ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

বইমেলা

তারুণ্যের মেলায় তারুণ্যের বই

হুসাইন আজাদ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৬
তারুণ্যের মেলায় তারুণ্যের বই (ওপরে বাঁ থেকে) ইকবাল খন্দকার, ইশতিয়াক আহমেদ, লুৎফর হাসান, কাসাফাদ্দৌজা নোমান, (নিচে বাঁ থেকে) ফরিদুল ইসলাম নির্জন, সোহেল নওরোজ, হাবীবাহ নাসরীন ও ইভান সাইর

বইমেলা তারুণ্যের। তারুণ্যের বইমেলা।

এই বইমেলাকে বলা হয় প্রজন্মে প্রজন্মে, সংস্কৃতিতে সংস্কৃতিতে এবং লেখকে-পাঠকে সেতুবন্ধন তৈরির মাধ্যম। বরাবরের মতোই এবারের বইমেলায়ও প্রকাশ হয়েছে প্রজন্মের হাল ধরা তরুণ লেখকদের বই। খ্যাতিমান লেখকদের বইয়ের পাশাপাশি মেলায় তরুণ লেখকদের বই নিয়েও আগ্রহ দেখা যাচ্ছে বইপ্রেমীদের মধ্যে। এবারের মেলায় বই নিয়ে আসা আট তরুণ লেখক-কবির সঙ্গে কথা বলে তাদের খবরাখবর জানাচ্ছেন সিনিয়র নিউজরুম এডিটর হুসাইন আজাদ।
 
১০টি নতুন বই নিয়ে ইকবাল খন্দকার
তার পরিচয় একাধারে কথাসাহিত্যিক, উপস্থাপক, স্ক্রিপ্ট রাইটার, গীতিকার। তবে এই অনেক পরিচয়ের মধ্যে লেখক পরিচয়েই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য তার। প্রজন্মের আলোচিত এই লেখক হলেন ইকবাল খন্দকার। দেশের শীর্ষস্থানীয় পত্রিকাগুলোতে তিনি নিয়মিত লিখছেন। এ পর্যন্ত তার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৪১টি।
এবারের বইমেলায় ইকবাল খন্দকার তার পাঠকদের জন্য নিয়ে এসেছেন নতুন ১০টি বই। এই বইগুলোর মধ্যে ৭টিই শিশু-কিশোর উপযোগী।

ইকবাল খন্দকার জানান, ৭টি শিশু-কিশোর উপযোগী বইয়ের মধ্যে তাম্রলিপি থেকে প্রকাশিত হয়েছে ‘ক্লাস লিডার’ উপন্যাসটি। কথাপ্রকাশ থেকে বের হয়েছে দু’টি উপন্যাস। এরমধ্যে একটি ভৌতিক, অন্যটি গোয়েন্দা। ভৌতিক উপন্যাসটির নাম ‘অভিশপ্ত স্টেশন’। আর গোয়েন্দা উপন্যাসটির নাম ‘রহস্যময় গোয়েন্দা’। অনিন্দ্য প্রকাশ থেকে বের হয়েছে গল্পের বই ‘ভুতুড়ে বটগাছ’। জয়তী প্রকাশনী প্রকাশ করেছে থ্রিলার উপন্যাস ‘ভয়ঙ্কর ডাকুবাড়ি’। আরও একটি থ্রিলার উপন্যাস প্রকাশ করেছে কলি প্রকাশনী। নাম ‘দুর্ধর্ষ মুখোশধারী’। আর রম্যগল্পের বই ‘গড়াগড়ি হাসি’ প্রকাশ করেছে আদিগন্ত প্রকাশন।

ইকবাল খন্দকারের অন্য তিনটি বইয়ের মধ্যে ‘তুমি ছাড়া একলা আমি’ নামে রোমান্টিক ধাঁচের একটি উপন্যাস প্রকাশ করেছে বর্ষা দুপুর প্রকাশনী। ‘ছুঁয়ে দাও বালিকা’ নামে আরেকটি উপন্যাস এসেছে দেশ পাবলিকেশন্স থেকে। আর মেধা পাবলিকেশন্স প্রকাশ করেছে ‘একটি বেওয়ারিশ লাশ’ নামে একটি গল্পের বই।
 
ইশতিয়াক আহমেদ ও তার ‘সিনেমা হলের গলি’
ইশতিয়াক আহমেদ। এ প্রজন্মের পড়ুয়াদের কাছে নামই তার পরিচয়। একাধারে সাংবাদিক, লেখক, গীতিকার, নাট্যকার, স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা। এবারের বইমেলায় প্রকাশ হয়েছে তার নতুন উপন্যাস ‘সিনেমা হলের গলি’। বইটি প্রকাশ করেছে দেশ পাবলিকেশন্স। মেলার ৪০৭-৪০৮ নং স্টলে পাওয়া যাচ্ছে ‘সিনেমা হলের গলি’।
 
নতুন এ বইয়ের নামকরণ প্রসঙ্গে ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা নারায়ণগঞ্জে। ফুল, পাখি, জোছনা দেখার সুযোগ হয়েছে কম। যার দরুণ বইয়ের নাম রাখার সময় জোছনা, জোনাক, মেঘের চেয়ে মাফলার, নেইলকার্টার, আবাসিক হোটেল অবধারিতভাবেই আগে মাথায় আসে। সিনেমা হলের গলি একটি উপন্যাস।
 
উপন্যাসটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এদেশের হাজার গলির মতো এটির মূল নাম হয়তো অন্যকিছু ছিলো। কিন্তু আমরা চিনি সিনেমা হলের গলি হিসেবে। গলির মোড়ে সিনেমা হলে অনেক গল্পে নির্মিত সিনেমা আসে। বিশাল পর্দায় প্রদর্শিত সে গল্প দেখতে হলে হাজারো দর্শক আসেন। কিন্তু কারও জানা হয় না নির্মাণের অভাবে এই গলির ভেতরে তারা ফেলে যাচ্ছেন কত সিনেমা। কত জীবনের গল্প। এমন কিছু জীবনের গল্প নিয়েই আমার ‘সিনেমা হলের গলি’।
 
ইশতিয়াক আহমেদ তার লেখনী প্রসঙ্গে বলেন, আমি আসলে নিজের গল্পটা শোনানোর জন্য লিখি। চারপাশ থেকে দেখা এবং কল্পনাপ্রসূত গল্পগুলোই আমার লেখার মাধ্যমে জীবন পায়।
 
ইশতিয়াক আহমেদের প্রথম বই প্রকাশিত হয়  ২০০৯ সালে। সেটি ছিল গল্পগ্রন্থ, নাম  ‘হোটেল বনলতা আবাসিক’। এরপর ডেথ সার্টিফিকেট, মাফলার, নেইলকার্টার, আপেল শাস্ত্রসহ প্রকাশিত হয়েছে মোট নয়টি বই।
 
লুৎফর হাসান ও তার ৩ নতুন বই
প্রজন্মের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও সুরকার লুৎফর হাসান। গায়কী তার যেমন জনপ্রিয়, সমান সমাদৃত তার কলমের ধারও। সংগীত জগতের ব্যস্ততার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লুৎফর হাসান এবারের বইমেলায়ও তার ভক্তদের জন্য নিয়ে এসেছেন বই। তিনটি বই প্রকাশ হয়েছে এবার তার।
 
দেশ পাবলিকেশন্স থেকে বেরিয়েছে উপন্যাস ‘নীল মলাটের গল্প’। প্রিয়মুখ প্রকাশনী থেকে বেরিয়েছে গল্পগ্রন্থ ‘তোমার খোলা পিঠে আমার আততায়ী মেঘ’। আর ‘চৈতন্য প্রকাশনী’ থেকে বেরিয়েছে ভালোবাসার পদ্য ‘ডাকবাক্সের ডানা’।
 
তিনটি বই সম্পর্কে লুৎফর হাসান বলেন, নীল মলাটের গল্প উপন্যাসে সাতান্ন বছর বয়সের এক জনপ্রিয় লেখকের নানারকম প্রেমের জটিলতা উঠে এসেছে। তোমার খোলা পিঠে আমার আততায়ী মেঘ গল্পগ্রন্থে জায়গা হয়েছে বিভিন্ন সময়ে লেখা ছোট গল্পের।   আর ডাকবাক্সের ডানা আদতে লিরিকের বই। যেগুলো অপ্রকাশিত লিরিক।
 
লুৎফর হাসানের প্রথম বই প্রকাশ হয় ২০০৯ সালে। সেটি ছিল উপন্যাস, নাম হেলেঞ্চাবতী।   এরপর প্রতি মেলায় উপন্যাস প্রকাশ করে আসছেন তিনি। এগুলো হলো সগৌরবে চলিতেছে, ঝিনাইপাখি, ফেকুয়া, ঘাসফুল ও সন্ধ্যামালতীরা,  আগুনভরা কলস, ঠিকানা রাত্রিপুর।  
 
কাসাফাদ্দৌজা নোমান ও ‘জীবন বৃত্তান্তে নেই’
সময়ের জনপ্রিয় একজন লেখকের নাম কাসাফাদ্দৌজা নোমান। নানামাত্রিক লেখায় তিনি ইতোমধ্যে পাঠকের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। বিজ্ঞাপনী সংস্থা রেড রকেটে লেখক হিসেবে কাজ করছেন। এবারের বইমেলায় প্রকাশ হয়েছে তার ‘প্রথম দ্বিতীয়’ বই ‘জীবন বৃত্তান্তে নেই’। এটি উপন্যাস, প্রকাশ করেছে দেশ পাবলিকেশন্স। মিলছে মেলার ৪০৭-৪০৮ নম্বর স্টলে।
 
কাসাফাদ্দৌজা নোমান তার ‘জীবন বৃত্তান্তে নেই’ নিয়ে বলেন, জীবন বৃত্তান্ত খুব গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। যেটা দেখে বিচার করে মূল্যায়ন করা হয়। অথচ মানুষ জীবনে যেসব বাধায় পড়ে, যেসব চ্যালেঞ্জ আসে, যেসব অনুভূতি পার করে জীবন পাড়ি দেয় সেসব জীবন বৃত্তান্তে থাকে না। এটাই উপন্যাস। এইটাই গল্প।
 
তার প্রথম বই প্রকাশ হয় গতবারের বইমেলায়। নাম ‘অদ্ভুত তুমিহীনতায় ভুগছি’। ইংরেজি আই মিস ইউ’র বাংলা হিসেবে এ নাম দেওয়া হয়। সেটি ছিল গল্পগ্রন্থ। প্রকাশ করে জাগৃতি প্রকাশনী।
 
স্কুল মাঠে ভূতের মেলা ও ফরিদুল ইসলাম নির্জন
ফরিদুল ইসলাম নির্জন সময়ের অন্যতম প্রতিভাবান একজন লেখক। হিসাববিজ্ঞানে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী নির্জন বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করলেও ধ্যান তার সাহিত্য নিয়ে। সে কারণে দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রায় সব দৈনিক পত্রিকায় তার লেখা চোখে পড়ে। বিচিত্র বিষয়ে ফিচার-নিবন্ধ লিখলেও বিশেষ আগ্রহের জায়গা গল্প ও কবিতা। এবারের বইমেলায় প্রকাশ হয়েছে তার প্রথম বই ‘স্কুল মাঠে ভূতের মেলা’। এটি গল্পগ্রন্থ। শিশু-কিশোর উপযোগী এ বই প্রকাশ করেছে দেশ পাবলিকেশন্স।
 
ধ্রুব এষ’র প্রচ্ছদে বইটির অলংকরণ করেছেন কাওছার মাহমুদ। এগারটি ভিন্ন স্বাদের গল্প নিয়ে ‘স্কুল মাঠে ভূতের মেলা’ সাজিয়েছেন লেখক।
 
ফরিদুল ইসলাম নির্জন বলেন, শৈশব থেকেই আমি লেখালেখি করি। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লিখলেও গল্প লিখতে আমার বেশ ভাল লাগে। বিশেষ করে শিশু সাহিত্যর প্রতি রয়েছে হৃদয়ে আলাদা জায়গা। আর এই আলাদা জায়গা থেকেই ‘স্কুল মাঠে ভূতের মেলা’ লেখা হয়েছে।
 
প্রথম বই সম্পর্কে তিনি জানান, প্রতিটি গল্পই পাঠককে কাছে টানবে। ভয়ঙ্কর ভূত, মজায় ভরপুর আর সাহসিকতার গল্প নিয়ে ‘স্কুল মাঠে ভূতের মেলা’। এই যেমন বইয়ের প্রথম গল্পের নাম ‘ভূতের সঙে সেলফি’। এতে একবিংশ শতাব্দীর সেলফি ভূতের সঙ্গে কীভাবে তুলতে হবে, কোথায় তুলতে হবে তা মজারভাবে তুলে ধরা হয়েছে।   বইয়ের অন্য গল্পগুলো হলো ‘স্কুল মাঠে ভূতের মেলা’, ‘গুরু ভাই’, ‘নীলু আর ডাবল জিরো পায় না’, ‘আজ নিশার বিয়ে’, পরীর সঙে পরীস্থানে’, ‘জুতা চুরি’, ‘কবুতর’, ‘দাওয়াত’, ‘আমপরী’ ও ‘লাল সাইকেল’।
 
সোহেল নওরোজের ‘ডানাভাঙা শালিকের সুখ’
পেশায় সরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা। নেশায় তার সাহিত্য। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালে সোহেল নওরোজের আগ্রহ জন্মে প্রকৃতি, পরিবেশ আর জীবনঘনিষ্ঠ বিষয়ে। মনের খেয়ালে নিজের মতো করে সেইসব বলতে কলম ধরেন। তারপর থেকে লিখে চলেছেন। জাতীয় দৈনিকগুলোর সাহিত্য ও পাঠক পাতায় সোহেল নওরোজ এখন তুমুল পরিচিত নাম।
 
এবারের বইমেলায় প্রকাশ হয়েছে তার দ্বিতীয় বই। নাম ‘ডানাভাঙা শালিকের সুখ’। এটি গল্পগ্রন্থ, প্রকাশ করেছে দেশ পাবলিকেশন্স। ৮০ পৃষ্ঠার বইটিতে স্বাদের মোট ১৬টি গল্প স্থান পেয়েছে।
 
সোহেল নওরোজ তার ‘ডানাভাঙা শালিকের সুখ’ নিয়ে বলেন, যাপিত জীবনের নানামুখী দুঃখ ভোলার প্রয়াসই ডানাভাঙা শালিকের সুখ। বোধের দরজায় উঁকি দেওয়া মন হঠাৎ করে রোদবালিকার জন্য দ্রবীভূত হয়। ছায়াশরীরী নূপুরের নিক্কন শুনতে পায় কেউ। বাদলদিনে অপ্রত্যাশিত হয়ে ওঠা তৃতীয় কদমটি পেতে পৃষ্ঠার মতো পথও বদলাতে হয়। চেনা সন্ধ্যাগুলো কারো মনে বিষণ্নতার সুর তোলে। যেন তার পৃথিবীতে রাত না নামলেই ভালো হতো! অথচ রোজ নিয়ম করে অন্ধকার ঝাঁপি খোলে। কতকিছুতেই তো ব্যত্যয় ঘটে! কী এমন হতো মানুষের মতো প্রকৃতিও উল্টেপাল্টে গেলে! প্রকৃতি নিজে বদলায় না, মানুষকে দিয়ে শোধ নেয়।
 
হাবীবাহ নাসরীনের ‘কবিতা আমার মেয়ে’
এ প্রজন্মের অন্যতম প্রতিভাবান কবি মনে করা হয় তাকে। অথচ পেশা তার কবিতা চর্চার প্রায় বিপরীত মেরুর সাংবাদিকতা। কিন্তু দুই ‘মেরু’ই জয়ে দারুণ গতিতে এগিয়ে চলেছেন হাবীবাহ নাসরীন। সাংবাদিকতার তুমুল ব্যস্ততার মধ্যেও এবারের বইমেলায় তিনি নিয়ে এসেছেন প্রথম কাব্য ‘কবিতা আমার মেয়ে’। এটি প্রকাশ করেছে দেশ পাবলিকেশন্স।
 
হাবীবাহ তার কাব্য সম্পর্কে বলেন, ১৯৯৭ সাল থেকে লেখালেখি শুরু।   তারপর দীর্ঘ ঊনিশ বছর ধরেই লিখছি। যখন যা লিখেছি, ভালোবেসে লিখেছি। লিখতে লিখতে মনে হয়েছে, আমার মা-ও তো আমাকে এভাবেই ভালোবাসে! মেয়েরা যখন কিশোরী বয়সে আসে তখন মায়ের কাছে অনেক কিছুই লুকোয়, প্রথম প্রেম, প্রথম পাওয়া চিঠি। আমার কবিতাও তেমনি বড় হতে হতে আমার সঙ্গে অচেনা আচরণ শুরু করলো! কবিতার চোখের ভাষা আর বুঝতে পারছিলাম না! কবিতাকে বুঝতে গিয়েই সৃষ্টি হলো নতুন কিছু কবিতা। আর তারপর লেখালেখির দীর্ঘ ঊনিশ বছর পরে এসে বই আকারে এলো 'কবিতা আমার মেয়ে'।
 
তিনি বলেন, বইয়ের ভেতরের কবিতাগুলো কেমন, তা পাঠকেরাই ভালো বলতে পারবেন। তবে আমার মনে হয়, সাহিত্যের একজন স্রষ্টা হিসেবে নিজেকে পরিচয় করিয়ে দিতে গিয়ে কিছুটা তাড়াহুড়ো করে ফেলেছি। আরও কিছুটা সময় নিয়ে বইটি করা যেতো। তবু আমার কোনো কবিতা, অন্তত একটি লাইনও পাঠকের যদি ভালো লাগে, সেটুকুই আমার স্বার্থকতা। সমস্ত জীবনে আমার একটাই শুধু লোভ, ভালোবাসার।
 
ইভান সাইরের ‘ভালোবাসা এই পথে গেছে’
আর জে, উপস্থাপক, অভিনেতা এবং লেখক। এমন আরও পরিচয় আছে। নাম তার ইভান সাইর। পর্দার সামনে-পেছনে অনেক ব্যস্ততার মধ্যেও সমানতালে সাহিত্যচর্চা করছেন। এবারের বইমেলায় ভালোবাসার পথ দেখিয়ে একটি বই এনেছেন তিনি। নাম ‘ভালোবাসা এই পথে গেছে’। গল্পগ্রন্থ এটি, প্রকাশ করেছে দেশ পাবলিকেশন্স। এর আগে দু’টি কাব্য লেখেন তিনি।
 
নতুন বই প্রসঙ্গে ইভান সাইর বলেন, ভালোবাসা এই পথে গেছে নামটি হেলাল হাফিজের ‘উৎসর্গ’ কবিতা থেকে নেওয়া। কিন্তু এই বইটি ছোটগল্পের মতন করে লেখা। সমসাময়িক নানান ঘটনার পাশ দিয়ে গেছে গল্পগুলো। এই আধুনিক জীবনে মানুষ প্রতিনিয়ত একা হয়ে পড়ছে। সময়ের পথে ছুটতে ছুটতে একসময় ভালোবাসার পথ হারিয়ে ফেলে। এখানে নানান গল্পে সেই পথের দেখা পাওয়া যায় হয়তো।
 
ইভানের কথা, পথ পথিকের সৃষ্টি করে না, পথিক পথের সৃষ্ট করে। আর এভাবেই ভালোবাসার জন্য মানুষ নয়, মানুষের জন্য ভালোবাসা। মানব মানবীর ভালোবাসাই ভালোবাসা নয়। ভালোবাসার অনেক পথ। যার ভেতরে ভালোবাসার ক্ষমতা নেই, সে জীবজন্তুর মত বাঁচে। মানব মানবীর ভালোবাসার বাইরেও কত কত ভালোবাসা আছে তার হিসাব করাটা বোকামি। যে মানুষ ভালোবাসা আকঁড়ে ধরে বাচঁতে চেয়েছে, সে পথহারা হয়েছে। অথচ যখন ভালোবাসা মানুষের কাছে এসেছে, তখন মানুষ মানুষ হয়ে উঠেছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৩৪১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৬
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।