ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

বইমেলা

দেশে দেশে বইমেলা

বইমেলা ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৬
দেশে দেশে বইমেলা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই অনুষ্ঠিত হয় বইমেলা। বাংলাদেশের বইমেলা কবে, কোথায়, কীভাবে হয় তা আমাদের অনেকেরই জানা।

তবে বাংলাদেশের সঙ্গে অন্যদেশের পার্থক্য হচ্ছে, পুরো এক মাসব্যাপী বইমেলা আর কোথাও হয় না। কেবল বাংলাদেশেই এতো দীর্ঘসময় বইমেলা হয়। মাসব্যাপী চললেও বইমেলার আবেদন যেনো ফুরায় না।

বর্তমানে বাংলাদেশে বাংলা একাডেমির আয়োজনে চলছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা, ব্যাপকভাবে যা বইমেলা নামে পরিচিত। মেলার এ মাসে আসুন জেনে নেই বিভিন্ন দেশের বইমেলা সম্পর্কে।

আন্তর্জাতিক কলকাতা পুস্তক মেলা
আমাদের পাশের দেশ ভারতেও প্রতিবছর আয়োজিত হয় বইমেলা। পাঠক উপস্থিতির দিক থেকে পৃথিবীর সেরা বইমেলা বলা হয় আন্তর্জাতিক কলকাতা পুস্তক মেলাকে। এর প্রচলিত নাম কলকাতা বইমেলা। ১৯৭৬ সালে শুরু হয় এ বইমেলা। সারাবিশ্বের বইমেলার মধ্যে এর স্থান তৃতীয়। প্রতি বছর এ বইমেলায় প্রায় তিন লাখ পাঠক সমাগম হয়।

জানুয়ারির শেষ বুধবার থেকে ফেব্রুয়ারির প্রথম রোববার পর্যন্ত ১২ দিনব্যাপী আয়োজিত এ মেলায় বাংলাদেশের জন্যও আলাদা একটি প্যাভিলিয়ন থাকে। কলকাতা বইমেলার ব্যাপক জনপ্রিয়তার জন্য ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলা কর্তৃপক্ষ একে ‘গেস্ট অব অনার’ হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছে। বই বিক্রিকে এই মেলায় প্রাধান্য না দিয়ে পাঠক উপস্থিতিকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।

ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলা
পৃথিবীর সবচেয়ে পুরনো বইমেলার নাম ‘ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলা’। পঞ্চাশ শতকে মুদ্রণযন্ত্র আবিষ্কারক ইয়োহানেস গুটেনবার্গ নিজের ছাপাখানার যন্ত্রাংশ ও ছাপানো বই বিক্রির জন্য ফ্রাঙ্কফুর্টে আসেন। তার দেখাদেখি শহরের স্থানীয় কিছু বই বিক্রেতাও তাদের প্রকাশিত বই নিয়ে বসতে থাকেন। বইগুলো কিনতে বিভিন্ন জায়গা থেকে পাঠক আসতে শুরু করে।

এরপর থেকে জমে উঠতে থাকে ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলা। ১৯৪৯ সালে মেলাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান করে জার্মান প্রকাশক সমিতি। এর পনের বছর পর ১৯৬৪ সালে মেলাটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায়। পাঁচ দিনব্যাপী এই মেলা শুরু হয় অক্টোবর মাসে। মেলার আয়োজন করে জার্মান পাবলিশার অ্যান্ড বুক সেলার অ্যাসোসিয়েশন। বর্তমানে এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় বইমেলা।

লন্ডন বইমেলা
লন্ডনের এ বইমেলায় সবচেয়ে বেশি বই প্রকাশিত হয়। মেলা আয়োজনের কোনো নিদির্ষ্ট তারিখ ও স্থান না থাকলেও সারাবিশ্বের বইপ্রেমীদের জন্য এ মেলার গুরুত্ব অনেক। এর কারণ, এ বইমেলা উপলক্ষে প্রকাশকরা বিভিন্ন বিষয়ে দুলর্ভ সব প্রকাশনা বের করেন।

একশোটিরও বেশি দেশ থেকে আগত পঁচিশ হাজারের বেশি প্রকাশক, বই বিক্রেতা, এজেন্ট, লাইব্রেরিয়ান ও গণমাধ্যমকর্মী এ মেলায় অংশ নেন। মেলায় পাঠকের চেয়ে প্রকাশকদের বেশি সমাগম হয়ে থাকে।

বুয়েনোস এইরেস বইমেলা
সারাবিশ্বের সেরা পাঁচটি বইমেলার মধ্যে অন্যতম একটি হলো আর্জেন্টিনার বুয়েনোস এইরেস বইমেলা। ১৯৭৫ সাল থেকে এ শহরে অনুষ্ঠিত হয় মেলা। মেলা শুরু হয় এপ্রিল মাসে। প্রায় দেড় লাখ লোক সমাগম হয় এ মেলায়।

মস্কো বইমেলা
১৯৭৭ সালে সেপ্টেম্বর মাসের প্রথমদিন থেকে শুরু হয় মস্কো বইমেলা। এরপর থেকে প্রতি বছর সেপ্টেম্বরের তিন তারিখ থেকে সাত তারিখ পর্যন্ত মস্কো এক্সিভিশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে এ মেলা। আমাদের একুশে বইমেলার শিশু কর্নারের মতো মস্কো বইমেলাতেও শিশুদের জন্য রয়েছে ‘লেটস রিড’ নামে একটি কর্নার। একুশে বইমেলার মতো মস্কো মেলা শেষেও লেখকদের সম্মানসূচক পুরস্কার দেওয়া হয়।

কায়রো বইমেলা
কায়রো বইমেলার যাত্রা শুরু হয় ১৯৬৯ সালে। এটি আরব বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন ও বৃহৎ বইমেলা। প্রতিবছর জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে মিশরের মাদিনাত নাসারের কায়রো ইন্টারন্যাশনাল ফেয়ার গ্রাউন্ডে শুরু হওয়া এ মেলা চলে তিন সপ্তাহ। মেলায় আরবি, ইংরেজি এবং আরও নানান ভাষার বই পাওয়া যায়। মেলায় একশোর বেশি দেশ অংশ নেয়। লোক সমাগম হয় প্রায় দুই লাখ।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৬
এডিএ/এসএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।