ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বইমেলা

আঠারো দিনে মেলায় ৬৮৪ কবিতার বই

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৭
আঠারো দিনে মেলায় ৬৮৪ কবিতার বই অমর একুশে গ্রন্থমেলা/ছবি: রানা

গ্রন্থমেলা থেকে: অমর একুশে গ্রন্থমেলার আঠারোতম দিন পর্যন্ত ৬৮৪টি কবিতার বই প্রকাশ হয়েছে, যা সাহিত্যের অন্য শাখাগুলোর তুলনায় অনেক বেশি। সবচেয়ে কম প্রকাশিত হয়েছে, অভিধান, কম্পিউটার, রচনাবলি ও ধর্মীয় বই। কবিতার পরেই রয়েছে উপন্যাস ও গল্পগ্রন্থ।

মেলার আঠারোতম দিন পর্যন্ত মোট বই প্রকাশ হয়েছে ২ হাজার ২৭৫টি। যার মধ্যে কবিতার বই রয়েছে ৬৮৪টি, উপন্যাস ৩৭৯টি, গল্পগ্রন্থ ৩১৫টি, প্রবন্ধ ১১টি, শিশুতোষ ৭৫টি, ছড়া ৬২টি, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ৬৫টি, গবেষণামূলক ৪৪টি, ভ্রমণ ৪১টি ও জীবনীমূলক বই রয়েছে ৩৪টি।

এছাড়া ইতিহাসভিত্তিক বই ৩০টি, বিজ্ঞান বিষয়ক ২৬টি, সায়েন্স ফিকশন ও গোয়েন্দা কাহিনি ২৬টি, চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা সর্ম্পকিত বই ২০টি, অনুবাদ ১২টি, নাটকের বই রয়েছে ১৩টি, ধর্মীয় ৪টি, কম্পিউটার বিষয়ক ৩টি, অভিধান ২টি, রচনাবলি ৪টি
এবং রাজনীতি বিষয়ক বই ১১১টি।

শনিবারের (১৮ ফেব্রুয়ারি) মেলা শুরু হয় যথারীতি বেলা ১১টা থেকে, চলবে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত। এদিন নতুন বই এসেছে ১৫৬টি এবং ৬১টি নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে।

সকালে অমর একুশে উপলক্ষে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় শিশু-কিশোর সাধারণ জ্ঞান ও উপস্থিত বক্তৃতা প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব। প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক রফিকউল্লাহ খান, শিশুসাহিত্যিক সুজন বড়ুয়া ও বাংলা একাডেমির পরিচালক শাহিদা খাতুন।

উপস্থিত বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছেন আকিবা আফরোজ রাকা, দ্বিতীয় হয়েছেন যুগ্মভাবে সুমাইয়া সাবিকুন্নাহার ও তারানা তাবাসসুম মিম এবং তৃতীয় হয়েছেন নামিরা রহমান অন্তরা। সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছেন মারজান শাওয়াল রিজওয়ান, দ্বিতীয় হয়েছেন যুগ্মভাবে রাইসা চৌধুরী ও নাবিলা হক বিস্মি এবং তৃতীয় হয়েছেন সায়েদা করিম মেশা।

বিকেলে গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় নব্বইয়ের দশকের কবিতা শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কবি মোস্তাক আহমাদ দীন। কবি সাজ্জাদ শরিফের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন ড. শহীদ ইকবাল এবং ড. এ এম মাসুদুজ্জামান।

প্রাবন্ধিক বলেন, বিষয়-বৈচিত্র্য নিয়েই নব্বইয়ের দশকের কবিতা, নব্বইয়ের বিভিন্ন কবির কণ্ঠে সত্তরের মতো যৌথ শব্দস্রোতে সম্মিলিত চরণসজ্জায় কিংবা আশির দশকের মতো মিথের ব্যবহারে কেবল কালের কথা ওঠে আসে না; কবিতা এখন হয়ে ওঠে আত্ম-অনুভূতি ও সত্তা-উপলব্ধির ব্যঞ্জনাগর্ভ স্বরগ্রাম।

নব্বইয়ের দশকের পর আরও দেড় দশক অতিক্রান্ত, দশকের অনেক কবি এখনও সক্রিয়, শুরুর দিকে বিচ্ছিন্নতা ও অস্থিরতা কাটিয়ে তারা এখন স্থিতধী ও পরিণত, তাই তাদের নতুন কবিতা পাঠকদের এখন আরও বেশি আকৃষ্ট করে চলছে।

আলোচকরা বলেন, বিগত চার দশকের অভিজ্ঞতা সঞ্চিত নব্বই দশকের কবিদের মনন, মেধা ও চিন্তায় বহু স্বরের সম্মিলন ঘটেছে। কবির মনের অন্তর্গত ভাব, ইঙ্গিতময়তা ও প্রতীকের মাধ্যমে প্রকাশের প্রবণতা দেখা যায় এ সময়ের কবিতায়। ফলে বস্তুর চেয়ে তার প্রতিভাস বা চেতনা ধারণ করার চেষ্টাই বেশি দেখা যায়।

সভাপতির বক্তব্যে কবি সাজ্জাদ শরিফ বলেন, আশির দশকের শেষ থেকে নব্বই দশক জুড়ে বিশ্বব্যাপী মিডিয়া ও বিশ্বায়নের প্রসার, পরাশক্তির উত্থান, সেনা সরকারবিরোধী আন্দোলনসহ নানা রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তন নব্বইয়ের কবিতাকে প্রভাবিত করেছে। আশির দশকের কবিতার মূল প্রবণতাগুলোর সম্প্রসারণ ছাড়াও নব্বইয়ের দশকে দেখা যায় শ্লেষাত্মক কবিতার বিকাশ এবং বাক্যের স্বাভাবিক গঠন কাঠামো ভেঙে অসম্পূর্ণ বাক্য তৈরির প্রয়াস। ইঙ্গিতময় ও সংবেদনশীল নব্বই দশকের কবিতা বিষয় বৈচিত্র্যের কারণে আত্ম-উপলব্ধির একটি মাধ্যম হয়ে উঠেছে।

লাকী ইনামের পরিচালনায় সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছিলো নাগরিক নাট্যাঙ্গনের পরিবেশনায় নাটক ক্রীতদাসের হাসি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৭
এমএন/ওএইচ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।