বইমেলা থেকে: সূর্যটা পশ্চিম দিগন্তে হেলতে শুরু করলেই মেলায় আসা পাঠক-দর্শনার্থীদের আগ্রহের পারদও ওপরে উঠতে থাকে। বিকেল ৩টা বাজার ঘণ্টা খানেক আগে থেকে বাংলা একাডেমির মূল দরজায় প্রতিদিনই জমে ওঠে ভিড়।
সোহরাওয়ার্দী ও বাংলা একাডেমি চত্বরে মেলা দুই অংশে ভাগ হলেও বাংলা একাডেমি চত্বর ঘিরেই পাঠক দর্শনার্থীদের যত আগ্রহ। লেখক-পাঠক-দর্শনার্থীদের কাছে আজো বইমেলা মানে একাডেমি প্রাঙ্গণ।
বৃহস্পতিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ৩টায় মেলার দরজা উন্মুক্ত করে দেওয়া হলে অমর একুশে গ্রন্থমেলার ১২তম দিনেও তাই মূল ভিড় দেখা যায় একাডেমি গেটে।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের তল্লাশি শেষে শৃঙ্খলাবদ্ধ হয়ে একাডেমি প্রাঙ্গণে ঢোকেন বইপ্রেমীরা। এ অপেক্ষায় যেন কোনো ক্লান্তি নেই তাদের।
বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপ হয় রাজধানীর মিরপুর থেকে আসা সিগমা আক্তার সিমুর সঙ্গে। শ্যামলীতে একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন তিনি।
সিমু জানান, মেলার পরিসর বাড়িয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নেওয়া হলেও এখনো মেলা বলতে বাংলা একাডেমি চত্বরকেই বুঝি। মেলার এ অংশটি চিরচেনা ঘরের মতো। হয়তো সব পাঠকের ভাবনাই এমন। কারণ, আমার মতো অনেকেই প্রথমে এসেছেন একাডেমি প্রাঙ্গণে, পরে যাবেন সোহরাওয়ার্দীতে।
একই কথা জানান সৌরভ চৌধুরীও। ওয়াশপুর থেকে বন্ধুদের নিয়ে মেলায় এসেছেন তিনি। সৌরভ বলেন, বইয়ের স্টল, প্যাভিলিয়ন অন্য অংশে হলেও বাংলা একাডেমিতে এলেই মনে হয় বইমেলায় এলাম। বাংলা একাডেমি ঘুরে মেলার আমেজ নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যাই।
৩০ মাঘ আজ, কড়া নাড়ছে ফাল্গুন। রাত পোহালেই হাজির হবে ঋতুরাজ বসন্ত। কিন্তু টিএসসি চত্বর-বাংলা একাডেমি-সোহরাওয়ার্দী উদ্যান জুড়ে আজই যেন বয়ে যাচ্ছে ফাল্গুনি হাওয়া। দেশজুড়ে চলছে বসন্ত বরণের আয়োজন।
এর কমতি নেই বইমেলাতেও। মেলার বাইরে জমে উঠেছে যেন আরেক মেলা। বাংলাদেশ শিশু একাডেমি-টিএসসি চত্বরে পৌঁছালেই পাওয়া যাবে বাসন্তীরঙা চুড়ি-মালা।
অন্য দিনের মতো গ্রন্থমেলার মূল মঞ্চের আয়োজনতো থাকছেই। বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূল মঞ্চে শুরু হয় শিশুসংগঠক রোকনুজ্জামান খান দাদাভাইয়ের নব্বইতম জন্মবর্ষ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শিশুসাহিত্যিক খালেক বিন জয়েনউদদীন। আলোচনায় অংশ নেন মাহবুব তালুকদার, আলী ইমাম, লুৎফর রহমান রিটন এবং প্রত্যয়।
আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন শিল্পী হাশেম খান।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৫