ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বইমেলা

আজ শুধু ফুল ফোটানোর দিন!

আসাদ জামান ও আবু তালহা | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৫
আজ শুধু ফুল ফোটানোর দিন! ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বইমেলা থেকে: ফুলের জলসায় মিলেমিশে যেতে কার না মন চায়! তাই অমর একুশে গ্রন্থমেলার ১৩তম দিনে সাধ জাগলো দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে বাংলা একাডেমি চত্বরে ঢোকার। কারণ ওই লাইনে যে ফুলের মেলা বসেছে।


 
এ ফুল আবার গোলাপ-বেলি, জুই-চামেলি, হাসনাহেনা-শিউলি-টগর অথবা পলাশ-বকুল, শিমুল-পারুল, মাধবীলতা-নয়নতারা, কাঠমালতী-কৃষ্ণচূড়া নয়।
 
ফুলগুলোর নাম মনি কুন্তলা, নাবিহা ও সারাহ ইসলাম, রাফাত মমিন, সামি জামান, মার্জিয়া ও রুবাইয়া ইসলাম, তন্ময় ও তনিমা রহমান, সঞ্জয় ও সুপ্রিয়া ঘোষ, নেহা ও নাবিল কবির। ফুলগুলোর প্রত্যেকেরই বয়স দেড় থেকে ১০ বছরের মধ্যে।  
 
এবার ফুলের সঙ্গে কথা বলার পালা!
 
তখনও মেলার দরজা খুলতে ১৫ মিনিট বাকি। বাংলা একাডেমির সামনে মানুষের দীর্ঘ সারি। প্রায় প্রত্যেকেরই হাতে মনি কুন্তলা, নাবিহা ও সারাহ নামক ফুল। ফুলগুলো ইতিউতি তাকাচ্ছে বিষ্ময়ভরা চোখে।
 
মাথায় ফুলের টায়রা পরে বাবা মেনন চাকমা’র হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছে মীরপুর গ্লোরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিশু শ্রেণির ছাত্রী মনি কুন্তলা।

সাড়ে ৫ বছর বয়সী কুন্তলা জানায়, বাবার সঙ্গে মেলায় এসেছে বই কিনতে, মেলা দেখতে আর মজা করতে।

কুন্তলার বাবা মেনন চাকমা বলেন, ছুটির দিন এবং বসন্ত উৎসব মাথায় রেখেই মেয়েকে নিয়ে মীরপুর শ্যাওড়াপাড়া থেকে মেলায় এসেছি। বাচ্চার জন্য কিছু বই কিনবো। পছন্দ হলে নিজের জন্যও কয়েকটা।  
 
মনি কুন্তলার মতো ফুল আশপাশে আরো ছিলো। কিন্তু ততক্ষণে মেলার দরজা খোলা হয়েছে। এখন আর কেউ কথা বলতে আগ্রহী নয়। মেলার ঢোকার পরে হবে কথা।
 
বাংলা একাডেমি চত্বরে ঢুকে কথা হলো ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র রাফাত মমিনের সঙ্গে।
 
বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা বাবা মো. মমিন উদ্দিনের হাত ধরে মেলায় এসেছে সে। এ বছর আজই প্রথম মেলায় আসা তার।
 
কি বই কিনতে চাও?-প্রশ্নে চটপট উত্তর, গণিত অলেম্পিয়াডের বই কিনতে চাই। এ ছাড়া লেখক শাহরিয়ারের বাবু সিরিজের বাবু-১, বাবু-২ বইগুলো পেলে কিনে নিয়ে যাবো।
 
বাবা মায়ের হাত ধরে বারিধারা লিচুবাগান থেকে মেলায় এসেছে সাড়ে ৪ বছর বয়সী নাবিহা ও তার ছোট বোন ১৫ মাস বয়সী সারাহ্ ইসলাম।
 
এরা এখনো বোঝে না বই মেলা কি? কিন্তু বইমেলার আনন্দ যেন তাদেরকেই বেশি ছুঁয়ে গেছে। কখনো বাবা-মায়ের হাত ধরে ঘুরছে। কখনো বা হাত ছেড়ে দিয়েই দিগবিদিগ ভোঁ দৌড়! দুই বাচ্চাকে সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন বাবা নজরুল ইসলাম।
 
বসন্তের প্রথম দিনে বাচ্চাদের নিয়ে মেলায় আসার অনুভূতি জানাতে গিয়ে নজরুল ইসলাম বলেন, ব্যবসায়িক কাজে সব সময় ব্যস্ত থাকতে হয়। তাছাড়া বড় মেয়েটি গুলশান-১ এর লেকহেড গ্লামার স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়ে। সে কারণে চাইলেই সিডিউল মেলানো যায় না। তাই আজ ছুটি ও বসন্তের দিন এক সঙ্গে পড়ায় পুরো ফ্যামিলি নিয়ে মেলায় চলে এলাম।
 
মেলার ১৩তম দিন শুক্রবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত অমর একুশে গ্রন্থমেলার শিশু প্রহর। এ প্রহরে বাবা মা’র হাত ধরে শিশুরা মেলায় প্রবেশ করার সুযোগ পায়।
 
এদিকে পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুযায়ী ঘড়ির কাটা যখন ১১টার ঘর স্পর্শ করে ঠিক সেই সময় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মেলার দরজা এক সঙ্গে খুলে দেওয়া হয়। তবে শিশুদের বেশিরভাগ বইয়ের স্টল বাংলা একাডেমি চত্বরে থাকায় এখানেই ভিড় দেখা যায় বেশি।
 
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শিশুদের চেয়ে বড়দের ভিড়ই বেশি লক্ষ্য করা গেছে। তবে মেলায় আসা পাঠক-দর্শনার্থী মেলার দুই প্রান্তেই ঢুঁ মারছেন। গ্রহণ করছেন মেলার স্বাদ।
 
এদিকে মেলার ১৩তম দিন সকালে মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় শিশু-কিশোর আবৃত্তি প্রতিযোগিতা। এছাড়া সিসিমপুর’র ইখরি-হালুমদের পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
 
বিকেলের আয়োজনে থাকছে ‘কবি আবুল হোসেন’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন তারেক রেজা। আলোচনায় অংশ নেবেন, বায়তুল্লাহ কাদেরী, অনু হোসেন, ও হিমেল বরকত। সভাপতিত্ব করবেন মনজুরে মওলা।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৫

** আহা আজি বসন্তে...’
** ফাগুন এলো কার লিপি হাতে...
** স্বাগতম হে ঋতুরাজ বসন্ত

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।