ঢাকা: কদিন বাদেই শুরু হচ্ছে বাঙালির প্রাণের মেলা ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০১৬’। এখন চলছে শেষ পর্যায়ের প্রস্তুতি।
প্রায় পাঁচ লাখ বর্গফুট এলাকা নিয়ে বিশাল পরিসরে এবারে অনুষ্ঠিত হবে বইমেলা। সেই সঙ্গে এবারের মেলা হবে অনেক বেশি খোলামেলা পরিবেশে। ইতোমধ্যেই মেলায় অংশ নেওয়া প্রকাশনা সংস্থা, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যম সংস্থাকে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে মেলা প্রঙ্গণে গিয়ে দেখা গেছে, প্রায় সবগুলো স্টলই দাঁড়িয়ে গেছে। এখন চলছে বাইরের প্রস্তুতির কাজ। কাঠের উপর পেরেক ঠোকার শব্দ আর রঙের তীব্র গন্ধ বলে দিচ্ছে, আপন সাজে সাজছে বাঙালির প্রাণের বইমেলা।
মেলার মূল আকর্ষণ, সৃজনশীল প্রকাশনা সংস্থাগুলো থাকছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনগুলোর স্টল থাকবে একাডেমি প্রাঙ্গণে।
মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ড. জালাল আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, অন্য সময়ের তুলনায় এবারের বইমেলা বড় পরিসরে হচ্ছে। ৬৫০ ইউনিট হবে। ৪০২টি প্রতিষ্ঠানসহ ১৫টি চত্বর ও ১৫টি প্যাভিলিয়ন থাকবে। ইতোমধ্যে মেলার স্টল নির্মাণ ও সাজসজ্জার কাজ বুধবারের (২৭ জানুয়ারি) মধ্যে সমাপ্ত করতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বাংলা একাডেমির নির্দেশনা অনুযায়ী কাজও চলছে। মেলায় স্টল নির্মাণের কাজ পরিদর্শনে এসেছেন প্রকাশনা সংস্থা পঙ্খীরাজ’র প্রকাশক দেওয়ান আজিজ। এতোটাই ব্যস্ত সময় যাচ্ছে যে, এখানেও স্টল পরিদর্শনের পাশাপাশি বইয়ের সম্পাদনা করছেন।
বাংলানিউজকে তিনি জানান, তার স্টলের কাজ শেষ পর্যায়ে। আজ নির্মাণ কাজ শেষ হচ্ছে। সৌন্দর্যবর্ধনসহ সব কাজ বুধবার শেষ হবে।
এবারের মেলায় রিপোর্টারদের (সাংবাদিক) সংগঠন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) স্টল থাকছে। স্পটে কথা হয় ডিআরইউ’র সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমদের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের ৯০ ভাগ কাজ শেষ। বুধবার দুপুরের মধ্যে সব কাজ শেষ হবে।
এবারের বইমেলায় খুদে পাঠকদের জন্য শিশু কর্নারসহ নানা ধরনের নতুন আয়োজন থাকছে
শিশু কর্নার
প্রায় পাঁচ লাখ বর্গফুটের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় শিশুদের জন্য থাকছে বিশেষ আর্কষণ। যেখানে বই দেখা ও কেনার পাশাপাশি মনের আনন্দে খেলতেও পারবে শিশুরা। মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অংশে হচ্ছে এই শিশু কর্নার। যার নামকরণ করা হচ্ছে, বরেণ্য শিশু সাহিত্যিক রোকনুজ্জামান খান দাদাভাইয়ের নামে।
ইতোমধ্যে শিশু কর্নারের জন্য ৩৯টি শিশু প্রকাশনা সংস্থাকে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে তিন ইউনিটের স্টল রয়েছে ৩টি, দুই ইউনিটের ১০টি ও এক ইউনিটের ২৬টি স্টল রয়েছে।
থাকছে ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলার প্রতিনিধি
বিশ্বের বৃহৎ বইমেলা ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলার আয়োজকদের দুইজন প্রতিনিধি এবারের বইমেলায় উপস্থিত থাকবেন। তারা ফ্রাঙ্কফ্রুর্ট ও একুশে গ্রন্থমেলার অভিজ্ঞতা বিনিময় করবেন। একই সঙ্গে এবারের মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলা ভাষায় বক্তব্য রাখবেন যুক্তরাজ্যের জো উইন্টার ও চেক প্রজাতন্ত্রের রিবেক মার্টিন।
এবার বইমেলা নান্দনিক ও রুচিসম্পন্ন করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলা একাডেমিও।
এ বিষয়ে জালাল আহমেদ বাংলানিউজকে জানান, মেলাকে নান্দনিকভাবে সাজানো হচ্ছে। মেলা প্রাঙ্গণের খোলা জায়গায় ফুলের গাছ দিয়ে সাজানোর পাশাপাশি স্থাপন করা হবে ফোয়ারাও। রাতের বেলা যেখান থেকে বের হবে রঙ-বেরঙের পানির ছটা।
তিনি জানান, এবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্ত মঞ্চটি মেলার অংশ হবে। এখানে বাংলা একাডেমির সহযোগিতায় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের আয়োজনে মাসব্যাপী পথনাটক প্রদর্শিত হবে। আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে একাডেমি প্রাঙ্গণের মেলা মঞ্চে। যা প্রজেক্টরের মাধ্যমে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেও প্রদর্শিত হবে।
এছাড়াও মেলা উপলক্ষে মেলা প্রাঙ্গণের রাস্তা নতুনভাবে রাঙানোর কাজ করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।
বাংলাদেশ সময়: ০১০৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০১৫
এসইউজে/এসএস