ঢাকা, বুধবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বইমেলা

‘উপন্যাসে খাটনি বেশি তরুণরা খাটতে চায় না’

তানিম কবির, বিভাগীয় সম্পাদক শিল্প-সাহিত্য | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৫
‘উপন্যাসে খাটনি বেশি তরুণরা খাটতে চায় না’ সালাহ উদ্দিন শুভ্র (কথাসাহিত্যিক শাহীন আখতার ও কবি ব্রাত্য রাইসুর মাঝখানে) / ছবি: পারমিতা হিম

বইমেলা থেকে: অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৫-য় প্রকাশিত হলো তরুণ কথাসাহিত্যিক সালাহ উদ্দিন শুভ্র-র প্রথম উপন্যাস ‘গায়ে গায়ে জ্বর’। বইটি প্রকাশ করেছে ‘আদর্শ’।

এর আগে ২০১১ সালে ‘ভাষাচিত্র’ প্রকাশ করে তাঁর প্রথম বই, গল্পসংকলন ‘মানবসঙ্গবিরল’।

গায়ে গায়ে জ্বর সম্পর্কে লেখকের আত্মমূল্যায়ন শুনতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বইটি আমি আসলে “এডাল্ট” রাখার চেষ্টা করেছি। এদিককার উপন্যাস দেখবেন যেনবা সকল বয়সের উপযোগী করে লেখার একটা প্রবণতা আছে। সিনেমার ক্ষেত্রে যে আপত্তি তোলা হয় আরকি, যে পরিবারের সবাই মিলে দেখার উপযুক্ত না।

তো আমি চলমান ট্যাবু মুক্ত থাকার যথেষ্ট চেষ্টা করেছি। মহৎ কিছু করার ইচ্ছাও এই উপন্যাসের নেই। মানে আমি কনশাসলি এগুলো এড়িয়েছি তা না, লেখার পর দেখলাম বিষয়টা এমন হয়ে গেছে। ’

কতদিন সময় নিলেন উপন্যাসটি লিখতে?

‘এটা লিখতে শুরু করি ২০১৩ সালে। একটানা লিখি নাই। তবে, উপন্যাস একটানা লিখে যাওয়াই ভালো। অগোছালপনার কারণে সেটা হয় নাই। সব মিলে বছর দুই লেগেছে। বারবার এডিট করছিলাম। ’

উপন্যাস আসলে কিভাবে লিখিত হয়, আপনার ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতাটা কেমন ছিল?

‘আমি যা-ই লিখতে যাচ্ছিলাম তখন সেটা লম্বা হয়ে যাচ্ছিল । এখনও সেটা হয়। অল্পে কিছু আর বলতে পারি না, ফেসবুক স্ট্যাটাস ছাড়া। যে কারণে উপন্যাসটা লিখতে পারলাম মনে হয়। তারপর মনে হলো বাংলায় আর তেমন রহস্যোপন্যাস লেখা হচ্ছে না। ভাবলাম এমন খালি মাঠে যদি গোলটা দেয়া যায়, এই আরকি। ’

তিনি বলেন, তখন আবার খুব ওরহান পামুক, মিলান কুন্ডেরা পড়ছিলাম। মনে হচ্ছিল আমিও তাহলে উপন্যাস লিখে ফেলি। বন্ধু লেখকরাও বলছিলেন উপন্যাস লিখতে। সবমিলে লিখতে বসলাম। তাদের অবদানের কথা বাদ দিব কেন?’

নিজে লিখবার আগে সালাহ উদ্দিন শুভ্র স্বচক্ষে শুধুমাত্র সেলিম আল দীনকেই উপন্যাস লিখতে দেখেছিলেন। তবে সেই দৃশ্য তাঁর জন্য ততটা অনুপ্রেরণাদায়ক ছিল না—যতটা ছিল নিজহাতে লিফলেট লেখার ঘটনা। জানালেন, লিফলেট লিখতে লিখতেই উপন্যাস লেখায় আগ্রহ পেয়েছেন তিনি।

তরুণদের মধ্যে কবিতা লেখার প্রাধান্য, সে তুলনায় উপন্যাস তেমন কাউকে লিখতে দেখা যায় না। উপন্যাসের ব্যাপারে আগ্রহী পাঠক থাকা সত্ত্বেও তরুণরা উপন্যাস লিখতে চায় না কেন?

‘উপন্যাস লিখতে কষ্ট আছে। বেশি লিখতে হয় বলে। আমরা তো আসলে সবাই একটু অলস টাইপের। কবিতা লিখতে অত কষ্ট হয় না। উপন্যাসে খাটনি বেশি। তরুণরা বুদ্ধিমান, তারা খাটতে চায় না। ’

বইমেলা কেমন দেখছেন? কোনও পর্যবেক্ষণ আছে, যা অন্যবারের চেয়ে আলাদা করে এবারের মেলাকে?

‘মেলার অবস্থা অত ভালো না। যথাযথ মর্যাদার অভাব আছে। আমার তো মনে হয় লেখক-পাঠক-প্রকাশকদের গায়ে লাগা উচিত এসব অবহেলা। মেলায় এলে আমার শুধু মনে হয় কী জন্য এই মেলা, কার জন্য?’

বইমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ‘আদর্শ’র ৪১২-৪১৩ নাম্বার স্টলে নতুন প্রকাশিত গায়ে গায়ে জ্বর উপন্যাসটি পাওয়া যাবে। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন মামুন হোসাইন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।