ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বইমেলা

বাংলানিউজকে আহসান হাবীব

তরুণরাই বইয়ের ক্রেতা হিসেবে চমৎকার

সৈয়দ ইফতেখার আলম, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৬
তরুণরাই বইয়ের ক্রেতা হিসেবে চমৎকার ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

তিনি ‘উন্মাদ’ সম্পাদক আহসান হাবীব। বড় দুই ভাই কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ ও মুহম্মদ জাফর ইকবালের মতো ভক্ত কিন্তু তারও কম নয়।

বইমেলায় এলে তাকে ঘিরে সেলফির ভিড়-ভাট্টা এতোটাই জমে ওঠে যে পাশে ঘেঁষাই দায়! তবুও একান্ত আলাপে বাংলানিউজের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন বাংলানিউজের নিউজরুম এডিটর সৈয়দ ইফতেখার আলম।

বাংলানিউজ: বর্তমানে প্রযুক্তি এই যুগে বই পড়ার আগ্রহ একটু হলেও কমেছে কি?
আহসান হাবীব: প্রযুক্তি আসবেই। তবে বই পড়াকে প্রযুক্তি কমিয়ে দেবে, তার জন্য এখনও অনেক সময় বাকি। হাতে ধরে বই পড়ার আনন্দ এক জিনিস আর অনলাইনে পড়া অন্য জিনিস। বই হাতে নিয়ে পড়ার আনন্দই আলাদা-অতুলনীয়। আর সবচেয়ে বড় বিষয় নতুন বই তো আর অনলাইনে পাওয়া যাবে না, সে জন্য বইমেলার প্রহর গুনতে হবে— এই মেলা যে শুধু বইয়ের; তা না। এখানে মিলনমেলা জমে। তাই মেলাতেও মানুষের আগ্রহ অচিরেই কমবে না, যত দিন যাবে আরও বেশি বেশি মানুষ আসবে।

বাংলানিউজ: বইমেলার আর মাত্র দু’দিন বাকি, এবারের মেলা কেমন দেখলেন?

আহসান হাবীব: এবছর মেলা ভালোই গোছানো ছিলো। আর অবকাঠামোর দিক থেকে স্টল-প্যাভিলিয়নগুলো সুন্দরভাবে সেজেছে। সব জিনিসের একটা সৌন্দর্য দরকার। মেলা আরও যত সুন্দর হয়ে সাজবে মানুষকে তত কাছে টানবে।

বাংলানিউজ: মেলায় বই কেনাকাটা কেমন দেখছেন...

আহসান হাবীব: প্রতিবারই তরুণরা প্রচুর বই কেনে। তারা মেলার জন্য সারা বছর অপেক্ষাও করে। আমি তরুণদের নিয়ে আশাবাদী, তারা ক্রেতা হিসেবে চমৎকার। তাদের জন্যই আমাদের বই-সাহিত্য আরও বেশি দিন সজীব থাকবে। আরেকটি বিষয় হলো— শিশুদের বই কেনার ক্ষেত্রে অভিভাবকদের স্বল্প হলেও চাপ থাকে। বাবা-মা চান সহজ-সরল বই দিয়ে তাদের ভুলিয়ে বাড়ি নিতে, কারণ সৃজনশীল পড়াকে এখনও অনেকে বাড়তি চাপ মনে করেন। তাই শিশুরা নিজে পছন্দে বই কিনতেও পারে না। এছাড়া তারা মূলত প্রচ্ছদ দেখে কিনতে আগ্রহী হয়। কিন্তু তরুণরা তা নয়, তারা নিজস্ব পছন্দে যা ভালো লাগলো তাই কেনে।

বাংলানিউজ: রম্য-সাহিত্য নিয়ে কাজ করাদের মধ্যে আপনার নামটি অন্যতম, এই ধারায় আপনি এখন বয়োজ্যেষ্ঠও বটে, কেমন এগোচ্ছে বাংলা রম্য-সাহিত্য?

আহসান হাবীব: প্রথম থেকে যদি বলে তবে প্রতিটি পত্রিকারই এখন রম্য-ক্রোড়পত্র আছে। এখানে ভালো-ভালো কাজ হচ্ছে। প্রতিভা চর্চা হচ্ছে অনেক তরুণের। কার্টুনিস্টরা বেরিয়ে আসছে, তৈরি হচ্ছে রম্য লেখকও। সব মিলিয়ে আমি বলবো আমাদের দেশের রম্য-সাহিত্য বিকাশে পত্রিকার ক্রোড়পত্রগুলো সহায়ক ভূমিকা রাখছে। আর তরুণদের মধ্যে রম্যের ধাঁচে লেখার একটি শক্তি আমি দেখতে পাই। তারা ভালো করছে বলেই এতোগুলো পত্রিকার ক্রোড়পত্রের পাঠকপ্রিয়তায় আছে। আমি নিজেও উন্মাদ ম্যাগাজিন করতে গিয়ে দেখেছি— রম্য রচনায় তাদের মেধা কত দারুণ। এখন সব রকম সুবিধা তরুণরা পাচ্ছে, তাই আরও ভালো করতে হবে। এতো সুবিধাভোগেও আমাদের রম্য-সাহিত্য তরুণদের হাত ধরে নতুন স্থানে না পৌঁছালে দুঃখজনক হবে বিষয়টি।

বাংলানিউজ: আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

আহসান হাবীব: উন্মাদ ম্যাগাজিন বের করছি প্রায় ৪৪ বছর হলো। অনেক পুরনো এটি। আজকের শিশুদের দাদা-বাবারাও হয়তো এটি পড়েছেন, অনেকে এসে উন্মাদ নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন। এর একটি ঐতিহ্যও আছে। তা ধরে রাখতে চাই। আর আগামীতে ইচ্ছে আছে অ্যানিমেশন সিনেমা করার। যা হবে বাংলাদেশে প্রথম রম্য-শিশুতোষ অ্যানিমেশন।

এ বছর সাহিত্যিক, রম্য লেখক আহসান হাবীবের নতুন বই এসেছে পাঁচটি। সংকলিত বই আরও পাঁচটি। নতুন বইয়ের মধ্যে— রম্য রচনা ২টি, উপন্যাস ১টি, ছোটগল্প ১টি ও গ্রাফিক নভেল (কমিকস) ১টি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৬
আইএ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।