউ। প্রত্যেকেরই প্ল্যান বাবা-মায়ের সঙ্গে ফের যখন মেলায় আসবে তখন পছন্দের বই কিনবে। একথা বলছিলো, এনামুল হাসান রানা।
 
বই না কেনা হবে না, তারপরেও কেনো মেলায় এসেছো?  এবার উত্তর হিমেলের। প্রতিদিনই মেলায় আসতে মন চায়। এখানে এলে ভালো লাগে। নতুন বই নাড়াচাড়া করে মজা পাই। কিনতে পারলে আরো ভালো লাগতো।
 
প্রতিদিনের মতো বুধবারও নির্ধারিত সময় দুপুর ৩টায় খোলা হয় মেলার দরজা। আগে থেকে অপেক্ষায় থাকা পাঠক-দর্শনার্থী সারি বেঁধে মেলায় ঢুকতে থাকে।
 
এ দৃশ্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমি দু-পাশেই। মাঘের শেষ বিকেলের কনে দেখা আলোর রোদ ছড়িয়ে আছে মেলা প্রাঙ্গণে।
 
মেলায় পূর্ণতা দিতে লেখকদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়েছেন চিত্রশিল্পীরাও। মাত্র ১০ মিনিটে দক্ষ হাতে এঁকে দিতে পারেন আপনার অবয়ব। তাদের কথায়, গ্রন্থমেলায় চিত্রশিল্পীদের অংশগ্রহণ এক ধারাবাহিক অধ্যায়। ভাষা সংগ্রামেও লেখকদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছিলেন চিত্রশিল্পীরা। তারই পরম্পরায় আজো বাংলা ভাষার সবচেয়ে বড় আয়োজন অমর একুশে গ্রন্থমেলায় অংশ নিয়ে যাচ্ছেন তারা।  
 
এদিকে অমর একুশে গ্রন্থমেলার ১১তম দিনে ১০৭টি নতুন বই এসেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বদরুদ্দীন উমরের, ‘মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা যুদ্ধের জয় পরাজয়’ এবং মুনতাসীর মামুনের ‘লড়াই চলছে, লড়াই চলবে’।

বুধবার নজরুল মঞ্চে নন্দিত প্রকাশনী থেকে বের হওয়া শামীম পারভেজের দ্বিতীয় কবিতার বই ‘হৃদয়ের কথা’ ও শিমুল পারভিনের  ‘সোনালী ডানার ভালোবাসা’, ‘দেখতে আমি পাইনি তোমায়’, ‘ছোটদের গল্পের ঝুঁলি’ বইগুলোর মোড়ক উন্মোচন করেন প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি)-এর মহাপরিচালক শাহ আলমগীর।
 
এছাড়াও অন্য দিনের মতো মেলার নির্ধারিত আয়োজন চলছে। বুধবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূল মঞ্চে শুরু হয় জাতীয় নেতা শহীদ তাজউদ্দীন আহমদের নব্বইতম জন্মবর্ষ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান।
 
এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুর রশীদ।   আলোচনায় অংশ নেন ব্যারিস্টার এম. আমীর-উল ইসলাম, ড. জিল্লুর রহমান খান, অধ্যাপক এম এম আকাশ, অধ্যাপক শাহীনুর রহমান, মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী সিকদার এবং সুভাষ সিংহ রায়।
 
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ।

** বইয়ের পেটে পাঠক লেখক প্রকাশক!

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৫

** মেলায় মাহবুব কামালের ‘জাত নিমের পাতা’
** বইয়ের পেটে পাঠক লেখক প্রকাশক!
** মেলায় ‘তোমার সঙ্গে বহুদূর’

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।