অমর একুশে গ্রন্থমেলা থেকে: স্টলে ভিড় জমে বইয়ের গুণে, সেটাই স্বাভাবিক। তবে কোনো কোনো স্টলের ভিড় বাড়ে তার বাহ্যিক সৌন্দর্যের গুণেও।
অমর একুশে গ্রন্থমেলায় এবারও রয়েছে বেশ কিছু নজরকাড়া স্টল। ১৫টি প্যাভিলিয়নসহ ৩৭৬টি স্টলের মধ্যে ২৭৬টি স্টল মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। আর সৌন্দর্যের বিচারে এদিকের স্টলগুলোকেই সেরা বলছেন আগতরা।
স্টলের বিন্যাসে প্রকাশকদের রুচি টের পান বলে জানান মিরপুর থেকে আসা কলেজ শিক্ষার্থী সুরাইয়া হাবিব।
সোমবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) মেলার অষ্টম দিন। শুরুর পর থেকে এ আটদিন মেলা ঘুরে দেখা যায়, শিশুদের আগ্রহের শীর্ষে থাকা সিসিমপুর-এর স্টলটি ইতোমধ্যে দৃষ্টি কেড়েছে সবার। এছাড়া ৬০৯ নম্বর স্টল টোনাটুনি প্রশংসিত হয়েছে। বড় আকারে তৈরি টোনাটুনি, গাছ দেখে খুশি শিশুরা।
অন্যপ্রকাশ, অনুপম, কাকলী, তাম্রলিপি, আফসার ব্রাদার্স সেজেছে জননন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ ও মুহম্মদ জাফর ইকবালের ছবিতে। স্টলের বিক্রেতারা বলছেন, লেখকরাই তাদের স্টলের মূল আকর্ষণ। তাদের ছবি থাকলে আর বাহুল্য বিন্যাসের প্রয়োজন হয় না। কারণ, পাঠকরা তাদের ভালোবাসেন।
পাঞ্জেরি’র স্টলের দুই পাশে কার্টুন চরিত্র সাঁটা রয়েছে। সেলফি তুলতে অনেকেই সেখানে ভিড় করছেন। সে সঙ্গে স্টলে ঢুকে কেনাকাটাতো রয়েছেই। এখানে শিক্ষার্থীদের ভিড় বেশি হয় বলে জানান কর্মীরা।
বড় আকারের ‘ণ’ নিয়ে আছে মূর্ধণ্য স্টল। চোখে পড়বে সেটিও।
সেলিনা চত্বরের কাছেই ৮ নম্বর প্যাভিলিয়নে ‘ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড’। গণ্যমান্য ও বিশিষ্টদের ছবি নিয়ে সাজানো নান্দনিক স্টলটি। স্টলটি মোটা গ্রন্থের আকৃতিতে গড়া। ভেতরে লাইব্রেরির মতো করে বইগুলো সাজানো। দাঁড়িয়ে ভেবে-চিন্তে পছন্দ করার সুবিধা পাচ্ছেন ক্রেতারা।
কথাপ্রকাশ-এর স্টলটি লাল-কালো রঙে সাজানো, রঙের ব্যবহার দৃষ্টিতে শান্তি দেয়।
এছাড়া মাওলা ব্রাদার্স, পাঠক সমাবেশ বেশ গোছানো স্টল।
আবিস্কার-এর ২০২ নম্বর স্টলটি ছোট্ট। কিন্তু চোখে পড়ে সামনে ঝুলানো পাখির খাঁচাটি। সেখানে প্রাণহীন পাখিটির নিচে কাগজে লেখা- ‘আমিও পড়তে চাই’।
উদ্যানের বটগাছের অদূরে বাংলা একাডেমির স্টলটি বর্ধমান হাউজের মতো করে তৈরি, চোখের তৃপ্তি মেটায়। মন চলে যায় অতীতে।
সময় প্রকাশনের স্টলটি জব্বার চত্বরের কাছে, মোটা মোটা বইয়ের আকৃতি দেওয়া হয়েছে।
রূপ প্রকাশনের স্টলটি কাটা বাঁশ দিয়ে সাজানো, রয়েছে লাল রঙ ও দৃষ্টি মনোরম আলোর ব্যবহারও। এছাড়া জনপ্রিয়’র স্টলটির সৌন্দর্যও প্রশংসনীয়।
বাংলা একাডেমি অংশের স্টলগুলো সেভাবে সাজানো না হলেও এর মধ্যে বাংলাদেশ টেলিভিশনের ছোট্ট স্টলটির দিকে চোখ যায়। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের স্টলটি গোলাকার, সদস্যদের উপস্থিতিতে সেটি আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।
উন্মাদ-এর ছোট্ট স্টলটিতে তরুণদের ভিড়। সামনের মোটা দুটি দাঁত বের করা উন্মাদের পরিচিত ও জনপ্রিয় ছবিটি স্টল সজ্জায় পূর্ণতা এনেছে। ‘লেখক কুঞ্জ’ তৈরি হয়েছে বেশ সুন্দর রঙের ব্যবহারে।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের ১১ ও ১২ নম্বর স্টল, বসুন্ধরা গ্রপ, বইঘরের স্টলও নান্দনিকভাবে সাজানো।
ব্রিটিশ কাউন্সিলের স্টলটি কাটা বাঁশ ও বাঁশে তৈরি চালুনি দিয়ে সাজানো, প্রশংসা পেয়েছে সেটিও।
বাংলাদেশ সময়: ২০১২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০১৬
এসকেএস/এএসআর