ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

বইমেলা

মেলার জন্য বইয়ের প্রস্তুতি

মলাটের ভাঁজে নির্ঘুম রাত

ঊর্মি মাহবুব, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৬
মলাটের ভাঁজে নির্ঘুম রাত ছবি: শোয়েব মিথুন/ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: ৪৪ বছর আগে ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলা একাডেমির বর্ধমান হাউজ লাগোয়া বটতলায় চট বিছিয়ে  ৩২টি বই নিয়ে চিত্তরঞ্জন সাহা যে মেলা শুরু করেছিলেন, আজ সে বইমেলা কোটি মানুষের প্রাণের মেলায় রূপান্তরিত হয়েছে।

সেই ৩২টি বইয়ের পরিধি আজ এসে দাঁড়িয়েছে লাখো বইয়ে।

অল্প কয়টা বইয়ের সংখ্যা ও ব্যাপ্তি আজ এমন অবস্থায় এসেছে যে, এখন শেষ মুহূর্তে তাই নতুন ছাপানো বইয়ের মলাট লাগানোর কাজে সারারাত নির্ঘুম ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে বাংলাবাজারের প্রেস কর্মীদের।
 
রোববার (২৪ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১টায় বাংলাবাজারে ঢুঁ মেরে দেখা মিললো প্রেসগুলোতে বই মলাটের কর্মযজ্ঞের।

প্রায় প্রতিটি প্রেসেই কর্মীরা কাটাচ্ছেন নির্ঘুম রাত। গত প্রায় দুই মাস ধরে অনেকটা এভাবেই চলছে তাদের মলাটকরণের  কাজ। এভাবেই চলবে বইমেলার পুরোটা সময়, ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে।

প্রেস কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেলো, সকাল থেকে শুরু করে বই মলাটকরণ কাজ চলে মধ্যরাত পর্যন্ত।
 
বাংলাবাজারের শফিক প্রেসের কর্মী  আনোয়ার হোসেন দেখে নিচ্ছে মলাটের মান। প্রিটিংয়ে কোনো ভুল থাকলে তা পাঠকের হাতে তুলে দেওয়া যাবে না। তাই সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করতে হচ্ছে প্রতিমুহূর্তে।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, বইমেলার আগে প্রতি বছরই শেষ পর্যায়ে এসে মলাট নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকতে হয় আমাদের। মলাট ভালো না হলে বই বিক্রিও হয় না। তাই বানান ভুল হলো কিনা, প্রিন্টটা ঠিক আছে কিনা সব দেখে নিতে হয়।

প্রেসের অন্য কর্মী আসলাম জানালেন, মলাটের কাজ আগেভাগেই সম্পন্ন না করা গেলে শেষ পর্যায়ে কিছু না কিছু ভুল থেকেই যায়। তাই জানুয়ারি মাসটা কাটে তড়িঘড়ির মধ্যেই। তবে মলাটের কাজ শেষ হলে যখন বই পূর্ণ রূপ পায় তখন তারাও আনন্দ ‍পান। নতুন বই, ঝকঝকে মলাট দেখে সারারাত জেগে থাকার কষ্টও তখন ভুলে যান তারা।

১৯৭২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশি শরণার্থী লেখকদের ৩২টি বই নিয়ে বর্ধমান হাউজের বটতলায় মেলা শুরু করেন চিত্তরঞ্জন সাহা। তিনি একাই ১৯৭২ থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত বইমেলা চালিয়ে যান।

১৯৭৮ সালে বাংলা একাডেমির তৎকালীন মহাপরিচালক আশরাফ সিদ্দিকী বাংলা একাডেমিকে মেলার সঙ্গে সম্পৃক্ত করেন। ১৯৭৯ সালে মেলায় যুক্ত হয় বাংলাদেশ পুস্তক বিক্রেতা ও প্রকাশক সমিতি। এই সংস্থার প্রতিষ্ঠাতাও চিত্তরঞ্জন সাহা।

১৯৮৩ সালে কাজী মনজুরে মওলা বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবে বাংলা একাডেমিতে প্রথম ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’র আয়োজন করেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৩৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৬
ইউএম/এসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।