ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বইমেলা

কাজী আলিম-উজ-জামানের গল্পগ্রন্থ ‘সন্ধ্যায় ফেরার সময়’ মেলায়

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৭
কাজী আলিম-উজ-জামানের গল্পগ্রন্থ ‘সন্ধ্যায় ফেরার সময়’ মেলায় ‌‌‘সন্ধ্যায় ফেরার সময়’ গ্রন্থের কাভার ও লেখক, ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: কাজী আলিম-উজ-জামানের গল্পগ্রন্থ ‘সন্ধ্যায় ফেরার সময়’ প্রকাশিত হয়েছে অমর একুশে গ্রন্থমেলায়। এটি তার দ্বিতীয় গল্পগ্রন্থ।

বইটির তাবৎ বিষয় যেন গণমানুষেরই মনের কথাকে অম্লমধুর রম্য ভাষায় গল্পের জাল বোনে পাঠক-পাঠিকার জন্য। এটি এক অর্থে লেখক হিসেবে গল্পকারের সামাজিক দায়িত্ববোধ তথা বিপুল জনগোষ্ঠীর সার্বিক মুক্তির ভাষাকে চিত্ররূপ দিয়েছে।

গণমানুষের প্রত্যাশা এবং প্রাপ্তির বিস্তর ব্যবধানকে তিনি যেমন ফুটিয়ে তুলেছেন, তেমনি জুতসই শ্লেষের মাধ্যমে করেছেন তীব্র প্রতিবাদ। এ গ্রন্থের প্রতিটি গল্পের তাৎপর্যে নিয়মিত পাঠকের স্ব-স্বপ্নের সমর্থন রয়েছে। এর ভাষা তথা প্রকাশভঙ্গি চিত্তাকর্ষক। আর এর বিষয়বস্তু, বুনন কৌশল তথা সার্বিক মাল-মসলা পাঠকপ্রিয়তার দাবি রাখে নিঃসন্দেহে। কেননা, দুই মলাটের মধ্যে আবদ্ধ এ গল্পগুলো যুগপৎ গল্প হয়েও সত্য আর সত্য হয়েও গল্প।

কথায় বলে, ‘সময়ের এক ফোঁড়, অসময়ের দশ ফোঁড়’। এ গল্পগ্রন্থ যেন সময়ের এক ফোঁড় হিসেবেই প্রতিভাত হয়েছে।

উত্তম পুরুষে বলা ‘এই রোদ এই ছায়া’ গল্পে স্মৃতি-অনুষঙ্গের ভেতর দিয়ে যেতে যেতে বাস্তব-অবাস্তবের এক অদ্ভুত দোলাচলের মধ্যে থাকে প্রধান চরিত্রটি। স্ত্রী দরজায় দোরঘণ্টি বাজালে সে শব্দও বিভ্রম মনে হয় তার।

‘ছায়াদের ঘর-সংসার’ গল্পে বাস্তব ও কল্পনা যেন একাকার। বন্ধু দম্পতির সঙ্গে পথে দেখা হয়েছিল লেখকের। তারা তাকে বাসায় যাওয়ার নিমন্ত্রণ করেছিলেন। কিন্তু তারা পৌঁছার আগে তিনি পৌঁছে গেলেন তাদের ফ্ল্যাটে। ফ্ল্যাটে কিভাবে প্রবেশ করলেন, সে প্রশ্ন যেন অবান্তর। সেখানে অপেক্ষা করতে করতে চা বানিয়েও খেলেন। পরে বন্ধু দম্পতি এলে তাদের সঙ্গে আড্ডাও হলো খানিকটা। কিন্তু একই সময়ে আবার বাংলা একাডেমির বইমেলাতেও ঘুরে বেরিয়েছেন তিনি। ঘরে ফেরার পর বন্ধুর স্ত্রী যখন ফোনে জানালেন যে, মোবাইল ফোনটা ফেলে এসেছেন তাদের ফ্ল্যাটে। তখন এক অদ্ভুত বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ে যান তিনি। পড়া শেষ করে পাঠক যেন অনুভব করেন, গল্পের চরিত্রের বিভ্রান্তি সঞ্চারিত হয়েছে তার নিজের মধ্যেও।

‘সন্ধ্যায় ফেরার সময়’ নিখাদ একটি প্রেমের গল্প। শুধুই নস্টালজিয়া, একটি দীর্ঘশ্বাস বেশ কিছুটা সময় আলোড়িত করে রাখে পাঠককে।

প্রকাশের আগে সবগুলো গল্প পড়েছেন কবি, ছোট গল্পকার বিশ্বজিৎ চৌধুরী। তার একটি সংক্ষিপ্ত মন্তব্য জায়গা পেয়েছে বইটিতে। এতে তিনি মন্তব্য করেছেন ‘বিষয়ের দিক থেকে নানা বৈচিত্র্য আছে এই অনতিপরিসর গল্পগ্রন্থে’।

‘জনজীবনমন্ত্রী’, ‘যাপিত জীবন’ ‘দুই সাহিত্যিক’ বা ‘জীবন যখন আনন্দময়’ গল্পগুলোতে কিছুটা রূপকের আশ্রয় নিয়ে আমাদের সমসাময়িক সমাজ ব্যবস্থার অসঙ্গতিকে তুলে ধরেছেন গল্পকার। উইট ও হিউমারের ব্যবহারে আমাদের সিস্টেমের তথাকথিত ‘সিরিয়াস’ বিষয়গুলো কতোটা হাস্যকর- তাই যেন তুলে ধরতে চেয়েছেন তিনি। কাজী আলিম-উজ-জামানের গল্প পাঠককে রসে মজিয়ে রাখবে না শুধু, কিছুটা ভাবাবেও- এই আমার ধারণা’।

বইটি প্রকাশ করেছে অ্যাডর্ন পাবলিকেশনস। প্রচ্ছদ করেছেন মাসুক হেলাল। দাম ১৭০ টাকা। বইমেলায় অ্যাডর্নের ২৬৬-২৬৯ নম্বর স্টলে পাওয়া যাচ্ছে বইটি।

কাজী আলিম-উজ-জামান পেশায় সাংবাদিক। তার জন্ম ১৯৭৮ সালের ০৮ জানুয়ারি বাগেরহাটে। লেখাপড়া করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে।

তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা চারটি। এর মধ্যে অন্য গল্পগ্রন্থটি হচ্ছে- ভালোবাসার হরেক রং (রোদেলা প্রকাশনী, ২০১৫)। আর কবিতার বই দু’টি হচ্ছে- জোছনার মেয়ে বৃষ্টির বোন (রোদেলা প্রকাশনী, ২০১৫) ও ভাঙা কাঠের সেতু (অ্যাডর্ন পাবলিকেশনস, ২০১৬)

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৭
টিআই/এএসআর

 

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।