ঢাকা: হাতের আঙুলে গোনা আর ক’টা দিন বাদেই বাঙালির প্রাণের অমর একুশে গ্রন্থমেলা। ভাষার মাসের প্রথম দিন থেকেই মেলার শুরু।
প্রকাশকরা বলছেন, তারা প্রস্তুত প্রথম দিন থেকেই মেলা জমিয়ে তুলতে। এবার আগেভাগে কাজ শেষের চিন্তা নিয়ে বই করেছেন অনেকেই। ফলে প্রায় প্রতিটি প্রকাশনীই বেশ কিছু নতুন বই মেলার প্রথম দিনই পাঠক-দর্শনার্থীদের উপহার দিতে পারবেন। এছাড়া বর্তমানে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিও অনুকূলে- সব মিলিয়ে আশাবাদী তারা।
ভাষা প্রকাশের কর্ণধার প্রকাশক মিজান রহমান বাংলানিউজকে বলেন, এবারের বইমেলায় হবে আমাদের কাঙ্ক্ষিত উৎসব। সববয়সী পাঠক-লেখকের মিলনমেলায় ভরে যাবে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, এমনটাই প্রত্যাশা করছি।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে মেলার কাজ ভালোই এগিয়েছে। আর বড়জোর তিন দিনের মধ্যেই সব গুছিয়ে যাবে মনে হচ্ছে।
মেলায় ভাষা প্রকাশনীর বিশেষত্ব কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা কিছু সিরিজ বই করেছি। নির্বাচিত কবিতার সিরিজ, গল্প সিরিজ, প্রবন্ধ এবং জীবনী সিরিজ। যা সম্পাদনা করেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। পাঠকদের জন্য এটি আমাদের আকর্ষণ। এছাড়া সব মিলিয়ে ৪০টি নতুন বই আনছি আমরা। সেই সঙ্গে গত বছরের (২০১৫ সাল) উল্লেখযোগ্য বই কেনার সুযোগ তো থাকছেই।
কথা হয় কাকলী প্রকাশনীর এ কে নাসির আহমেদের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, কাকলী থেকে এবার প্রকাশিতব্য অর্ধেকের বেশি বই ছাপানো প্রায় শেষ। বাকি অর্ধেকের কাজ পুরো দমে এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আশা করেন, এ বছর মেলা জমবে ভালো, বই বিক্রিও হবে অন্য বারের তুলনায় বেশি।
প্রকাশনা সংস্থা শব্দশৈলীর প্রকাশক ইফতেখার আমিন জানালেন, তার প্রকাশনীর এবছরের প্রতিপাদ্য তারুণ্যের বইমেলা-২০১৬। মেলায় স্টল নম্বর-৪৩৪-৪৩৫-৪৩৬। তরুণ লেখক-লেখিকার ৪০টি নতুন বইয়ের কাজ করছেন তিনি এবার।
আমিন বাংলানিউজকে বলেন, সবগুলো বই মেলার প্রথম সপ্তাহে আনা সম্ভব হচ্ছে না। পুরো মাসজুড়েই বইগুলো আসতে থাকবে। তবে প্রথম সপ্তাহে ১০ থেকে ১২টি বই পাঠকরা পাবেন। মূলত ১৫/১৬ জন পৃথক মানুষের কাজের সমন্বয়ে একটি বই তৈরি হয়, এতে সময় দেওয়া প্রয়োজন, কারণ প্রশ্ন আছে মানেরও।
এদিকে, বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির পরিচালক ও জনপ্রিয় প্রকাশনী অনন্যার স্বত্বাধিকারী মনিরুল হক বাংলানিউজকে বলেন, আর মাত্র ২৫ শতাংশেরও কম কাজ বাকি। এবার আমাদের চাওয়া খুব সুন্দর, উৎসবমুখর পরিবেশে মেলা পরিচালনার। সে জন্য আশা করছি যথেষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।
ক্রেতা-দর্শনার্থীরা যেন স্বাচ্ছন্দ্যের ঘোরাফেরা করতে পারেন সে বিষয়ে তিনি বলেন, ধুলাবালু যাতে না হয় সে জন্য পর্যাপ্ত পানি দেওয়া, ছুটির দিনগুলোতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা যাতে আরও বেশি থাকে- সর্বোপরি মানুষ এসে ঠিক মতো বই দেখে-খানিক পড়ে কিনতে পারেন আমরা সেদিকে নজর দিচ্ছি।
নিরাপত্তার ইস্যু কাটিয়ে সাবলিলভাবে সাধারণ পাঠক-লেখকের মিলন মেলায় সমাগম, বাঙালির কৃষ্টি-ঐতিহ্যের প্রবাহমানতা, বাংলা ভাষার প্রতি মমত্ববোধ- এসব কিছুর একটি প্রতীক হয়ে ওঠা অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০১৬ প্রাণ ছুঁয়ে যাক প্রত্যেকের- এমনটাই প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।
বাংলাদেশ সময়: ০৮১৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৬
আইএ